চাপান-উতোর
জটে নিকাশি
টকে আছে হাওড়ার নিকাশি সংস্কারের কাজ। কারণ, পুরসভা ও রাজ্যের চাপান-উতোর। পুরসভার অভিযোগ, রাজ্যের আর্থিক সহায়তার অভাবে এই অবস্থা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। ফলে এ বর্ষায়ও দুর্ভোগের আশঙ্কায় করছেন হাওড়াবাসী। হাওড়ার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “পুরসভার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। নিকাশি সংস্কার-সহ নানা পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বহু বার আবেদন করেছি। কোনও ভাবেই সহায়তা পাইনি। সিপিএম পরিচালিত বলেই আমাদের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে।”
যদিও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজ্যের সামর্থ্য এমনিতেই কম। তার পরেও যতটা সম্ভব দেওয়া হয়েছে। পুরসভা ঠিক মতো নিকাশির রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেনি বলে সমস্যা। রাজ্যের উপরে দোষ না চাপিয়ে পুরসভা ঠিক ভাবে নিকাশির রক্ষণাবেক্ষণ করুক।”
টিকিয়াপাড়া
নিকাশির এখন কেমন অবস্থা?
অধিকাংশ নর্দমার ঢাকনা নেই। অনেক জায়গায় জঞ্জাল ও আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। ফলে জল আটকে যাচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই জল উপচে পড়ে। বাড়ছে মশামাছির উপদ্রবও। বিশেষ করে সালকিয়া, রামরাজাতলা, টিকিয়াপাড়া, বেলিলিয়াস রোড, হাওড়া আদালত চত্বরের খুবই খারাপ অবস্থা। হাওড়ার ছ’টি পাম্পিং স্টেশনের অবস্থাও খারাপ। বর্ষায় জল বাড়িতে ঢুকে যায়। বাসিন্দা দেবব্রত রাউত বলেন, “বাড়িতে নোংরা জল ঢুকে দুর্বিষহ অবস্থা হয়। দীর্ঘ দিন এ ভাবে চলছে।”
বেলিলিয়াস রোড
পুরসভা সূত্রের খবর, নিকাশি সংস্কারের জন্য কেএমডব্লিউএসএ, এইচআইটি এবং কেএমডিএ-এ, জেএনএনইউআরএম-এর আওতায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করে। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। যেমন, এইচআইটির তত্ত্বাবধানে বেলিলিয়াস প্রথম বাই লেন এর নর্দমা ঢাকা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৫.৬৮ লক্ষ টাকা। ২০০৯-এ দরপত্রও ডাকা হয়। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি। গত বছর বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির এক মিটিংয়ে হাওড়া পুরসভার প্রতিনিধি দল অর্থের দাবি জানিয়েছিল। অভিযোগ, তাতেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তবে আলমপুর থেকে মৌড়ি হয়ে মাশিলা খাল পর্যন্ত নর্দমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। যদিও এইচআইটির মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার মৃণ্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বেশির ভাগ কাজই করে ফেলেছি। এ বার বর্ষায় অবস্থার উন্নতি হবে।”
বাইপাস ট্যান্ডেল বাগান
মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিষ ঘোষ বলেন, “নর্দমায় জলের প্রবাহ ঠিক রাখার দায়িত্ব পুরসভার। এর জন্য ঢাকনা দেওয়া জরুরি। কিন্তু অর্থাভাবে সে কাজ হচ্ছে না। ফলে যতই পরিষ্কার করা হোক, সমস্যা মিটছে না। তা ছাড়া স্বর্ণময়ী খাল কচুরিপানা জমে মজে গিয়েছে। সেচ দফতরকে বহু বার জানিয়েও লাভ হয়নি।”
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তিনটি খালের সংস্কারের কাজ চলছে। পুরসভার আগে নিজের কাজ ঠিক করে করা উচিত।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের অরুণ রায়চৌধুরী বলেন, “গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের টাকায় নর্দমা সংস্কারের কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। সে অর্থ কোথায় গেল?” যদিও মেয়র বলেন, ‘‘টাকা দূরের কথা, এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকাই আমরা পাইনি।”
ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.