স্থানীয় এক ক্লাবের চাঁদার জুলুম মেনে না নেওয়ায় ভাঙচুর করা হল কৃষ্ণনগরে আনন্দ বিপণিতে। ওই বিপণির কর্ণধার রঞ্জন সরকার বলেন, “মাস কয়েক ধরেই স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েকজন সদস্যের রোষদৃষ্টিতে পড়েছিলাম আমরা। পৌষকালী পুজোতে ৫ হাজার টাকা চাঁদা চেয়েছিলেন তাঁরা। আমরা তা দিতে পারিনি।” তিনি জানান, তার পর থেকে মাঝেমধ্যেই ওই ক্লাবের সেই যুবকেরা বিপণির সামনে ময়লা ফেলে যেত। হুমকিও দিত। তাঁরা অবশ্য তা অগ্রাহ্যই করছিলেন। কিন্তু সোমবার রাতে বিপণি ভাঙচুরও করা হল। রঞ্জনবাবু বলেন, “এই দিন তারা দোকানের শাটারের উপর ও পাশের একটি অংশ ভেঙে দিয়ে গিয়েছে। বিপণির সামনে কাটা মাংসও ফেলে রেখে গিয়েছিল। শুনেছি মদের বোতলও ছিল।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা সকলেই কৃষ্ণনগরের স্থানীয় বাসিন্দা। এ দিন রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। কৃষ্ণনগরের আইসি অলোকরঞ্জন মুন্সির বক্তব্য, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
ওই ক্লাবের সম্পাদক রাজা দুবে গত পুর ভোটে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। ক্লাবটি সিপিএম নিয়ন্ত্রিত বলে কৃষ্ণনগর শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি দীপক বিশ্বাসের দাবি। রাজাবাবু অবশ্য বলেন, “ক্লাবের কোনও সদস্য এই ঘটনায় জড়িত থাকলে তা দুর্ভাগ্যজনক।” নদিয়া জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদির কথায়, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। তবে ক্লাব একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে নানা ধরনের মানুষই থাকেন। তাই এই ঘটনায় আমাদের দলের নাম জড়ানো ঠিক নয়।”
শহরের অন্যতম জমজমাট এলাকা পোস্ট অফিসের মোড়ে ২০১০ সালে এই আনন্দ বিপণিটির উদ্বোধন হয়। দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজের অধ্যক্ষ সাহজাহান আলি বলেন, “ওই বিপণিটি আমাদের শহরে সাহিত্যের জানলা হয়ে উঠেছিল। সেই দোকানের উপরেই আঘাত কৃষ্ণনগরের সংস্কৃতির পরিপন্থী।” স্থানীয় দত্তমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অনির্বাণ রায় বলেন, “ওই ক্লাবের কয়েকজন সদস্য এর আগে অন্য ব্যবসায়ীদেরও সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন।
আমরা পুলিশকে সে কথা জানিয়েওছিলাম। পুলিশের উচিত এ বার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।” |