মোবাইলে রান্নার গ্যাস বুক করেও তার ক্যাশ মেমো বাতিল হয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি) গ্রাহকদের একাংশ এমন এসএমএস পেয়ে বিভ্রান্ত। অনেকেই আবার ঠিকানা বদল করে অন্যত্র গ্যাসের সংযোগ নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। সহজে মিলছে না নতুন সংযোগ।
অনলাইনে আইওসি-র তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পরে ইন্ডেন গ্রাহকদের তরফে এমন নানা অভিযোগ উঠছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কেওয়াইসি-সহ অতিরিক্তি তথ্যের চাপের জেরেই শ্লথ হয়ে পড়ছে সংস্থার সেন্ট্রাল সার্ভার। বিঘ্নিত হচ্ছে সাধারণ পরিষেবা।
এত দিন গ্রাহকদের তথ্য জমা পড়ত ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে। তাঁরা সেই তথ্য পরে পাঠাতেন সংস্থাকে। গোটা প্রক্রিয়াটি সহজ ও স্বচ্ছ করতে এ মাস থেকে দেশ জুড়ে অনলাইন ব্যবস্থায় যাবতীয় তথ্য নথিভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করে আইওসি। এই প্রক্রিয়ায় ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে জমা দেওয়া তথ্য সরাসরি সংস্থার সেন্ট্রাল সার্ভারে চলে যাওয়ার কথা। রাজ্যে ১১৬ জন ডিস্ট্রিবিউটরের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা চালু করে সংস্থা। মোট ডিস্ট্রিবিউটরের সংখ্যা ৪০০-রও বেশি।
কিন্তু প্রক্রিয়া সহজ করতে গিয়েই বেধেছে বিপত্তি। ইন্ডেনের গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, সিলিন্ডার বুক করার পরে কারও কারও কাছে এসএমএস বার্তায় বলা হয়েছে, তাঁর ক্যাশ মেমো বাতিল করা হয়েছে। আবার নতুন করে তা তৈরির এসএমএস-ও এসেছে। অনেকের ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা একই সঙ্গে কয়েক বার ঘটেছে। ফলে বিভ্রাম্তি চরমে উঠেছে। অভিযোগ, সাধারণ ভাবে দেরিও হচ্ছে গ্যাস পেতে।
একই ভাবে সমস্যা হচ্ছে ট্রান্সফার ভাউচার কিংবা কেওয়াইসি সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়েও। কর্মসূত্রে বদলি হলে বা বাড়ি বদলালে সিলিন্ডার ও রেগুলেটর ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে জমা রেখে গ্রাহকেরা ওই ভাউচার নিয়ে নতুন ঠিকানায় সংযোগ পেতে পারেন। কিন্তু অনলাইন ব্যবস্থায় তা চট করে মিলছে না।
ডিস্ট্রিবিউটররা পুরো দায়ই সংস্থার উপর চাপিয়েছেন। অল ইন্ডিয়া এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশনের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক বিজনবিহারী বিশ্বাস বলেন, “আমরা এ ব্যবস্থার বিপক্ষে নই। কিন্তু সমস্যার জন্য দায়ী যান্ত্রিক ত্রুটি।”
সমস্যার কথা মানছেন সংস্থার কর্তারাও। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত, দেশ জুড়ে একই সঙ্গে ইন্ডেনের এই অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সেন্ট্রাল সার্ভারের উপর চাপ ছিলই। উপরন্তু আগামী ১ জুন থেকে দেশের ২০টি জেলার গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক আক্যাউন্টে সরাসরি ভর্তুকির টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হবে। ফলে সেই তথ্যও ভরতে হচ্ছে সেন্ট্রাল সার্ভারে। যার সংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ। এই বিপুল তথ্যের চাপেই তথ্যভাণ্ডার তৈরির প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
আইওসি জানিয়েছে, এই অবস্থায় ৫ জুন পর্যন্ত এ রাজ্যের নতুন ডিস্ট্রিবিউটরকে অনলাইন ব্যবস্থায় আনা হবে না। ওই ১১৬ জন ডিস্ট্রিবিউটরের ক্ষেত্রেই তা আপাতত কার্যকর হচ্ছে। সংস্থার দাবি, সমস্যা সাময়িক। তা শীঘ্রই মিটে যাবে। |