মেসি বলতে অজ্ঞান। বার্সেলোনা বলতেও অজ্ঞান। রাত জেগে ফুটবল থকে আই পি এলের খেলা দেখা তার নেশা। নিজেও ফুটবল খেলে। মোহনবাগানের কট্টর সমর্থক কম্পিউটারেও গেম খেলে। তার পর রয়েছে ছবি এঁকে, ক্যুইজ করে ঘরে ট্রফি নিয়ে আসার পালা। এত কিছু করেও বরাবরের প্রথম স্থানটি মাধ্যমিকেও ধরে রাখল লালবাগের ‘নবাব বাহাদুর ইন্সটিটিউশান’-এর ছাত্র শুভম লোধচৌধুরী।
|
শুভম লোধচৌধুরী |
মাধ্যমিকে সে ৬৬৯ পেয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় এ বার সম্ভাব্য প্রথম স্থানাধিকারী। অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞানে ১০০ আর বাকি ৫টি বিষয়ে সে পেয়েছে ৯০ থেকে ৯৬-এর মধ্যে। বাবা প্রদীপ লোধচৌধুরী হাওড়া আদালতের আইনজীবী। স্টেনোগ্রাফার মা সুপ্রীতিদেবী ছেলের মাধ্যমিক পরীক্ষার পর লালবাগ আদালত থেকে বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন জঙ্গিপুর আদালতে। ভোরে উঠে লালবাগের দক্ষিণ দরওয়াজা এলাকার বাড়ি থেকে মা ছুটবেন ৮০ কিলোমিটার দূরের জঙ্গিপুর আদালতের উদ্দেশে। বাড়ি ফিরবেন রাত ৯টায়। ফলে লালবাগের বাড়িতে শুভম কার্যত একা। তবুও সে উচ্চমাধ্যমিক পড়তে চায় লালবাগের নবাব বাহাদুর ইন্সটিটিউশনে। অসুবিধা হবে না? শুভমের জবাব, “অসুবিধা তো হবেই। ” এত দিন ছিল নিজের স্কুলের মধ্যে প্রথম। এবার জেলার মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম। তার কথায়, “৬ জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। টিউশন বাদ দিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা পড়েছি।”
ছাত্রের প্রসংশায় পঞ্চমুখ প্রধানশিক্ষক মহম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, “শুভম লেখাপড়ায় যেমন ভাল, আচার ব্যবহারেও তেমনি নম্র, বিনয়ী।” উচ্চমাধ্যমিকের পর সে মেডিক্যাল নিয়ে পড়তে চায়। দ্বিতীয় পছন্দ ‘অ্যস্ট্রো ফিজিক্স’। মা সুপ্রীতিদেবী বলেন, “ওর বাবা হাওড়া থেকে লালবাগের বাড়িতে মাসে এক দু’ বার আসেন। ছেলে-বাবার সঙ্গ বলতে ওইটুকুই। আমার বদলির চাকরির জন্য ছেলে আমাকেও দিনের বেলায় কাছে পাবে না। তাই খারাপ লাগছে।” |