পুরসভায় দালাল-রাজ রুখতে এ বার পুর কমিশনারের শরণাপন্ন হলেন খোদ মেয়র পারিষদ। সম্প্রতি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর পুর কমিশনার খলিল আহমেদের কাছে একটি নোট পাঠিয়েছে। তা অনুমোদন করেছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, পুর ভবনের একাধিক বিভাগে যে ভাবে দালাল চক্র ছেয়ে গিয়েছে, তা রীতিমতো চিন্তার ব্যাপার। ওই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুর কমিশনারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।
পুর সূত্রের খবর, বার্থ ও ডেথ সার্টিফিকেট পাইয়ে দেওয়ার জন্য একাধিক দালাল চক্র কাজ করছে পুরসভায়। ওই সব নথি নিতে আসা সাধারণ মানুষ সহজেই দালালদের পাল্লায় পড়ছেন। বিনা ঝঞ্ঝাটে ওই সব নথি পাইয়ে দেওয়ার নামে মোটা টাকাও হাঁকছে তারা। অতীনবাবু বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরে ইতিমধ্যেই তিন বার চক্রের একাধিক পাণ্ডাকে ধরা হয়েছে। এখন তাদের কেউ কেউ স্বাস্থ্য দফতর থেকে সরে লাইসেন্স দফতরের সামনে ঘাঁটি গেড়েছে।”
স্বাস্থ্য দফতরের স্পেশাল অফিসার দেবাশিস সেন বলেন, “এখন স্বাস্থ্য দফতরে তাদের আনাগোনা অনেকটা রোখা সম্ভব হলেও ওই দালালের দল লাইসেন্স ও বিল্ডিং বিভাগে ভিড় বাড়াচ্ছে।” পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের মন্তব্য, “দালাল রাজ আগেও ছিল, এখনও আছে। প্রশাসন মনে করলে যে কোনও সময় তাদের সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তাদের সঙ্গে পুরসভার বেশ কিছু কর্মীর যোগ থাকায় দালাল হঠানোর কাজটা কার্যত কঠিন।”
স্বাস্থ্য দফতরের ওই নোটে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক দালালের নাম ধাম-সহ সব তথ্য পুর কমিশনারকে জানানো হয়। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের হাতে ধরা পড়ে ওই ব্যক্তি মুচলেকা দিয়েছিলেন আর কখনও পুরসভায় এমন কাজ করবেন না। কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্য দফতরের গণ্ডি ছেড়ে লাইসেন্স দফতরের সামনে দিব্যি নিজের লোকজন দিয়ে দালালির কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
অতীনবাবু বলেন, “পুরসভায় দালাল চক্র নিয়ে অনেক অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন দফতরের অফিসার, কর্মী এবং কাউন্সিলরেরা এক যোগে প্রতিবাদ করলে তা বন্ধ করা সম্ভব।” তিনি জানান, দালাল চক্র রোধে স্বাস্থ্য দফতরের নোট সময়োপযুক্ত বলেই তা অনুমোদন করে পুর কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুরসভা থেকে দালালদের সরাতে পুর কমিশনারের কড়া পদক্ষেপ জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
পুর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য ছাড়াও লাইসেন্স, বিল্ডিং ও কর মূল্যায়ন দফতরে দালালদের অবারিত দ্বার হয়ে উঠছে। এ নিয়ে বার বার প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জমা পড়েছে।
কিন্তু গুরুত্ব পায়নি। এ বার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদের অভিযোগ ভাবিয়ে তুলেছে পুর প্রশাসনকে। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানান, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
|