সারদা গোষ্ঠীতে লগ্নির টাকা আমানতকারীরা কী ভাবে ফেরত পাবেন, এখনও তার নিশ্চিত কোনও পথ মেলেনি। এই অবস্থায় টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ওই সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলামে বিক্রির আর্জি জানানো হল কলকাতা হাইকোর্টে।
সৌরভ চৌধুরী নামে এক আইনজীবী শুক্রবার এই নিয়ে নতুন একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেন। আবেদনকারীর আইনজীবী বিশ্বদেব রায়চৌধুরী এ দিন বলেন, সারদা-কর্তা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা নিলামে বিক্রি করার নির্দেশ দিক আদালত। এই নির্দেশ দিলেই আমাতকারীরা তাঁদের টাকা ফেরত পেতে পারেন। এ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। শুনানির জন্য সোমবার প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠার কথা।
সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে দায়ের করা অন্য একটি জনস্বার্থের মামলা চলছে বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। ওই মামলায় সুদীপ্তের আইনজীবী নরেশ বালোড়িয়াও বলেন, আমার মক্কেলের সব সম্পত্তি বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। এটাই সুদীপ্তের আবেদন। অনেক গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যত দিন যাবে, সেগুলি ততই নষ্ট হতে থাকবে। এখনই সেগুলি বিক্রি করলে বেশি দাম পাওয়া যাবে। তাতে উপকৃত হবেন আমানতকারীরাই।
ওই মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী হিমাংশু দে বলেন, সিবিআই এই তদন্তের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তবে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলে রাজ্য সরকারকে গাড়ি ও কর্মী দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের আইনজীবী ভাস্কর বৈশ্য জানান, ওই মন্ত্রকের অধীন সংস্থা সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি সারদা কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে। ওই তদন্তে পুলিশের সহযোগিতা চান ভাস্করবাবু। আদালত জানায়, পুলিশ সব রকম সহযোগিতা দেবে।
সোমবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ওই মামলায় সওয়াল করার কথা। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই মামলার শুনানি শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করছে আইনজীবী মহল।
এ দিনই প্রতারণা, ভয় দেখানো-সহ একাধিক অভিযোগে সল্টলেকের একটি বেসরকারি সংস্থার তিন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম রজতশুভ্র ঘোষ, সুব্রত সরকার ও পুষ্পেন খান। পূর্ণিমা খাটুয়া নামে মেদিনীপুরের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, তিনি ওই সংস্থায় ৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি। সম্প্রতি তিনি ডি-বি ব্লকে সংস্থার অফিসে গিয়ে দেখেন, সংস্থার নাম পাল্টে গিয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে ভয় দেখানো ও হুমকি দেওয়া হয়। এ দিন ধৃতদের জামিনের আর্জি জানান তাঁদের আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা। সরকারি আইনজীবী সাবির আলি জামিনের বিরোধিতা করেন। জামিনের আবেদন নাকচ করে ধৃতদের চার দিন পুলিশি হাজতে রাখতে বলে আদালত।
|