|
|
|
|
তারাবাজি |
নিয়ন রঙে রাঙিয়ে
ফ্লুরোসেন্ট গ্রিন, ইলেকট্রিক ব্লু আরও কত রং! সাবেকি রঙের মাঝে উঁকি মারছে বাহারি
রঙের দ্যুতি। কী ভাবে আপনার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়ে উঠবে এই রং? লিখছেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় |
আনাচে কানাচে একটু নজর দিলেই আপনার শরীর থেকে মুখে ছড়িয়ে পড়বে এই বাহারি রঙের দ্যুতি। রঙের বাজারে এখন ফ্লুরোসেন্ট গ্রিন, ইলেকট্রিক ব্লু, অ্যাপল গ্রিন, কোরাল পিঙ্ক, রুবি রেড, ভাইব্র্যান্ট ইয়েলোর রমরমা। কিন্তু সাবধান, বেখেয়ালে গা ভাসাবেন না। সাবেকি সাজের মাঝে হঠাৎ করে ফ্লুরোসেন্ট রং ব্যবহার করবেন না, বা চোখ থেকে পায়ের নখ সবেতেই একসঙ্গে নিয়ন রং মাখবেন না। নিয়ন সাজে নিজের চেহারা বুঝে শরীরের কোনও একটা অংশকে হাইলাইট করুন, তা হলেই বাজিমাত। |
|
‘‘সামঞ্জস্যটা নিয়ন সাজে খুব জরুরি,’’ জানালেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল, ‘‘এখন যুগ বদলের দিন। আগের মতো গরম মানেই সেই যশ চোপড়ার ‘চাঁদনি’-র ফিনফিনে শিফন আর প্যাস্টেল শেডের পছন্দের কদর আর এখন নেই। ‘চাঁদনি’-র সেই হাল্কা রঙের জায়গায় এখন গরমে ক্যাটক্যাটে, রিফ্লেক্টিং বোল্ড রঙের চল খুব বেশি। ‘হিরোইন’য়ের করিনার কথা ভাবুন। শাড়ি থেকে ওয়েস্টার্ন সব পোশাকেই, সাদা-কালো, শ্যামবর্ণা সব গায়ের রংয়েই এই নিয়ন রং নজর কাড়া ড্রামাটিক লুক তৈরি করে ফেলতে পারে। এই কারণেই তা এত জনপ্রিয়।’’ ইদানীং কালের টলিউডের কোন অভিনেত্রীকে এই নিয়ন-বেশ পরাতে আপনার ইচ্ছে করে? জানতে চাইলে অগ্নিমিত্রা জানান, ‘‘পার্নোকে খুব সুন্দর করে এই নিয়ন সাজে সাজানো যাবে। আসলে ওর গায়ের রংয়ের সঙ্গে নিয়ন রংগুলো খুব চমৎকার মানাবে। অনেক ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা যাবে। আমার তো মনে হয় ফর্সার চেয়ে শ্যামবর্ণা, কালো রঙের মেয়েদের মধ্যে এই নিয়ন রংগুলো অনেক উজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠবে।”
আই শ্যাডোয় হলুদ ব্যবহার করলে ঠোঁট ভরুন লাইট শেডের গোলাপি রং দিয়ে। সেক্ষেত্রে নখ বা পোশাকের রং যেন গাঢ় না হয়। চোখে নীল সমুদ্রের টান দিলে জুতোর রং বা জামার ফ্রিলে সূর্যছটার উজ্জ্বল বাহার আনতে পারেন। মুখের বাকি অংশটা নর্মাল রাখুন। সাদা শাড়ি গায়ে জড়ালে চুলে লাগান লালরঙের টাটকা জবা, আর ঠোঁটে দিন রক্তরঙা লিপস্টিক, হাতের বটুয়ায় থাক নিয়ন রঙের ঝলক।
পার্নোর কাছে নিয়ন সাজের কথা জানতে চাইলে পার্নো জানান, “নিয়ন পিঙ্ক আমার সব চেয়ে প্রিয় রং। ওটাই সব চেয়ে বেশি আমি ব্যবহার করি। জেনিফার লোপেজ কী অসম্ভব ভাল ক্যারি করেন না এই শেডগুলো! আমি তো ওঁকে দেখে পাগল হয়ে যাই। এ ছাড়াও কমলা, সবুজ আর পিচ আমার পছন্দের। আসলে নিয়ন সাজে ক্যারি করাটাই শেষ কথা। ব্যালান্স না করতে পারলে পুরো সেলোফেন পেপারের মতো দেখাবে। ধরুন, আমি যদি নিয়ন রঙের জাম্প-স্যুট পরি, তা হলে মুখের মেকআপ যতটা সম্ভব হাল্কা রাখি। তবে এই ট্রেন্ডটা অনেকটাই জেন ওয়াইয়ের মধ্যে আটকে আছে। চল্লিশ পেরোনো মহিলারা কোথায় যেন আটকে যান, তবে কিছু হেপ মাদারদের এখন দেখছি এই ট্রেন্ডটাকে খুব চমৎকার ভাবে নিতে।’’ |
|
|
নিয়নরঙা পোশাকে করিনা কপূর ও প্রিয়ঙ্কা চোপড়া |
|
আলাদা করে নিজের সাজে চমক আনতে কে না চায়? কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে সাজা চাই। মেকআপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদার অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁর মতে, “সবার জন্যে এই নিয়ন রং নয়। যে কেউ নিজের ইচ্ছেমতো যা খুশি পরতে পারেন। তবে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি বলব এই ট্রেন্ডটা ইয়ং জেনারেশনের মধ্যেই থাকতে দেওয়া ভাল। নিয়ন আসলে তারুণ্যের উদ্দাম উচ্ছ্বাস, উৎসবের রং। তার সঙ্গে কর্পোরেট বা সাবেকি দুনিয়ার মানুষের ব্যক্তিত্ব খাপ খায় না। শ্যাডো, লাইনার, ব্লাশ অন, লিপস্টিক, বিভিন্ন ওয়েস্টার্ন আউটফিট আর অ্যাক্সেসরিজে জেন ওয়াইয়ের মধ্যেই এই রংমিলান্তি চলতে পারে। তবে ছেলেদের মধ্যে এর চল খুব একটা নেই। যদিও আজকের মেট্রোসেক্সুয়াল জগতে কেউ চাইলে অ্যাক্সেসরিজ নিয়ে কিছু ট্রাই করতে পারেন। যেমন ধরুন, সাদা শার্ট আর ডেনিমের সঙ্গে কোরাল পিঙ্কের বেল্ট পরতে পারেন বা পরতে পারেন ফ্লুরোসেন্ট রঙের কোনও চকচকে টি-শার্ট।”
বসন্তেই কেবল রঙের ঝরনা? শীতের মেজাজে রঙিন গরম জামা? গরমের ঝাঁঝাঁ রোদ্দুরে কিংবা বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে দিনে চারপাশের পরিবেশ আর প্রকৃতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিয়নের চকচকে সাজে ঝকঝকে হয়ে উঠুন। এই রঙেই বেরিয়ে আসুক আপনার চেতনার রং। যাতে পান্না হবে সবুজ, চুনি উঠবে রাঙা হয়ে। |
|
|
|
|
|