রানিগঞ্জ আর পাথরপ্রতিমার পরে এ বার গলসি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা ও প্রত্যাহার নিয়ে গোলমালের জেরে ফের খুন হলেন এক জন। এর আগে দু’জনের দেহ মিলেছিল পুকুরে। সোমবার বর্ধমানের গলসির কেটনা গ্রামে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ে পিটিয়ে মারা হল সিপিএমের এক আদিবাসী নেতাকে। তিন মহিলা-সহ চার জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। রাজ্যের অন্য নানা জায়গাতেও বিক্ষিপ্ত ঝামেলা হয়েছে।
মৃতের নাম মদন সোরেন (৫৫)। বাড়ি হলদিডাঙায়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “বেলা ১১টা নাগাদ ওখানে তৃণমূলের মিছিল আক্রমণ করে সিপিএমের লোকেরা। দু’পক্ষের ১০-১১ জন আহত হয়েছেন।”
|
নিহত নেতা মদন সোরেন। —নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতালে দাঁড়িয়ে স্থানীয় ভুঁড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য স্বপন খাঁড়া অবশ্য অভিযোগ করেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য কেটনায় আমাদের প্রার্থী সুকুমার দলুইকে ক’দিন ধরেই চাপ দিচ্ছিল তৃণমূলের লোকেরা। সুকুমার বাড়ি ছেড়ে পালায়। তৃণমূলের কিছু লোক রবিবার আমার ছেলে শিবুর হাতে একটি চিঠি ধরায়। তাতে লেখা ছিল, সুকুমার মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তাঁর স্ত্রী চন্দনাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘অত্যাচার’ করা হবে। এই কথা জানাজানি হতেই গ্রামের মহিলারা সঙ্ঘবদ্ধ হন। দুপুরে দিকে তৃণমূলের লোকেরা অস্ত্রশস্ত্র-বন্দুক নিয়ে তাঁদের আক্রমণ করে। শুরু হয় বোমাবাজি। খবর পেয়ে মদন সোরেন লোকজন নিয়ে ছুটে আসেন। তাঁকে রাস্তায় ফেলে শাবল-বাঁশ দিয়ে মারতে থাকে তৃণমূলের লোকেরা।” স্বপনবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন তাঁর স্ত্রী কাজল খাঁড়া, গ্রামের কল্পনা খাঁড়া ও সাগর খাড়া।
জেলা তৃণমূল সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ অবশ্য পাল্টা বলেন, “সিপিএমই আমাদের মিছিলে বোমা মেরেছিল। ওদের বোমাতেই ওদের ক’জন জখম হয়। এক জন মারা গিয়েছে। আমাদেরও ছ’সাত জন আহত। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ যদিও তাঁদের নাম বলতে পারেননি স্বপনবাবু। ওই হাসপাতালে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও আহত তৃণমূল কর্মীর খোঁজও মেলেনি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অভিযোগ, “পুলিশে খবর দেওয়া হলেও তারা সময়ে আসেনি।” গলসি থানা সূত্রের দাবি, গ্রাম দূরে হওয়ায় পৌঁছতে সময় লেগেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে মা সিপিএম প্রার্থী আহত হন ৪ জন। দু’জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। পুরুলিয়ার বরাবাজারে বামুনডিহা গ্রামে সিপিএমের মিছিলে ইট-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ৪-৫ জন সিপিএম কর্মী আহত হন বলে অভিযোগ। তৃণমূল পাল্টা হামলার দাবি জানিয়েছে। বীরভূমের সাঁইথিয়ায় এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, একই সঙ্গে এই অভিযোগ করেছে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি। |