গত ন’মাস ধরে তাঁকে নিয়ে কম জল্পনা হয়নি। তবে সে সবের এতটুকু প্রভাব পড়েনি তাঁর চোখেমুখে।
ডাচেস অফ কেমব্রিজ, কেট মিডলটন এখন মন দিয়েছেন নতুন অতিথিকে স্বাগত জানানোর কাজে।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি তাদের নতুন সদস্যকে পেতে চলেছে ব্রিটেনের রাজপরিবার। তাই এ বার জনসমক্ষে আসার ক্ষেত্রে দাঁড়ি টানতে চলেছেন হবু মা। এই সপ্তাহান্তে সাউদাম্পটন ডকে একটি জাহাজের নামকরণ করবেন তিনি। তার পর আর ধরা দেবেন না ক্যামেরার ফ্ল্যাশে।
রাজপরিবার সব কিছুতেই রাখঢাক করার চেষ্টা করলেও অন্তঃসত্ত্বা কেটের হালহকিকত জানতে শুরু থেকেই কৌতূহলী সংবাদমাধ্যম। পাপারাৎজির হাত থেকে বাঁচতে একমাত্র উইলিয়াম তাঁকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতেন প্যাডিংটনের সেন্ট মেরি হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের ব্যক্তিগত লিন্ডো উইংয়ে থাকছে শিশু জন্মানোর জন্য আধুনিক ব্যবস্থা। যেখানে জন্ম হয়েছিল ডায়ানার প্রথম সন্তান উইলিয়ামেরও।
রাজপরিবার এই সব তথ্য গোপন রাখতে চাইলেও মিডলটন পরিবারের সদস্যদের তো এ সব লুকিয়ে রাখার অভ্যেস নেই। তাই অন্তঃসত্ত্বা কেট রাজপ্রাসাদের অন্দরে শুধুমাত্র চকোলেট খেয়ে টিভি দেখে কাটিয়ে দেননি। করেছেন যোগাসন, গিয়েছেন লোকজনের মাঝে, কথা বলেছেন প্রাণভরে, তাঁর শাশুড়ি ডায়ানার মতোই। |
অতিথি আপ্যায়নে অন্তঃসত্ত্বা কেট।—ফাইল চিত্র |
মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছে হয়েছিল বলে ডাচেস অফ কর্নওয়ালের পাঠানো ল্যাভেন্ডার বিস্কুটও চেখে দেখতে ছাড়েননি। বাকিংহাম প্যালেসের গার্ডেন পার্টিতে কেট জানান, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন অনেকটা সময় ব্রিটেনে বসন্ত থাকায় তিনি দারুণ আরাম পেয়েছেন। শেষ পর্যায়ে এসে এখন হয়তো একটু গরম লাগছে কেটের। তবে পা ফোলেনি বলে হাই হিল ছেড়ে ফ্ল্যাট জুতো পরতে হয়নি তাঁকে। শুরু দিকের ‘মর্নিং সিকনেস’-এ হাসপাতালে ভর্তি হতে হলেও এখন কোনও সমস্যাই নেই হবু মায়ের। তাই শেষের দিকের মাসগুলোয় সদা হাস্যমুখে মন ভাল করা নানা রঙের পোশাকে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি।
ডায়ানাকেও ঠিক এ ভাবেই জনসমক্ষে দেখা যেত ওই দিনগুলোয়। রাজপরিবারের অনুশাসনে নয়, তিনি যে ভাবে চেয়েছিলেন, সে ভাবেই কাটিয়েছেন সেই দিনগুলো। তাঁর ভয় ছিল, রাজপরিবারের ঐতিহ্যের গুঁতোয় তাঁকে বাকিংহাম প্যালেসেই না সন্তানের জন্ম দিতে হয়! বন্ধুদের যে কথা বলেওছিলেন তিনি। শেষে অবশ্য রাজপ্রাসাদের গণ্ডি পেরিয়ে সেন্ট মেরি হাসপাতালে জন্ম হয় উইলিয়ামের। প্রথা ভেঙে সেই প্রথম রাজসিংহাসনের কোনও দাবিদার জন্মান হাসপাতালে। একই সঙ্গে ত্রিশ বছর আগে সিংহাসনের আর এক দাবিদার ডায়ানার স্বামী যুবরাজ চার্লসও ‘রীতি’র বিপরীতে গিয়ে সন্তান জন্মানোর সময় স্ত্রীর পাশে থাকেন। বাবার মতোই উইলিয়াম তো কেটের পাশে থাকবেনই। এক ধাপ এগিয়ে দু’সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটিও নিয়ে রেখেছেন তিনি। হবু বাবা-মা বলছেন, ওই সময়টা শুধু তাঁদের ‘লিটল গ্রেপ’-এর জন্য। যে নামে আপাতত নতুন অতিথিকে ডাকছেন উইলিয়াম-কেট।
কেটকে খুশি করতে তাঁর জন্য ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের ডেকে ‘বেবি শাওয়ার’-এর আয়োজন করেন বোন পিপা। রাজপরিবারে এটাও তখনও দেখা যায়নি। কারণ এটা মূলত মার্কিন রীতি। পিপার মতো হুজুগে বোন আর রাজপরিবারের ক’জন সদস্যের হয়!
সন্তান পৃথিবীতে আসার পর কোথায় কী ভাবে থাকতে চান, সেটা কেটের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন উইলিয়াম। যদি কেট বাকলবেরিতে নিজের বাবা-মায়ের কাছে যেতে চান, তাই যাবেন। কারণ এই সময় মেয়েরা নিজের মায়ের সাহায্য পেলে খুশি হয় বলে মনে করেন উইলিয়াম। সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। নিয়মের রাজত্ব থেকে এ ভাবেই দূরে সরে ডিউক আর ডাচেস অফ কেমব্রিজ খোলা হাওয়ায় অপেক্ষা করছেন ভাবী সন্তানের জন্য। |