ইঁদুরের হানায় বিপন্ন ঢাকুরিয়া উড়ালপুল
ইঁদুরের উৎপাতে ‘বসে’ যাচ্ছে ঢাকুরিয়া ব্রিজ। আর তা চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের।
মঙ্গলবার ওই সেতুর হাল দেখতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিশেষজ্ঞ এক দল ইঞ্জিনিয়ারের। আর সেতুর নীচ থেকে মাটি সরিয়ে তা দুর্বল করছে যে ইঁদুরের দল, তাদের উৎপত্তি আবার সেতুর পাশে থাকা পুরসভার ভ্যাটে।
শহরের অন্যতম ব্যস্ত এই সেতুর হাল দেখতে এ দিন সেখানে যান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। তাঁর কথায়, “ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে সেতুর দু’পাশের অংশ বসে গিয়েছে। তার উপরে ভারী যান চলাচলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে খুব শীঘ্রই ওই সেতু সংস্কারের কাজ শুরু করবে সরকার।” তিনি জানান, ওই সেতুর সংস্কারে কী কাজ করা প্রয়োজন, তা নিয়ে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে রাইট্স সংস্থা রিপোর্ট দেবে।
ঢাকুরিয়া উড়ালপুলের পাশে উন্মুক্ত ভ্যাট।— ফাইল চিত্র
সম্প্রতি উল্টোডাঙা সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সরকার ও পুর-প্রশাসন। দিন কয়েক আগে শহরের সমস্ত সেতুর হাল ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ জানান, শহরে সেতু ও উড়ালপুলের সংখ্যা ৬২। ইতিমধ্যে দু’টি সেতু ঘুরে দেখা হয়েছে। একটি আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে জিরাট সেতু। অন্যটি ঢাকুরিয়া উড়ালপুল। দু’টির কোনওটির অবস্থাই ভাল নয় বলে জানিয়েছেন সুশান্তবাবু।
এ দিন পুরসভার রাস্তা দফতরের ইঞ্জিনিয়ার-সহ রেল, রাইট্স, কেআইটি, পূর্ত এবং কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক দফতরের পদস্থ অফিসারেরা ঢাকুরিয়া সেতু ঘুরে দেখেন। পুরসভা সূত্রের খবর, ১৯৬৩ সালে কেআইটি ঢাকুরিয়া সেতু তৈরি করে। সম্প্রতি ওই সেতুর নয়া নামকরণ হয় শ্রীচৈতন্য সেতু। পুরনো পদ্ধতিতে গড়ে ওঠা ওই সেতুর দু’প্রান্তের নীচে মাটি ভরা। আর রেললাইনের উপরের অংশটি গার্ডার (লোহার কাঠামো) দিয়ে বানানো। তৈরি হওয়ার দু’বছরের মধ্যে এক বার সংস্কার করা হয়েছিল। তার পরে ওই সেতুতে আর কখনও হাত পড়েনি বলে জানান পুরসভার রাস্তা দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার।
রাইট্স-এর জেনারেল ম্যানেজার (হাইওয়ে) তরুণ সেনগুপ্ত বলেন, “৫০ বছর আগে তৈরি হয়েছে ওই সেতু। সে সময়ে সেতুর দু’পাশে মাটি ভরাট করে কাঠামো শক্ত করা হত। কোনও এক সময়ে সেতুর পাশে পুরসভার ভ্যাট গড়ে ওঠে। ভ্যাটে আসা ইঁদুরই সেতুর নীচে গর্ত করতে শুরু করে। বংশ বিস্তার হতে থাকে মূষিক দলের।” রাইট্স-এর ওই বিশেষজ্ঞের মতে, ওই এলাকায় ইঁদুরের আনাগোনা কমানোই প্রথম জরুরি কাজ। ইতিমধ্যেই পুরসভা অবশ্য ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য ব্যবহৃত ওই ভ্যাটটি অন্যত্র সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের জানা গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেতুর যে অংশটি রেললাইনের উপরে, সেই গার্ডারও ক্ষয় হয়ে দুর্বল হয়েছে। সেটিও বদলানো প্রয়োজন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, গার্ডারের অংশ সারাইয়ের টাকা দেবে রেল দফতর। বাকি কাজের খরচ জোগাবে রাজ্য সরকার। আর পুরো কাজটা তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে।
পুরমন্ত্রী জানান, রাইট্স-এর কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে কাজ শুরু হবে। তবে সংস্কারের কাজ চলাকালীন সেতুটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকবে না। তিনি জানান, ঢাকুরিয়া, যোধপুর পার্ক, যাদবপুর, গড়িয়া-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশের সঙ্গে অন্যান্য এলাকার সংযোগ ঢাকুরিয়া ব্রিজ দিয়ে। সংস্কারের সময়ে সেতুর এক দিকে যান চলাচল করবে। অন্য দিক খোলা থাকবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.