|
|
|
|
মনোনয়নে গোলমাল, আক্রান্ত সাংবাদিকরাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিরোধী দলকে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ছিলই। এ বার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে মেদিনীপুর সদর ব্লক অফিসে। জখম হয়েছেন এবিপি আনন্দের চিত্র সাংবাদিক বিল্টু গোপ-সহ তিন জন।
এ দিন মেদিনীপুর বিডিও অফিসের সামনে তৃণমূল জমায়েত করছে করছে খবর পেয়ে ছবি তুলতে গিয়েছিলেন এবিপি আনন্দের চিত্র সাংবাদিক বিল্টু। ছিলেন অন্য সংবাদপত্রের কয়েকজন সাংবাদিকও। অভিযোগ, কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দিচ্ছিলেন তৃণমূলের লোকজন। সেই ছবি তুলতে গেলেই বিল্টুর উপর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা চড়াও হন। মার খান রাজবিহারী মাহাতো, অশোক মণ্ডল-সহ আরও কয়েক জন সাংবাদিক। বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্ব মানেননি। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “আমরা সন্ত্রাস করলে ওরা প্রার্থী দিচ্ছে কী করে? আসলে মিথ্যে কথা বলে বাজার গরম করার চেষ্টা চলছে।” আর সাংবাদিকদের উপর হামলা প্রসঙ্গে প্রদ্যোৎবাবুর বক্তব্য, “এরকম একটা ঘটনা শুনেছি। আমরা সত্যতা যাচাই করছি। যদি এমন ঘটে থাকে তা কাম্য নয়।” জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগ পেয়েছি। পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” |
|
আহত সিপিএম কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র। |
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে সরব হয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই। এমনকী মহকুমাশাসকের অফিসেও মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে দেওয়া, বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের মারধরের ঘটনা ঘটছে। বিরোধীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। প্রতিবাদে পিংলা ব্লক অফিসে অবস্থানে বসছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “পাঁচথুবি গ্রামের প্রস্তাবিত প্রার্থী রমজান আলিকে আটকে রাখা হয়েছে খবর পেয়ে গিয়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রবি ঘোষ। শেখ রাজু নামে একজন মোটর সাইকেলে রবিবাবুকে নিয়ে যান। গ্রামে ঢুকতেই রাজুর ব্যাগে বোমা ঢুকিয়ে মিথ্যে মামলা দিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় তৃণমূল। রবিবাবুকেও মারধর করা হয়।”
এ দিন দাসপুর-২ ব্লক থেকে জেলা পরিষদ আসনের সিপিএম প্রার্থীরা ঘাটালে মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন। অফিসের সামনে থেকে তিন জনের মনোনয়নপত্র ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায় বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে সিপিএম। মহকুমাশাসকের অফিসের মধ্যেই কার্তিক রায় নামে এক সিপিএম কর্মীকে বেধড়ক মারা হয় বলেও অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ফের মনোনয়নপত্র তুলে জমা দেন প্রার্থীরা।
শালবনিতে সিপিআই ও সিপিএম কর্মীদের উপরেও এ দিন মারধর করা হয়। তাতে সিপিআইয়ের প্রস্তাবিত প্রার্থী সুদীপ খামরই গুরুতর আহত হন। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রানা বলেন, “শালবনির চকতারিণীতে পার্টি অফিসে বসেছিল আমাদের কর্মীরা। পার্টি অফিসে গিয়ে মারধর করে তৃণমূল। এভাবে জেলা জুড়েই সন্ত্রাস সৃষ্টি করে মনোনয়নে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” সিপিএম অফিসেও হামলা হয়। জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে।
মেদিনীপুর সদর ব্লকে বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে বিজেপি-র জেলা নেতা অরূপ দাস সহ ৬ জনকে বেধড়ক মারধর করা বলে অভিযোগ। অরূপবাবুর কথায়, “তৃণমূল এমনভাবে বিডিও অফিস ঘিরে রেখেছে যে কাউকে ঢুকতেই দিচ্ছে না।” তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানেননি। আর পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|