মতুয়ারা কী পেয়েছেন, বনগাঁর সমাবেশে প্রশ্ন তুললেন বুদ্ধদেব
ঞ্চায়েত ভোটের আগে মতুয়া-মন পেতে আসরে নামলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রশ্ন তুলে দিলেন, “দু’বছরে মতুয়া ভাইয়েরা কী পেয়েছে তৃণমূলের কাছ থেকে?” বললেন, “মতুয়া ভাইদের মধ্যে দু’বেলা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ওরা (তৃণমূল)।” রবিবার বনগাঁর খেলাঘর ময়দানে বামফ্রন্টের জনসভায় দাঁড়িয়ে বুদ্ধবাবু এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “তৃণমূলের ছেলেরাই বা কী পেয়েছে? বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় চাকরি পেয়েছে। এটা চাকরি না আত্মহত্যা?”
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ হিসাবে রেখে লড়াইতে নেমেছিল তৃণমূল। মতুয়া মহাসম্প্রদায়ের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপাণিদেবীর সঙ্গে তখন থেকেই হৃদ্যতা তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়ির জন্য বহু দান-ধ্যান আছে তাঁর। গত পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে হতাশও করেনি ঠাকুরবাড়ি। বিধানসভা ভোটেও তৃণমূলের সঙ্গে মতুয়াদের সখ্য বজায় ছিল। গাইঘাটায় বীণাপাণিদেবীর ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে প্রার্থী করেন মমতা। সেই মঞ্জুলবাবু বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী।
বনগাঁর সভায়। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র।
মতুয়াদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরির দৌড়ে প্রথম রাউন্ডে তৃণমূলের থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও চেষ্টার কসুর করেনি বামেরা। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেববাবু এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে কলেজ, পুরস্কার প্রভৃতি ঘোষণা করে বাম সরকার। যদিও ভোটে বামেদের ভরাডুবি প্রমাণ করেছিল, মতুয়া ভোটব্যাঙ্ককে শেষমেশ পাশে পেয়েছেন মমতাই।
এখন রাজ্যে ফের ভোট। এ বার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত। ফলে এখন সব দলেরই মতুয়া ভোটকে নিজেদের দিকে টানার তাগিদ রয়েছে। মতুয়াদের খাসতালুক বনগাঁ মহকুমায় এ দিন বুদ্ধবাবুকে দিয়ে সভা করিয়ে সিপিএম সেই চেষ্টাই করেছে। বুদ্ধবাবু ছাড়াও এ দিন সভায় ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক সম্পাদক হরিপদ বিশ্বাস, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রণজিৎ মিশ্র, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি গৌতম দেব।
জেলায় জেলায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে বুদ্ধবাবু বলেন, “প্রার্থীদের আক্রমণ করা হচ্ছে। তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা বলছি জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের কাছে যেতে। কিন্তু তাঁরা চুপ করে রয়েছেন।” প্রশাসনের ওই কর্তাদের উদ্দেশে বুদ্ধবাবু বলেন, “চুপ করে থাকবেন কেন? এই চুপ করে থাকা রাজ্যের মানুষ মেনে নেবেন না। আমরা চাই, অশান্তি বন্ধ হোক। তা না হলে রাজ্যের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যাবে।”
সন্ত্রাস ও আতঙ্কের এই পরিবেশে বিরোধীরা কী ভাবে ভোট করবেন, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বুদ্ধবাবু বলেন, “বর্ধমান, হুগলি, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরে কয়েক হাজার প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। ৯টি জেলায় আর পারবেনও না। মনোনয়নের দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই ভোট কি আমরা চেয়েছিলাম? যারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে প্রার্থিপদ তুলে নিতে বলা হচ্ছে। বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। অসুস্থ মহিলাদেরও ভয় দেখানো হচ্ছে। শুধু প্রার্থীদেরই নয়, তাঁদের বাড়ি লোকেদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোট আদৌ করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর উদ্বেগ, “নির্বাচন করতে না পারলে গ্রামের মানুষের ভীষণ ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা সব জায়গায় চেষ্টা করছি, যাতে নির্বাচন হয়। গোলমাল না হলে, স্পষ্ট ভাবে নির্বাচন হলে রাজ্যের কোথাও তৃণমূল জিততে পারবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.