মনোনয়ন জমা নিয়ে সংঘর্ষ অব্যাহত। কোচবিহারে বামেদের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার দুপুরে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে এসডিও অফিসের অদূরে সিপিএমের দু’জন মহিলা প্রার্থীকে মারধর করে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, শিখা আদিত্য ও যমুনা সরকার নামে দুজন সিপিএম নেত্রীকে কোচবিহার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শিখাদেবী সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও যমুনাদেবী নাটাবাড়ি লোকাল কমিটির সম্পাদক। দুজনেই জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে বামেদের তরফে ক্ষোভ জানিয়ে কোনও মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়নি। |
দিনহাটার সিতাইয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে ফরওয়ার্ড ব্লকের সিতাই ১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান তথা পঞ্চায়েতের সম্ভাব্য প্রার্থী চন্দনা বর্মনের স্বামী সুভাষ বর্মনকে তৃণমূল আশ্রিতরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। মনোনয়নের নথিপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “লিখিত অভিযোগ দেখে আইনি ব্যবস্থা হবে।”
জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পরে তৃণমূলের প্রার্থীদের উপরে সিপিএম হামলা চালিয়ে একজনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহত তৃণমূল প্রার্থী মুকুন্দ রায়ের মাথায় ৩টি সেলাই পড়েছে। রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের অভিযোগ, “সিপিএম বিনা প্ররোচনায় হামলা চালিয়ে রক্ত ঝরিয়েছে। ভোটে জবাব দেবেন মানুষ।” সিপিএমের তরফে রাজগঞ্জের সাংসদ মহেন্দ্র রায় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তাঁর যুক্তি, “আমাদের উপরে আক্রমণ হয়। আমরা প্রতিরোধ করেছি মাত্র।”
কোচবিহারে অভিযোগকারীর ভূমিকায় অবশ্য সিপিএম। দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, ‘মহকুমাশাসকের দফতরের ১০০ মিটারের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুর করে দুই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পুলিশ নিরাপত্তা দিলে এটা হত না।” শিখাদেবীর অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার মনোনয়ন দিতে গেলে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দেয়। পুলিশে করা অভিযোগের কপি পর্যবেক্ষককে জমা দিতে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় আচমকা গাড়ির ওপর হামলা হয়। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা দরজা খুলে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারা শুরু করে।” যমুনাদেবী বলেন, “শহরের মধ্যে রাস্তায় ফেলে হামলা হবে ভাবিনি।” সিতাইয়ে জখম ফব-র সম্ভাব্য প্রার্থী সুভাষ বর্মনকে সিতাই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে কোচবিহারে রেফার করা হয়েছে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “মহকুমাশাসকের অফিসেও যাতে কেউ মনোনয়ন দিতে না পারেন, তৃণমূল সেই চেষ্টা করছে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেন, সব অভিযোগই সাজানো। তিনি বলেন, “জেলায় বামেরা নাটক করে কমিশনের নজর কাড়তে চাইছেন।” হরিরামপুরে ‘আক্রান্ত’ কংগ্রেসের আদিবাসী মহিলা প্রার্থী মাইকো মুর্মু শুক্রবার মনোনয়ন পত্র জমা দেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। |