সম্পাদক সমীপেষু...
শিক্ষকের দায়িত্ব আছে বইকী
স্কুলে উত্তেজনা, অসুস্থ প্রধান শিক্ষিকা’ (২০-৪) প্রকাশিত একটি সংবাদে উদ্ধৃত হয়েছে: ‘প্রধান শিক্ষিকা বলেন ছাত্রীদের থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরতে আমি সম্মত হই’। ৮ জানুয়ারির আনন্দবাজারে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চকে উদ্ধৃত করে ‘এক নজর’-এ ছাপা হয়েছিল রাজ্য সরকারকে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তির পরীক্ষা বা ফি নিলে ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা’ নিতে হবে।
প্রথমত: জানতে ইচ্ছে করে কী এই ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা’। উক্ত স্বীকারোক্তির পনেরো দিনের মধ্যেও যা নেওয়া হল না?
দ্বিতীয়ত: উক্ত ‘অতিরিক্ত’ টাকা (২০০৯ থেকে যা ‘অতিরিক্ত’ বলেই গ্রাহ্য) ফেরত দেওয়ার জন্য অভিভাবকসভার কী প্রয়োজন? অভিভাবক চাইলেই কি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলে পাঁচশো, ছশো বা সাতশো টাকা নেওয়া যাবে? যেখানে বহু ছাত্রী বি পি এল তালিকাভুক্ত, রাঁধুনির কাজ করে অন্ন জোগানো মা বা ভ্যানচালক বাবার বেতন মকুবের আবেদনের জবাবে ন্যূনতম গৃহীত অর্থের পরিমাণ তিনশো টাকা। সেই টাকা পুরোপুরি না-মেটানো পর্যন্ত যেখানে রেজাল্ট আটকে রাখা হয়, সেখানে ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা’ নেওয়া জরুরি নয় কি? সম্প্রতি মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দেশের প্রধান বিচারপতি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘প্রশাসনের কাজ আদালতের রায় বা নির্দেশ বলবৎ করা’
রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা সকলের জন্য করেছে, তাতে সর্বৈব অধিকার সব ছাত্রেরই থাকবে এবং যেখানেই তা লঙ্ঘিত হবে, সেখানেই শিক্ষক প্রশ্ন তুলবেন। সুষ্ঠু পঠনপাঠন ও সর্ববিধ ভাবে ছাত্রস্বার্থের দিকে দৃষ্টি রাখা শিক্ষিকার কাজ। যেমন, এস সি, এস টি ছাত্রীদের ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের বুক গ্র্যান্টের টাকা কেন ২০১৩-র ২২ এপ্রিল ছাত্রী পেল? ওই টাকা এত দিন কোথায় ছিল? এখন ক্যাশ হলে কোন বছরের অডিটে তা দেখানো হল এবং যেখানেই থাকুক, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর লক্ষ করেছে কি না যে, প্রাপ্য টাকা হাতে আসতে এত দেরি হলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এই প্রশ্ন তোলাও কিন্তু শিক্ষিকার কাজ।
সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় একই বিষয়ের দুটি পাঠ্যপুস্তক দিয়ে দেওয়া হল অন্য প্রয়োজনীয় পুস্তক বাদ দিয়ে। কাদের স্বার্থে দেওয়া হল, দিলেও সর্বশিক্ষা মিশনের ভাউচারে তা লেখা হল কি? লেখা যাবে কি? এটা দেখা শিক্ষিকার কাজ।
মিড ডে মিলে চাল দেওয়া হচ্ছে। ‘ডাইস’ রিপোর্টে কী লেখা হচ্ছে, ‘মিল’ তো? চালকে কি ‘মিল’ বলা যায়? যারা খায়নি তাদের চাল বেঁচে গেছে। তা হলে তাদের বরাদ্দ দৈনিক জনপ্রতি ১৫০ গ্রাম চাল ছাড়াও ওই দিনের মাথাপিছু ৪ টাকা ৬৫ পয়সা কী ভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এই প্রশ্নটা শিক্ষিকা করবেন। বি ডি ও-র কাছে দরবার করতে গেলে যে অভিভাবকের এক দিনের অন্ন বন্ধ হয়ে যাবে, অবশ্যই তিনি তা করবেন না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে (৫-৫) বলা যায়, সুবিচার আমাদের সকলের দায়িত্ব।
আইন অমান্য
আইন অমান্য বন্ধের বিষয়ে সরকারের ভূমিকা হাস্যকর। সরকার মানা করলেই সব রাজনৈতিক দল সেটা মেনে নেবে, এটা কোনও কালে কোনও দেশে হয়েছে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক দলগুলি কী ভাবে তাদের কর্মসূচি গ্রহণ করবে তা কোনও সরকার নির্দিষ্ট করে দিতে পারে না। আইন অমান্যকারীদের উপর নৃশংস অত্যাচারের ব্যাপারে সি পি এম-এর জুড়ি নেই। কিন্তু মুখে অন্তত গণতন্ত্রের কথা বলত সি পি এম। অর্থাৎ সমস্ত ক্ষেত্রে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করলেও মুখে তারা গণতন্ত্রের বাণী প্রচার করত। কিন্তু তৃণমূল সরকার মুখ ফুটে বলেই দিল যে, ‘আইন অমান্য চলবে না’। অত্যাচারী হলেও যে কথাটা ইংরেজরা পর্যন্ত মুখ ফুটে বলতে পারেনি।
মংপু রবীন্দ্রভবনের সংস্কার জরুরি
মংপুর রবীন্দ্রভবনের দুরবস্থার কথা জানাতে চাই।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালিম্পং, মংপু ও গরুবাথানে আই টি আই-এর শিলান্যাস করেছেন জেনে আনন্দিত হলাম। কিন্তু এ বার ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত মংপুর রবীন্দ্রস্মারক ভবনের করুণ অবস্থা দেখে যারপরনাই বিস্মিত ও বিরক্ত বোধ করি। বাড়িটির পশ্চিমের ছাদের দেওয়াল ভূমিকম্পে ফেটে চৌচির। কবিগুরুর ব্যবহৃত বিছানার গদি ছিঁড়ে ছোবড়া বেরিয়ে গেছে। কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথের হাতে তৈরি চেয়ার-টেবিল, কবির দুষ্প্রাপ্য বিদেশি জল-রঙের টিনের বাক্স ও কলমদানি, রথীন্দ্রনাথ-প্রতিমাদেবীর ফটো, রবীন্দ্রনাথের হাস্যময় ছবি, অমর্ত্য সেনের ঠাকুরদা ক্ষিতিমোহন সেনের মূল আলোকচিত্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আংশিক বা সর্বাংশে নষ্ট হতে চলেছে।
১৯৪০ সালের ২৫ বৈশাখ উৎসবে মৈত্রেয়ী দেবীর এই বাসভবনে কবিগুরু পাহাড়ি ও সমতলের সকল শ্রেণির মানুষকে একত্রিত করেছিলেন। এই ঘটনাটি মনে রেখে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একান্ত অনুরোধ, মংপুর রবীন্দ্রস্মারক ভবনটি অবিলম্বে মেরামত করে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে একটি স্থায়ী প্রদর্শন কক্ষ তৈরি করুন, যাতে সকল শ্রেণির মানুষ এবং আরও বেশি সংখ্যক টুরিস্ট এই ভবনটি দেখতে পায় আর মংপু যেন টুরিস্ট স্পট হিসাবে স্থায়ী আসন লাভ করে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.