সাপে কাটা বালিকার দেহ
দেড় দিন ধরে দেহ আটকে চলল ঝাড়ফুঁক
সাপে কাটা বালিকার দেহ বাড়িতে রেখে ওঝার ঝাড়ফুঁক চলছিল দেড় দিন। তার আগে মুখ দিয়ে টেনে বিষ বের করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন মেয়েটির বাবা। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ তুলে ময়না-তদন্তে পাঠায়। বাবা হাসপাতালে ভর্তি।
তথাকথিত ‘পূর্ণসাক্ষর’ জেলা বর্ধমানের ঘটনা। শনিবার দুপুরে বর্ধমান শহরের কাছেই সফদর হাশমি কলোনিতে বাড়ির শীতলা মন্দিরে ধুপ দিতে গিয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী পূজা দাস (১০)। তার বাঁ হাঁটুর নীচে সাপে ছোবল মারে। প্রায় তৎক্ষণাৎ নিস্তেজ হয়ে পড়ে সে।
পূজার মা চন্দনা দাসের কথায়, “ওর বাবা মাঠে কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে ছুটে এসে তিনি ক্ষতে মুখ দিয়ে বিষ টেনে বের করার চেষ্টা করেন। তাতে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবা-মেয়ে দু’জনকেই এক সঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।” কিছু ক্ষণের মধ্যেই পূজার মৃত্যু হয়। সোমবার হাসপাতালে শুয়ে তার বাবা, পেশায় খেতমজুর রবি দাস বলেন, “আমি প্রাণে বাঁচলেও মেয়েটাকে বাঁচানো গেল না!”
পূজার কিছু আত্মীয়ের অভিযোগ, বর্ধমান মেডিক্যালে সাপে কাটার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই জানিয়ে কিছু চিকিৎসক মেয়েটিকে ভাল নার্সিংহোমে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। চন্দনাদেবী বলেন, “বিপিএল তালিকায় নাম থাকা গরিব লোক আমরা। মেয়েকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে পারনি।”
এ দিন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপস ঘোষ অবশ্য বলেন, “এখানে সাপে কাটা রোগীদের বিনামূল্য ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করা হয়। বিষনাশক অ্যান্টি-ভেনাম সিরাম বা স্যালাইনও পর্যাপ্ত রয়েছে। যদি আমাদের কোনও চিকিৎসক ওই কথা বলে থাকেন, চরম অন্যায় করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি।”
পূজার মা বলেন, “মেয়ে দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে এনে আমরা কালনা থেকে এক ওঝাকে ডাকি। তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টা দেহ রাখা গেলে মেয়ে বেঁচে উঠবে। একপ্রস্ত ঝাড়ফুঁক করে ওঝা চলে যান।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষ বলেন, “রবিবার বিকেলে খবর পাই, দেহ সৎকার না করে ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করানো হচ্ছে। অনেকেই ভাবছে, ছোবল খেয়েছে, ভগবান ওকে বাঁচাবেন! ”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.