মাধ্যমিকে হুগলির জয়জয়কার। মেধা-তালিকার মগডালে আরামবাগের ডিহিবাগনান কে বি রায় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য প্রথম রূপায়ণ কুণ্ডু তো রয়েছেই। সম্ভাব্য নবম স্থান দখল করেছে শিয়াখালা বেণীমাধব উচ্চ বিদ্যালয়ের শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। সম্ভাব্য দশম রিষড়ার বাণী ভারতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যুষা বাগ।
রূপায়ণের মতোই শাশ্বত এবং প্রত্যুষার স্বপ্ন চিকিত্সক হওয়ার। একান্নবর্তী পরিবারের ছেলে শাশ্বত দিনে ৮-৯ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছে। তার চার জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। জ্যাঠতুতো দাদার কাছে জীবন-বিজ্ঞানের পাঠ নিয়েছে। তবে শুধুই বইতে মুখ গুঁজে বসে থাকা না-পসন্দ শিয়াখালা গ্রামের এই কৃতী ছাত্রের।
পড়ার পাশাপাশি নিয়ম করে ক্রিকেট খেলেছে সে। গল্পের বই পড়েছে। গোয়েন্দাগিরির গল্প তার সবচেয়ে প্রিয়। বাবা বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। শাশ্বত অবশ্য তার ভাল ফলের কৃতিত্ব সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চায়।
শাশ্বতের কথায়, “স্কুলের মাস্টারমশাইরা, গৃহশিক্ষক এমনকী বন্ধুদের কাছ থেকেও যথেষ্ট উত্সাহ পেয়েছি। পড়াশুনো শেষে চিকিত্সক হয়ে গ্রামেই ফিরতে চাই। এখনও অনেকে আছেন, যাঁরা শুধুমাত্র অর্থের কারণে সুচিকিত্সা থেকে বঞ্চিত। কাজ করতে চাই তাঁদের জন্য।”
রিষড়ার বাণী ভারতীর প্রত্যুষা ইতিমধ্যেই একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অঙ্ক এবং বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের অনেকটাই শেষ করে ফেলেছে। তার বাবা সুদীপ বাগ একটি বেসরকারি কারখানার তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার। থাকেন রিষড়া সুভাষনগর আবাসনে। সুদীপবাবু জানালেন, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ডাক্তারির প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে প্রত্যুষা। তিনি বলেন, “ওই প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিকের পড়াশোনায় কিছুটা হলেও ঘাটতি ছিল। টেস্টের পরে অবশ্য প্রচুর খেটেছে। বিভিন্ন মেধা অন্বেষণ পরীক্ষাতেও মেয়ে যথেষ্ট ভাল ফল করেছে।”
রেজাল্ট দেখে অবশ্য প্রত্যুষার প্রস্তুতিতে ঘাটতির কথা বোঝার উপায় নেই। অঙ্কে সে ১০০-ই পেয়েছে। বাকিগুলিতে সবই ৯০-এর ঘরে। হিন্দিতে গৃহশিক্ষক ছিল প্রত্যুষার। মাধ্যমিকের মাস ছয়েক আগে থেকে ভূগোলেও এক জনের কাছে পাঠ নেন।
বিজ্ঞান পড়িয়েছেন বাবা। আর ইংরেজি পড়িয়েছেন মা। প্রত্যুষাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। তাঁর কথায়, “ওর প্রতিভা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। প্রত্যুষা অত্যন্ত শান্ত, ভদ্র, শৃঙ্খলাপরায়ণও বটে। আমি বাইশ বছর এই স্কুলে আছি। এই সময়ের মধ্যে স্কুলে প্রথম কেউ মাধ্যমিকে প্রথম দশে এল।’’ প্রত্যুষা বলে, “বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষিকা প্রত্যেকে সাহায্য করেছেন।”
হিন্দমোটর আরজি নগর রোডের বাসিন্দা আকাশলীনা সরকার বাস্কেটবল অন্ত প্রাণ। টেস্ট পরীক্ষার আগেই মধ্যপ্রদেশে জাতীয় যুব বাস্কেটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। নিয়মিত অনুশীলনের ফাঁকেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি সেরেছে সে। উত্তরপাড়া চিল্ড্রেন্স ওন হোমের পরীক্ষার্থী আকাশলীনা ৬৬৪ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে পরিবারের সকলকে। |