এ বছর সাম্মানিক স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য অনলাইন প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “রাজ্যে কলেজে কলেজে স্নাতক স্তরে অনলাইন ভর্তির প্রক্রিয়া এই প্রথম। এতে ছাত্রছাত্রীদের হয়রানি কমবে। বিভিন্ন কলেজে ভর্তি নিয়ে যে গোলমাল হয় তাও কমবে বলে আশা করছি।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ জুন থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট, www.buruniv.ac.in-এ ক্লিক করলেই জানা যাবে ভর্তির নিয়মকানুন। বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া ও বীরভূম এই চারটি জেলার ৯০টি কলেজে সরাসরি ভর্তি হওয়া যাবে। ২৫টি বিষয়ে ভর্তির সুযোগ মিলবে এভাবে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলির পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজা বলেন, “প্রথমে ৩০০ টাকা দিয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীকে অনলাইনে নিজের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাহলে সে ওয়েবসাইটে ভর্তি সংক্রান্ত একটি ফর্ম ও নিয়মাবলি পাবে। এই নিয়মাবলি দেখেই তাকে সংশ্লিষ্ট ফর্ম পূরন করে অনলাইনেই জমা দিতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৫ শতাংশ নম্বর থাকলেই মিলবে এই সুযোগ। তবে সাঁওতালি ও মিউজিক বিষয়ের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ নম্বর থাকলেও মিলবে স্নাতক স্তরে ভর্তি হবার সুযোগ।” |
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যে নিয়মাবলি জানানো হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ফর্মে ছাত্র বা ছাত্রীকে নিজের নাম-ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ও প্রাপ্ত নম্বর, বোর্ডের নাম, গ্রেড ইত্যাদি দিতে হবে। পছন্দ মতো কোন কলেজে, কোন বিষয়ে পড়তে চায় তাও জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট ছাত্রকে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৯০টি কলেজে মোট ২৫টি বিষয়ে অনার্স পড়ানো হয়, তাই সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রী সর্বাধিক ২৫টি বিষয়েই ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ কোনও ছাত্র বা ছাত্রী চাইলে একইসঙ্গে বর্ধমান রাজ কলেজে গণিতে অনার্স ও বিবেকানন্দ কলেজে রসায়নে অনার্স পড়ার আবেদন করতে পারবেন। একই ভাবে কেউ বোলপুর কলেজে ইংরেজিতে অনার্স, বাঁকুড়া সম্নিলনী কলেজে অর্থনীতিতে বা হুগলি মহসিন কলেজে বাংলায় অনার্স পড়ার আবেদনও একইসঙ্গে করতে পারবেন।
অনলাইন ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদে জানাতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ৯০টি কলেজের অধ্যক্ষ ও একজন কম্পিউটারে পারদর্শী (টেকনিক্যাল পার্সন) লোককে নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ১০ জুন সোমবার, অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে ২০ জুন পর্যন্ত চলবে কলেজে কলেজে রেজিষ্ট্রেশন ও ফর্ম ফিলআপের কাজ। এর পরে কোন কলেজে কোন বিষয়ে অনার্সের মেধা তালিকায় সেই ছাত্র বা ছাত্রী ঠাঁই পেয়েছে, সেটাও পর্যায়ক্রমে জানিয়ে দেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট। দফায় দফায় একমাস ধরে পুরো প্রক্রিয়াটা চলবে। তবে এই অনলাইন ভর্তির প্রক্রিয়া শুধু স্নাতক সাম্মানিক স্তরের ক্ষেত্রে প্রযোয্য। যে ছাত্র বা ছাত্রী পাসের পাঠ্যক্রমে ভর্তি হবেন তাঁদের যোগাযোগ করে নিতে হবে কলেজগুলির সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট কলেজ থেকে ফর্ম নিয়েই ভর্তির প্রক্রিয়া চলবে।
তবে বর্ধমানের মহিলা কলেজে পাসে ভর্তির ফর্ম দেওয়া হবে ৫-১০ জুন। বর্ধমানের রাজ কলেজে পাস পাঠ্যক্রমের ফর্ম দেওয়া হবে ১০-২১ জুন পর্যন্ত। বিবেকানন্দ কলেজে এই ফর্ম মিলবে ১৩ তারিখ থেকে। দুর্গাপুর মহিলা কলেজে পাসের ফর্ম দেওয়া শুরু হবে ৪ জুন থেকে। চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ ও মাইকেল মধুসূদন দত্ত মেমোরিয়াল কলেজে ফর্ম মিলবে ৫ জুন থেকে। চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। কলেজগুলিতে একইসঙ্গে চলবে ফর্ম জমা নেওয়ার কাজও। আর স্নাতক সাম্মানিক স্তরে ভর্তির মেধাতালিকা চূড়ান্ত করবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। |