চুরি করেছিলাম, বিতর্ক কিপলিংয়ের চিঠিতে
ক টুকরো কাগজ আর কয়েকটা শব্দ— প্রশ্ন তুলে দিল মোগলির জনকের কৃতিত্ব নিয়ে।
ছোট্ট একটা ছেলে, মাথায় ঝাঁকড়া চুল, গায়ে কাপড় নেই বললেই চলে। নেকড়ে মা-বোনদের সংসারে বড় আদরের মোগলি। দিনরাত খেলে বেড়ায় তার প্রিয় বন্ধু এক কালো প্যান্থার বাগিরা আর ভালুর সঙ্গে। রাতে গুহায় ফিরে নেকড়ে মায়ের গলা জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ভারতের এক গভীর জঙ্গলকে প্রেক্ষাপট করে রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের ‘জাঙ্গল বুক’ এক অন্য রূপকথার জাল বুনেছিল একশো বছর আগে। যার রেশ কাটল হঠাৎই কিপলিংয়েরই কলমের আঁচড়ে।
লন্ডনের এক নিলাম ঘরে ২৫০০ পাউন্ডে বিকিয়ে গেল ‘জাঙ্গল বুক’-এর জনক রুডইয়ার্ড কিংপলিংয়ের নিজের হাতে লেখা একটা চিঠি।
আর সে সঙ্গেই তাঁর নিজের কলমের খোঁচাতেই প্রকাশ্যে এসে গেল কিপলিংয়ের অমোঘ স্বীকারোক্তি, “খুব সম্ভবত আমি চুরি করেছিলাম।”
১৮৯৪ সালে মোগলির জন্ম দিয়েছিলেন কিপলিং, লিখেছিলেন ‘দ্য জাঙ্গল বুক’। আর চিঠিটি লেখেন ঠিক তার পরের বছরই। এক মহিলার উদ্দেশে লেখা হয়েছিল সেটি। তবে সেই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। অবশ্য যা জানা গিয়েছে, তাই বেশ চমকে যাওয়ার মতো।
কিপলিং লিখেছেন, “ম্যাডাম, কয়েক দিন বাড়ি ছিলাম না। তাই ‘জাঙ্গল বুক’ সংক্রান্ত আপনার চিঠির জবাব দিতে দেরি হয়ে গেল।”
চমকের শুরু তার পরেই, “আমার ভয় করছে, গল্পের কাঠামোটা প্রয়োজন মতো আমি নিজেই বানিয়েছিলাম। যদিও জঙ্গলের নিয়মের কিছুটা অংশ এসকিমোদের সমাজের আইন-কানুন থেকে নেওয়া। খুব সম্ভবত অনেকের গল্প থেকেই আমি বেআইনি ভাবে টুকেছিলাম। তবে ঠিক কার কার গল্প থেকে চুরি করেছি, এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।” অথচ এক বছর আগেই বাজারে এসেছিল মোগলির ‘জাঙ্গল বুক’।
নিজের কাহিনিতে জঙ্গলের বাসিন্দাদের জন্য রীতিমতো বিধান জারি করেছিলেন কিপলিং। যেমন, বাঘ, ভল্লুক, প্যান্থারের সঙ্গে শান্তি চুক্তি বজায় রাখা, খাবারের প্রয়োজন ছাড়া হত্যা করা যাবে না। জঙ্গলে যেই থাকবে, তাকেই মেনে চলতে হবে এ সব খুঁটিনাটি। যদিও চিঠিতে স্পষ্ট, অন্যের লেখা অন্যায় ভাবে নিজের বলে চালিয়ে নিয়ম ভেঙে ছিলেন কিপলিং নিজেই।
চিঠিটি নিলামে তুলেছিলেন অ্যাডাম অ্যান্ড্রুসিয়ের। কিপলিংয়ের এমন স্বীকারোক্তি তিনি কোথায় খুঁজে পেলেন, প্রশ্ন করা হলে অ্যান্ড্রুসিয়ের জানান, তিনি কয়েক মাস আগেই একটি পুরনো বইয়ের দোকান থেকে কিনেছিলেন সেটি। ওই দোকানের মালিক জানান, তাদের কাছে কিছু বই, পুরনো চিঠিপত্র ছিল। তার মধ্যে থেকেই ওই কাগজের টুকরোটার সন্ধান পেয়েছিলেন তারা।
সুনাম-দুর্নাম মিলিয়ে কিপলিংয়ের জীবন বরাবরই আলোআঁধারিতে ঘেরা। ইংরেজি সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই প্রথম নোবেল পেয়েছিলেন। আবার তাঁরই বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ, যুদ্ধবাজ, সাম্রাজ্যবাদিতার অভিযোগ উঠেছিল। শোনা যায়, জালিয়ানওয়ালাবাগ কাণ্ডের পর জেনারেল ও’ডায়ার যখন ব্রিটেনে ফিরে গিয়েছিলেন, কিপলিং তাঁর জন্য সাহায্য তহবিল গড়েছিলেন। বলেছিলেন, ডায়ার ভারতকে ‘রক্ষা করেছেন’।
কিপলিংয়ের দুর্নামের খাতায় তাই নয়া অভিযোগ উঠল মাত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.