পঞ্চায়েত ভোটের বিধি বলবৎ হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির রক্তদান শিবির হচ্ছে না। রায়গঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল ব্লাড ব্যাঙ্কে তাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসাধীনদের বাড়ির লোকের বক্তব্য তাঁদের নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্তদাতা জোগাড় করে আনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরাসরি রক্তদাতা না পেয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত ভাবেই জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, গত এক সপ্তাহ ধরে ব্লাডব্যাঙ্কের দুটি বাতানুকূল যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ায় রক্ত ও রক্তরস সংরক্ষণ কাজের বিঘ্ন ঘটছে। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌতম ঘোষ বলেছেন, “সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করা হচ্ছে।” পাশাপাশি, জেলা শাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া জানান, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট মেটাতে প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে রক্তদান শিবির আয়োজন করার অনুরোধ করা হয়েছে। ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, এ, বি, ও এবং এবি নেগেটিভ ও পজিটিভ গ্রুপ মিলিয়ে প্রতিদিন ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে হাসপাতালের নানা ওয়ার্ড, নার্সিংহোম, থ্যালাসেমিয়া ও দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর জন্য ৩৫ ইউনিট রক্তের সরবরাহ হয়। প্রতি সপ্তাহে রায়গঞ্জের নানা এলাকায় যেখানে গড়ে ৭টি করে রক্তদান শিবির হয়, সেখানে গত মে মাসের ২৬ তারিখের পর থেকে কোনও রক্তদান শিবির হয়নি। ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অনির্বাণ বেরা বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন গ্রুপের ৫০ ইউনিট রক্ত মজুত থাকে। গত দু’সপ্তাহ ধরে ৩ থেকে পাঁচ ইউনিটের বেশি মজুত থাকছে না।”
ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক তথা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রদীপ মণ্ডল এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “রক্তের অভাবে হাসপাতালের অস্ত্রোপচারের কাজও পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের স্বার্থে রক্তদান শিবির নির্বাচনী আচরণ বিধির বাইরে রাখলেই ভাল হত।”
সম্প্রতি ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে হয়রান হয়েছেন ইটাহারের বাসিন্দা শম্ভু ঘোষ। তিনি বলেন, “আমার বৌদি গত এক সপ্তাহ ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসক এদিন এক ইউনিট বি পজিটিভ রক্ত আনতে বলেছেন। ব্লাডব্যাঙ্কে ওই গ্রুপের রক্ত নেই। রক্তদাতাও খুঁজে পাচ্ছি না। এ তো মহা যন্ত্রণায় পড়া গেল। নির্বাচন কমিশন একটা উপায় বার করুক।” |