এক ঝলকে...
পৃথিবী
তিন জনে এক জন
• দামাস্কাস • আজই যদি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ বন্ধ হয়ে যায়, তবু সে দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বহু বছর সময় লাগবে। —রাষ্ট্রপুঞ্জের ইমার্জেন্সি কো-অর্ডিনেটর ভ্যালেরি অ্যামস জানিয়েছেন। বাশার আল-আসাদের সরকার এবং তাঁর শাসনের বিরোধী বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে সে দেশের মানুষের জীবন বিপন্ন। প্রতি তিন জন নাগরিকের মধ্যে এক জন এমন অবস্থায় রয়েছেন যে এখনই সাহায্য না পেলে তাঁদের পক্ষে হয়তো বেঁচে থাকাই সম্ভব হবে না। তাঁদের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ অর্থ সংগ্রহ করছিলই। কিন্তু, নতুন হিসেবে দেখা গেল, সেই লক্ষ্যমাত্রার ১৫০ কোটি ডলার সংগ্রহ করলেও তা যথেষ্ট হবে না। নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করল রাষ্ট্রপুঞ্জ— ৫০০ কোটি ডলার। সংস্থার ইতিহাসে কখনও কোনও ত্রাণ প্রকল্পের জন্য এত টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়নি।
কেন এই বিপুল অর্থের প্রয়োজন? এই বছর জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে সিরিয়ায় উদ্বাস্তুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এখন গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ১৫ লক্ষ। আশঙ্কা, এই বছরের শেষে তা দাঁড়াবে ৩৫ লক্ষে। বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবিরে প্রতি দিন গড়ে সাত হাজারেরও বেশি নতুন মানুষ আসছেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরও বিপুল আর্থিক চাপ পড়ছে। লেবানন আর জর্ডন, দু’দেশের উদ্বাস্তু শিবিরেই পাঁচ লক্ষ উদ্বাস্তু আছেন। এই দেশদুটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে গলা মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাহায্যের আবেদন পেশ করেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জ অবশ্য বিভিন্ন দেশের গয়ংগচ্ছ মনোভাবে হতাশ। ১৫০ কোটি ডলারের তহবিল গড়তেই অনেক দেশের সাহায্য পাওয়া যায়নি, ফলে এই রেকর্ড অর্থ সংগ্রহ আরও কঠিন কাজ হবে, বলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্তারাই। সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই অর্থ তোলা না গেলে সিরিয়ার একটা গোটা প্রজন্ম বেবাক হারিয়ে যেতে পারে। এই অর্থেও শুধু অতি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোরই ব্যবস্থা করা যাবে। ব্রিটেন জানিয়েছে, তারা সাহায্য করতে রাজি। অন্য দেশগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।

আগেই ধরুন
• লন্ডন • জঙ্গিরা জঙ্গি হয়ে যাবার পর তাদের ধরে আর কতটুকু লাভ, বরং তাদের ধরা দরকার জঙ্গি হওয়ার আগে!... ডেভিড ক্যামেরন উবাচ। দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের উলউইচ সন্ত্রাস কাণ্ডের পর ইসলামি সন্ত্রাস নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ভাল ভাল উপমা দিয়েছেন তিনি, যেমন বলেছেন, জঙ্গিরা ‘কনভেয়র বেল্ট’ দিয়ে যখন চালান হয়ে আসে সন্ত্রাস ঘটানোর জন্য, সেই ‘বেল্ট’-এই তাদের নিকেশ করতে হবে! বলেছেন, ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে যখন মুসলিম ছেলেপিলে মৌলবাদের দিকে যাত্রা করে, তার আগেই তাদের ধরতে হবে! এ হেন প্রগলভতার কারণ বোঝা কঠিন নয়— দেশ জুড়ে বিদ্বেষের হাওয়া বইছে। কিন্তু ভেবে দেখেছেন তো ক্যামেরন— জঙ্গিপনা ঘটানোর আগেই জঙ্গিদের ধরার কাজটা কেমন দাঁড়াবে? গণতন্ত্রের অপলাপ হবে না তো? জাতিবিদ্বেষে দেশ উজাড় হয়ে যাবে না তো?

নজরবন্দি
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী তাইপ এর্দোগান-এর বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে রাজধানী-সহ দেশের প্রধান শহরগুলি। শুরুটা হয়েছিল আঙ্কারার কেন্দ্রস্থলে একটি বিরাট পার্ক ধ্বংস করে সেখানে বৃহদাকার ব্যবসায়িক প্রজেক্ট তৈরি করার বিরুদ্ধে মানুষের আন্দোলন দিয়ে। কিন্তু ক্রমশই স্পষ্ট, আসল কারণটা বৃহত্তর: এর্দোগান যে স্বৈরাচারী পদ্ধতিতে দেশ চালাচ্ছেন, তা সহ্য করা যায় না, যাবে না!
এ কি তা হলে আরব স্প্রিং-এর মতো তুর্কি স্প্রিং? একেবারেই বলা যাচ্ছে না। একে তো তুরস্ক দেশটিকে মোটের ওপর গণতন্ত্রই বলা চলে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জিতেই এর্দোগান ও তাঁর দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (এ কে পি) ক্ষমতায় এসেছেন। আরব দুনিয়ার একনায়কদের সঙ্গে তাঁর তুলনা চলতেই পারে না। মিশরে বিদ্রোহোত্তর পর্বে নতুন করে সরকার গঠনের সময় এর্দোগান এক বার কায়রোতে এসেছিলেন। তখন এর্দোগানকে ঘিরে মিশরীয়দের তুমুল উচ্ছ্বাসের মধ্যে স্পষ্ট হয়েছিল যে তাঁরা তাঁদের নেতা হিসেবে এমনই এক জন কর্মঠ, উজ্জ্বল, কিন্তু রক্ষণশীল, ধর্মভীরু ব্যক্তিকে চান। তা হলে কেন এর্দোগান তাঁর দেশবাসীকে এতখানি খেপিয়ে দিয়েছেন?
খেপিয়ে দিয়েছেন গণতন্ত্রকে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে গিয়ে। তিনি ঠিক করেছেন, নির্বাচনে জিতে এসে তিনি তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক রক্ষণশীলতার অ্যাজেন্ডা একতরফা ভাবে কার্যকর করবেন। প্রয়োজনে বিরোধী নেতাদের কিংবা প্রাক্তন সামরিক সরকারের হর্তাকর্তাদের জেলে পুরে দেবেন, অবশ্যই বিচার নামক প্রহসনের ভিত্তিতে! ফলে তুরস্কের দশা আজ আরব দুনিয়ার সঙ্গে তুলনীয় নয়, বরং পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা চলে।
এর্দোগান নাকি বলেছেন, গণতন্ত্র ব্যাপারটা তাঁর কাছে একটা বাস-যাত্রার মতো। তাঁর নিজের পছন্দের বাস-স্টপটা এসে গেলেই তিনি বাস থেকে নেমে যাবেন! এর্দোগান বুঝতে পারেননি, গণতন্ত্র নামক বাসটির মধ্যে অন্যান্য যাত্রীরাও থাকে... প্রচুর সংখ্যায়... তিনি নেমে পড়তে চাইলেই তারা তাঁকে নামতে নাও দিতে পারে!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.