|
|
|
|
রইল গদি, মান গেল দর্শক-মিডিয়ার বিদ্রুপে
গৌতম ভট্টাচার্য • কলকাতা |
রাত্তির বারোটা উনিশ। এতক্ষণ গমগম করা ইডেন গার্ডেন্সের সত্তর ভাগ আছে। তিরিশ ভাগ অদৃশ্য।
সেই তারাই কি না প্রবল বিদ্রুপাত্মক ধ্বনি তুলল বোর্ড প্রেসিডেন্টের জন্য। যে মাঠ গত চার ঘণ্টা দু’দলের জন্যই অবিরাম হাততালি দিয়ে গিয়েছে। যারা ট্রফিহীন চেন্নাই সুপার কিংস ড্রেসিংরুমে ফেরার সময়েও সংবর্ধনায় ভরিয়ে দিয়েছে। তারা ম্যাচের একমাত্র আক্রমণাত্মক সময় বেছে নিল-- নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের নাম পুরস্কার বিতরণের অতিথিদের মধ্যে ঘোষিত হতেই। দ্বিতীয় বার শ্রীনিবাসন বিদ্রুপে ঢাকা পড়লেন যখন ট্রফি দিতে তাঁকে ডাকা হল। এ ক্ষেত্রে সৌভাগ্য, দ্রুত রোহিত শর্মার টিমের জন্য চিৎকার ওঠায় বিদ্রুপটা চাপা পড়ে গেল। কিন্তু শ্রীনিবাসন দু’বারই চিৎকারটা শুনেছেন। মুম্বই ট্রফি নিয়ে স্টেজে নাচানাচি করার অবস্থায় কালো কোট পরা তিনি ইডেন থেকে বেরিয়ে গেলেন। গদি বেঁচে গেল। সম্মান? মিডিয়া আর ইডেন দর্শকের যৌথ আক্রমণে মোটেও না!
শ্রীনি এবং ধোনির কম্বিনেশন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে প্রভাবের বিচারে ডালমিয়া-সৌরভ কম্বিনেশনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। প্রভাব বলতে ভাল এবং খারাপ দু’টোই। এমনই কাকতালীয়, একই দিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে যেন শ্রীনি-ধোনির বিশাল বুদ্ধিনাশ ঘটল। নইলে ডাগআউটের বাইরে আর ডাগআউটে এত বড় দু’টো ট্যাকটিক্যাল ভুলের কী ব্যাখ্যা?
প্রথম জন ঘনিষ্ঠরা বারণ করা সত্ত্বেও মিডিয়ার সমালোচনাকে বিশাল ছক্কা মারার উদ্দেশ্যে সদর্পে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন। আর সেটাতে নাকানিচোবানি খেয়ে নিজের ভাবমূর্তি চরম মলিন করলেন। দ্বিতীয় জন, একা কুম্ভের মতো চেন্নাই ইনিংসকে টানলেন। বিশাল সব ছক্কা মারলেন। কিন্তু সেটা ব্যাটসম্যান ধোনি। অধিনায়ক ধোনি ফাইনালের মতো চাপের ম্যাচে টিম বিপন্ন দেখেও ব্যাটিং অর্ডারে নিজেকে পিছিয়ে রাখলেন সাত নম্বরে। সুনীল গাওস্কর অবধি বলছিলেন, “ধোনি তুমি আজ পাঁচে এলে না কেন?” টি টোয়েন্টিতে গোটা বিশ্ব যাঁকে ভয় পায়, তিনি নিজেকে আগে রাখলে হয়তো কনফেদিতে চাপা পড়া নীল জার্সি খেলার পর দেখতে হত না। |
|
ছবি :উৎপল সরকার |
ধোনির সিএসকে নিষ্কৃতি না পেলেও নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন অবশ্য বোর্ড প্রধানের ট্রফি অক্ষত রেখে দিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে যাবতীয় ভূকম্পনের মধ্যেও টেকনিক্যালি এ দিনের রাউন্ডে তিনি পার পেয়ে গেলেন। সকালে যখন অরুণ জেটলি করুণ ভাবে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, তুমি পদত্যাগ করলে ভাল হয়, তখন শ্রীনিবাসন পাল্টা বলেন তা হলে সবাইকে যেতে হবে। রাজীব শুক্লকে ছাড়তে হবে। কারণ, আপনার কথায় আইপিএল কলঙ্কিত। বাকি বোর্ড কর্তাদেরও পদত্যাগ করতে হবে। তা হলে আমি ছাড়ব। দ্রুত জেটলি গুটিয়ে যান। শুক্ল আরও বেশি করে। এর পর শ্রীনি অন্য অনেককেও বলেন, আমি ইস্তফা দিলে মনে হবে যেন কোনও দোষ করেছি। আমি তো কোনও দোষ করিনি রে বাবা। আমি আর আমার জামাই দু’টো আলাদা লোক। তা ছাড়া বিনা দোষে পদ ছাড়লে দাঁড়িয়ে যাবে, মিডিয়ার কাছে আমরা হার স্বীকার করলাম। অকারণে শুধু শুধু হারতে যাব কেন? শ্রীনি ছাড়লে আমাদেরও পদত্যাগ দাবি করবে, এমন সর্বনাশা চিন্তা শুনেই বোর্ড কর্তাদের মধ্যে ঠান্ডা শিরশিরানি শুরু হয়। আপনি বাঁচলে বাপের নাম। আর কেউ শ্রীনিবাসনকে ঘাঁটাতে যাননি। বরঞ্চ শ্রীনি সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় এঁরা এমন উষ্ণতার সঙ্গে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ছিলেন, যেন দেবদাস আর পার্বতী।
এ বার আসা যাক, সাংবাদিক সম্মেলনের পরের পর্বে। যেটা শুরু হল ইডেন থেকে। যেখানে দাঁড়িয়ে রবি শাস্ত্রী বুঝে উঠতে পারছিলেন না টসের সময় মাইক্রোফোন হাতে ইডেন দর্শককে কী ভাবে সম্ভাষণ করবেন? দুটো বাংলা স্ক্রিপ্ট তৈরি। কোনটা বাছবেন? দুটো নিয়েই রিহার্সাল দিয়ে যাচ্ছেন।
বিকল্প ১: ও কলকাতা ফাইনালের জন্য তৈরি?
বিকল্প ২: সুন্দরী কলকাতা তোমাকে ফাইনালে আরও রূপসী লাগছে।
তাঁর পছন্দ দ্বিতীয়টা। কিন্তু অনেকেই যে বলছে, আজকের ঘোলাটে পরিবেশে এ সব রূপসী-টুপসী শুনলে লোকে অন্য ভাবে রিঅ্যাক্ট করতে পারে। আজ তো শুধুই ধোনি আর রোহিত শর্মার ফাইনাল নয়। আজ গুরুনাথ মায়াপ্পনেরও ফাইনাল। শান্তাকুমারন শ্রীসন্তের ফাইনাল। আর অবশ্যই নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের।
অনেক ভেবেচিন্তে শাস্ত্রী দ্বিতীয়টা বললেন। কিন্তু কিন্তু ভাবটা কেটে গেল বাহবা পেয়ে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং সঙ্কট যখন প্রি-পোলার্ড পর্বে ক্রমাগত চলছে, কেউ কেউ এসে শাস্ত্রীকে বলে গেলেন, “তোমার এত ভাবার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। মেঘ তো কেটেই গিয়েছে।” ভারতীয় ক্রিকেট জগতে নিয়মিত ঘোরাফেরা করেন এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে দারুণ সখ্য এমন এক জন তখন চারতলার লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে বলছেন, “শ্রীনি সেই ত্রিমুকুট নিয়ে চলে গেলেন। আইপিএল ট্রফি। পদত্যাগের প্রবল চাপের কাছে সফল ভাবে মাথা না ঝোঁকানো। আর ইডেন ভর্তি দর্শক। প্রমাণ হয়ে গেল মিডিয়ার লেখালিখি এবং নেগেটিভ ভিজুয়্যাল দেখানোয় লোকে আদৌ প্রভাবিত হয়নি। নইলে এমন ভিড় করে ফাইনাল দেখতে আসত না।” শুনে দুপুরে চূনী গোস্বামীর মন্তব্য মনে পড়ে গেল: কলকাতার লোকে প্রচণ্ড খেপে রয়েছে। বুদ্ধিমান হলে শ্রীনিবাসন আজ মাঠে নেমে প্রাইজ দেবেন না। আমি হলে তো স্রেফ জরুরি কাজ পড়েছে বলে কেটে যেতাম।
ক্লাবহাউসের লাউঞ্জগুলোয় খেলা চলাকালীনও লোকে দাঁড়িয়ে অনবরত কথাবার্তা বলে। তবে সাধারণত সেগুলো ম্যাচকেন্দ্রিক থাকে। কিন্তু রবিবারের ফাইনালের চরিত্র অন্য রকম। সেখানে যে কথাবার্তাও অন্য রকম হবে, আর বিচিত্র কী। বেশ কিছু ক্রিকেটার তাঁর অধীনে, এমন এক এজেন্ট তখন এগিয়ে এসেছেন। “শ্রীনিবাসনের পেছনে লাগা কমিয়ে একটা জিনিস খোঁজ করে দেখুন। গুরুনাথ আর বিন্দু দারা সিংহের আলাপ হল কী করে? কে আলাপ করিয়ে দিয়েছিল? শ্রীনিকে হারাতে না পারলেও এখানে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাবেন!”
শনিবার রাত পর্যন্ত যে আলোচনাটা ছিল ‘শ্রীনি কখন যাচ্ছেন’, সেটা কী ভাবে কথোপকথন থেকে সরে গিয়েছে, বোঝানোর জন্য ওপরের নমুনাগুলো তুলে দিলাম। ফাইনাল ম্যাচের আগের ফাইনালটা যে তার আগেই হয়ে গিয়েছে। প্রবল পরাক্রান্ত শ্রীনিবাসন সফল ভাবে মুলতুবি করে দিয়েছেন তাঁর পদত্যাগ প্রসঙ্গ। যা দেখেশুনে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট আনন্দবাজারকে বললেন, “আপনারা পারলেন না কিন্তু। মিডিয়া-বিদ্রোহ ব্যর্থ হল। সেপ্টেম্বরে ও আবার এক বছরের জন্য চলে আসবে।” কিন্তু তার আগে যদি নতুন করে চাপ তৈরি হয়? ভদ্রলোক বললেন, “ধুর। ছত্তীসগঢ় এসে গিয়েছে! কাল আবার নতুন কোনও প্রসঙ্গ আসবে। চিট ফান্ড যেমন হেডলাইন থেকে চলে গিয়েছে, তেমনই এটাও দ্রুত মিলিয়ে যাবে। শ্রীনি এখন সেফ।” |
সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীনিবাসন |
রাতে শশাঙ্ক মনোহর |
• গুরুনাথ কোনও দিন সিএসকে-র দফতরেও যায়নি। কিন্তু ও মাঠে ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবেই যেত।
• আমার একটা দায়িত্ব আছে। এবং গোটা বিষয়টা নিয়ে কড়া পদক্ষেপই করা হবে। কেউ যদি কোনও নিয়ম ভেঙে থাকে, তা হলে তাকে ছাড়া হবে না।
• তিন সদস্যের একটা কমিশন গড়ে দিচ্ছি। তারাই যা করার করবে। আমি ওদের কাজে নাক গলাব না। |
• আইপিএল সিক্সের ৭৫টি ম্যাচই তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়ে সরকারি তদন্তকারী সংস্থায় অভিযোগ জানাক বোর্ড।
• ভারতে বোর্ডের যে কোনও ম্যাচে সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার নজরদারির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অনুরোধ জানাক বোর্ড। এ জন্য এক মাস আগে থেকে ক্রিকেটারদের মোবাইল নম্বরও দিয়ে রাখা হোক তদন্তকারি সংস্থার কাছে।
• ম্যাচ-পরবর্তী পার্টি বন্ধ করে দেওয়া হোক। |
|
একটু আগে পঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থার কর্তা জিএস ওয়ালিয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি বললেন, “ফুল সাপোর্ট দিলাম। আমরা ফাটিয়ে দেব।” কাকে সাপোর্ট দিলেন? শ্রীনিবাসন-বিরোধী জোটকে নিশ্চয়ই? সম্পূর্ণ অবাক করে দিয়ে ওয়ালিয়া বললেন, “না। মিস্টার শ্রীনিবাসনকে।” সে কী? আপনাদের সর্বময় কর্তা আইএস বিন্দ্রা যে কাল প্রকাশ্যে বলেছেন শ্রীনির পদত্যাগ করা উচিত? ওয়ালিয়া বলেন, “ওটা মিস্টার বিন্দ্রার ব্যক্তিগত অভিমত। পঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থা তাঁর সঙ্গে একমত নয়।” গত পরশু শোনা গিয়েছিল ওড়িশা বিপক্ষে। এ দিন শোনা গেল তারাও পক্ষে। ওড়িশার রঞ্জীব বিসওয়ালকে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভারতীয় টিমের ম্যানেজার করে দেওয়া হয়েছে। অসম, তারাও নাকি নৈশভোজে জানিয়ে গিয়েছে, সঙ্গে আছে। ঠিক কী পেয়েছে এখনও জানা যায়নি। বাংলা বাংলা কী করল? অরুণ জেটলি তো প্রথম জগমোহন ডালমিয়াকেই ফোন করেছিলেন বিদ্রোহ সফল করতে। গত পরশু রাজীব শুক্লও তৎপরতার সঙ্গে গিয়েছিলেন দশ নম্বর আলিপুর রোডে। তা ডালমিয়া বললেন, “অনেক কিছুই তো ক্রাইম। আমাদের কাছ থেকে শরদ পওয়ার যে ভাবে ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচ নিয়ে চলে গিয়েছিলেন সেটা কী ছিল? আমি তো ওই স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি। সে দিন কেন এ ভাবে রুখে দাঁড়ানো হয়নি?” সারমর্ম পাওয়া গেল: পওয়ার যে জোটের প্রধান মুখ, সেখানে ডালমিয়া যাবেন না। অর্থাৎ শ্রীনি বনাম পওয়ারে তিনি শ্রীনির দিকে।
এই বার বোঝা গেল সিনিয়র বোর্ড সদস্য কেন বলছিলেন, “তাজ বেঙ্গলে কালকের ডিনারের মতো খোশমেজাজে মিস্টার শ্রীনিবাসনকে আমরা খুব কম দেখেছি। বেশ কিছুক্ষণ মদ্যপানের পর আবার উনি আরাম করে পাইপ ধরালেন।” এত বছর দেখছি ওঁকে। কখনও পাইপ খেতে দেখিনি। আসলে গত ক’দিনের সঙ্কটের পর এই যে সবাই ফ্যামিলির মতো চারপাশে দাঁড়িয়ে গেল, সেটায় তিনি অভিভূত। বিকেলে যখন সাংবাদিক সম্মেলন করছেন শ্রীনিবাসন, তখন আশেপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়েছিলেন কিছু বোর্ড সদস্য। এখানেও অরুণ জেটলি পরিচালিত ডিডিসিএ-র এক কর্তাকে দেখা গেল বৈঠক পরিচালনা করতে।
ইডেন পিচ যেমন অত্যাশ্চর্য ভাবে আটকে আটকে যাওয়া ক্লে কোর্ট থেকে তীব্র গতিশীল ঘাসের কোর্ট হয়ে গেল, এটাও যেন তেমন। এই যে এত কথা হল বিদ্রোহ, তা হলে বিদ্রোহী কারা ছিল? এই যারা সামনে দাঁড়িয়ে আছে, এদেরও তো অনেকের নাম সেই তালিকায় ছিল।
জানা গেল, সংখ্যাগরিষ্ঠতা জোগাড় করতে পারেননি বিদ্রোহীরা। কারও সাহসেও কুলোয়নি শ্রীনিকে গিয়ে সরাসরি বলার, অনেক হয়েছে এ বার আপনি যান। যা ওই তোড়ফোড় সবই ভেতরে ভেতরে। বিদ্রোহ ব্যর্থ হচ্ছে আন্দাজ পেয়েই সম্ভাব্য বিদ্রোহীরা ডিগবাজি খান। এদের প্রথম লক্ষ্য হয়, কোনও ভাবেই যেন শ্রীনিবাসন কুপিত হয় না পড়েন।
এই অবস্থায় শ্রীনিবাসন কঠিনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েন ভারতীয় মিডিয়ার সামনে। তাঁর দীর্ঘ প্রশাসনিক জীবনে কখনও এই রকম কোণঠাসা অবস্থা হয়েছে কি না সন্দেহ। যেখানে অভূতপূর্ব ভাবে জাতীয় মিডিয়া নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং কার স্টোরি হিট করবে না করবে একেবারেই না ভেবে একটা ইস্যুতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ক্রিকেট আক্রান্ত অতএব আপনি যান। তীব্র তর্কাতর্কি বাধে বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। ঠিক সাতাশ মিনিটে সম্মেলন থামিয়ে তিনি উঠে যাওয়ার আগে পর্যন্ত শ্রীনিবাসন যা যা বলেছেন, চূড়ান্ত বিস্ময়কর।
১) আমি কোনও ভুল করিনি। বরং আমি খুব ভাল কাজ করেছি।
২) গুরুনাথ সিএসকে-র কেউ নয়। ও ক্রিকেট উৎসাহী। ক্রিকেট ভালবাসে বলে ডাগআউটের কাছে গিয়েছিল।
৩) মিডিয়া অত্যন্ত অন্যায় ভাবে চাপ দিতে চাইছে। বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল অসহ্য।
৪) বোর্ড সদস্যদের মধ্যে মোটেও বিভাজন নেই।
৫) মিডিয়ার চাপের কাছে মাথা নত করে আমি আদৌ পদত্যাগ করব না।
রাতে মুম্বই থেকে ফোনে দিলীপ বেঙ্গসরকর বলছিলেন, “অবিশ্বাস্য অরাজকতা চলছে ভারতীয় ক্রিকেটে। টপ ভারতীয় ক্রিকেটাররা কেউ কিছু বলছে না এটা খুব আশ্চর্যের।” সদ্য ম্যানিলা থেকে ফেরা বেঙ্গসরকরকেও সকালে তাঁর বন্ধুবান্ধব বলেছেন শ্রীনি বোধহয় নিষ্কৃতি পেয়ে গেলেন। মিডিয়ার একার চাপ তিনি গ্রাহ্য করলেন না। আর বাকিদের তো সাহসেই কুলোল না।
মনে হল বেঙ্গসরকরকে কেউ জানায়নি স্পনসররা যে ক্রমেই টাকার ভাণ্ড নিয়ে সরতে শুরু করেছে। যদি তারা পুরোপুরি সরে যায়, তা হলে যে সব সদস্যরা ভর্তুকি পাওয়ার আনুগত্যে বিপদের সময় পাশে থাকল, তারাও পরে সরে যাবে। প্রাক্তন এক ভারতীয় ক্রিকেটার বলছিলেন, “যা খবর পাচ্ছি আজকের বিদ্রোহ সফল হল না। কিন্তু এটা বোধহয় থাকল। জনতার আওয়াজ আবার উঠবে।”
ভদ্রলোকের সঙ্গে একমত হওয়া ছাড়া উপায় নেই। রবিবারের মিডিয়া সম্মেলন যদি কোনও প্রতিবিম্ব হয়, শ্রীনির কেবল মুকুটটাই থাকল। মাঠে আইপিএল এই নিয়ে পরপর দু’বার পিছলে গেল। মাঠে এবং মাঠের বাইরে ব্যাপক অসম্মান হল এত সব ক্রিকেটঅতিথি আর জনতার সামনে। এর পরেও যে মুকুট মাথায় আঁকড়ে রাখা হল, সেটা অবশ্যই সোনার নয়, কাঁটার। |
|
|
|
|
|