এক ঝলকে...
পৃথিবী
সমকামী বিয়ে, বিষম ঝামেলা
• প্যারিস • তোলপাড় চলছে প্যারিসের রাজপথে। হাজার, হাজার (নাকি, লাখ?) বিক্ষোভকারীর ছোটাছুটি, কাঁদানে গ্যাস, লাঠিচার্জ, গ্রেফতার, কী হচ্ছে না! এত মার খাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা, তবু আবার পরের দিন ভিড় জমছে এই রাস্তায়, ওই রাস্তায়। অন্তত শ’চারেক মানুষকে ধরেছে পুলিশ। অন্তত জনাপঞ্চাশ গুরুতর আহত। অন্তত দশ লাখ লোক রাস্তায় নেমেছে, বলছে সরকারি হিসেব।
ব্যাপার আর কিছু নয়, এই সবে ফরাসি সরকার আইন করে সমকামী-বিবাহ সিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছে। অনেক দিন ধরে সে দেশে সমকামী-অধিকারের আন্দোলন চলছিল, এই প্রথম তাদের ক্ষেত্রে বিবাহ আইনসিদ্ধ করা হল। প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ কী ভেবেছিলেন, কে জানে তবে এত ভয়ানক প্রতিক্রিয়া বোধ হয় তিনিও আশঙ্কা করেননি। রক্ষণশীল ফ্রান্স আর প্রগতিশীল ফ্রান্স প্রায় মুখোমুখি যুদ্ধে নেমে পড়ল বলে মনে হচ্ছিল সপ্তাহের প্রথম দিকে প্যারিসের রকমসকম দেখে!
কিন্তু কেন এত অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া? ফ্রান্স তো বিশ্বের প্রথম দেশ নয় বরং ফ্রান্স দাঁড়াল পৃথিবীর চোদ্দো-তম দেশ, যেখানে সমকামী বিবাহ চালু হল। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, সেটা তো ফরাসিদের কাছে একেবারে অভাবনীয় ছিল না? আসল কথা, সোশালিস্ট দলের প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদ-এর বিরুদ্ধে দেশের একটা বিরাট অংশ প্রবল চটে আছে, প্রধানত তাঁর অর্থনৈতিক নীতির কারণে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে অভিবাসী-বিরোধী, সমকামী-বিরোধী, অতি-রক্ষণশীল, অতি-দক্ষিণপন্থী সামাজিক অংশটিও। এ বারের আন্দোলনে নাকি অন্তত ১০০ জন অতি-দক্ষিণপন্থী নেতৃ-স্থানীয় ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে মুখ্য ভূমিকা নিতে। এঁদের ধারণা, তাঁদের দেশ অতি দ্রুত অধঃপাতে চলেছে, কাজের কাজ না করে তাঁদের প্রেসিডেন্ট আপাত আজেবাজে এবং অত্যন্ত ‘অ-বাঞ্ছিত’ ব্যাপারে মাথা ঘামাচ্ছেন। সুতরাং তাঁর এবং তাঁর সরকারের হুঁশ ফেরাতে দলে দলে পথে নামাই একমাত্র পথ! হায় ফরাসি প্রগতির অতীত স্মৃতি!

এখনও সন্দেহ আছে নাকি?
• স্যান ডিয়েগো • এই ক’দিন আগেই দুনিয়াজোড়া হইচই, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির বক্ষ-বাতিল অপারেশন নিয়ে। জোলি নাকি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর মধ্যে এমন এক রকম জিন আছে, যার ফলে তাঁর ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা খুবই বেশি। ঘটনাচক্রে, জোলির মা-ও নাকি ২০০৭ সালে ঠিক এই কর্কট রোগেই মারা গিয়েছিলেন। আর মায়ের থেকেই নাকি এই মারণ জিনটি উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছেন জোলি। এতগুলো ‘নাকি’ বলতে হচ্ছে এই জন্য যে হইচইয়ের এক পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে দুনিয়াজোড়া সন্দেহ, এ সব যা বলছেন জোলি, সব ঠিক তো? নাকি এ তার পাবলিসিটি স্টান্স? গত সোমবার ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগো শহরের হাসপাতালে মৃত্যু হল জোলি-র মাসি ডেবি মার্টিন-এর। বয়স ৬১, তিনিও ক্যানসারের রোগী ছিলেন, পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত বি আর সি এ-১ জিনের প্রোকোপে!

নজরবন্দি
জ্যাক স্ট্র ব্যক্তিটিকে তত একটা দেখা যায় না আজকাল। তবে কিছু দিন আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন ব্রিটেনের লেবার সরকারের অন্যতম প্রধান মুখ। আপাতত তিনি বিরোধী দল লেবার পার্টির এম পি, আর কিছু নন। তবু তাঁর মুখচ্ছবি বার বার উঠে এল এই সপ্তাহের সংবাদমাধ্যমে। অত্যন্ত দামি কথা বলেছেন তিনি, অত্যন্ত কঠিন এক সময়ে। কয়েক দিন আগেই লন্ডনে এক শ্বেতাঙ্গ যুবককে দুই ইসলামি জঙ্গি নিধন করার ফলে লন্ডনে তুমুল রাজনৈতিক ও সামাজিক গোলযোগ চলছে। তুঙ্গে উঠেছে ইসলাম-বিরোধী তথা অভিবাসী-বিরোধী প্রচার, লোকজন কথায় কথায় চরমভাবাপন্ন কথাবার্তা বলছে। ইংলিশ ডিফেন্স লিগ (ই ডি এল) বলে একটি অতি-দক্ষিণপন্থী দল লন্ডন শহর আর তার চার পাশে মিছিল-মিটিংয়ের জোয়ার বইয়ে দিচ্ছে। তারা ধুয়ো তুলেছে ‘ওদের আরব স্প্রিং শেষ, এ বার আমাদের ইংলিশ স্প্রিং শুরু’। দাবি তুলেছে, অ-ইংরেজ সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের ওপর সরকারকে এখনই রাশ টানতে হবে। বিপাকে পড়ে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন-এর কনজারভেটিভ সরকার অনেক দাবি মেনেও নিয়েছে, যার মধ্যে আছে টিভিতে নানা ধরনের ‘অন্য’ সাংস্কৃতিক সম্প্রচার বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত।
এই উপলক্ষেই মুখ খুলেছেন স্ট্র। বলেছেন, সরকার কোনও মতেই কোনও ধরনের মৌখিক প্রচারে বাধা দিতে পারে না, সেটা গণতন্ত্রের আদর্শের বিরোধী। গণতন্ত্র মানে স্ট্র আর এক বার বলে দিলেন বিরুদ্ধ মতকেও সহ্য করা, তাকেও জায়গা দেওয়া। ব্রিটিশ সমাজ যেন কোনও ভাবেই এই আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয়। ইসলামি বা অন্য চরমপন্থীদের টেলিভিশনে নিষিদ্ধ করলে তাতে যে আসলে সেই চরমপন্থীদেরই সুবিধে করে দেওয়া হয়, আই আর এ-র উদাহরণ টেনে মনে করিয়ে দিলেন স্ট্র।
ক্যামেরন কী করবেন, তিনিই জানেন। তবে এত গোলমেলে সময়ে যে স্ট্র এই কথাটা এত স্পষ্ট ভাষায় মনে করিয়ে দিলেন, তার জন্য নিঃসন্দেহে একটা বিরাট কুর্নিশ তাঁর প্রাপ্য!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.