জমির উপর দিয়ে কারখানার প্রয়োজনে বসানো হয়েছে জলের পাইপ। অথচ কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনও প্রতিশ্রুতি মতো টাকা বা চাকরি দেননি, এই অভিযোগে শনিবার রাত ৯টা থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত জামুড়িয়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কর্মী পরিবহনের বাস আটকে রেখে লালবাজারে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিক্ষোভ ওঠে। আগামী বুধবার কারখানা কর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দাদের মধ্যে আলোচনার দিন ঠিক হয়েছে।
ওই কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার সুনীত চক্রবর্তী জানান, তাঁরা এডিডিএ-র মাধ্যমে জল পান। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। তাই সংশ্লিষ্ট সব দফতরের অনুমোদন নিয়ে দরবারডাঙায় একটি নিজস্ব জলপ্রকল্প বানানোর পরিকল্পনা নেন তাঁরা। সেখান থেকে পাইপ লাইন বসিয়ে ৯ কিলোমিটার দূরে ওই কারখানায় জল নিয়ে আসা হবে বলে ঠিক করেন। সিদ্ধান্ত হয়, এই ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় যাদের জমির উপর দিয়ে পাইপ লাইন পাতা হবে, তাঁদের বাজার দরে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। পরে জলপ্রকল্পে কর্মীর প্রয়োজন হলে স্থানীয় বাসিন্দাদেরই নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই দরবারডাঙার ওই জলাধার নির্মাণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও টাকা পাননি জমি মালিকেরা। কারখানা সূত্রে খবর, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ দরবারডাঙা থেকে ১২ জন কর্মীকে নিয়ে বাসটি ফিরছিল। স্থানীয় বাসিন্দা প্রিয়তোষ দোয়াসী স্থানীয় ১০ জন বাসিন্দাকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসটিকে লালবাজারে নিয়ে যান। রাত ৯টা নাগাদ কর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পরেই জমি মালিকদের টাকা ও চাকরির দাবিতে বাসটিকে আটকে রাখেন তাঁরা। প্রিয়তোষবাবু জানান, দু’বছর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ জমির দাম এবং প্রয়োজন মতো চাকরিতে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি তাঁরা রাখেননি। তবে সুনীতবাবুর বক্তব্য, “এক এক জায়গায় এক এক রকম জমির দাম বলছেন মালিকেরা, যা মেনে নেওয়া অসম্ভব। আমরা প্রতিটি গ্রামের বাসিন্দাদের জানিয়েছি, তাঁদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করতে চাই। সেই মতো বাজার দর ডেকে জমির দাম দেওয়া হবে। সে কথা অনেকেই মানেননি। তার জেরে আমরা ৪ কিলোমিটারের বেশি রাস্তায় পাইপও বসাতে পারিনি। এর পরে চাকরি দিতে হলে কাজ করা অসম্ভব। আমরা ওঁদের সে কথা বার বার জানিয়েছি। তারপরেও প্রায় ১৬ ঘন্টা বাস আটকে রাখা হল। তবে স্থানীয় পুলিশের ভূমিকায় আমরা খুশি। তাঁরাই বাসিন্দাদের বুঝিয়ে বুধবার আলোচনার ব্যবস্থা করেছে।” পুলিশ জানায়, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। |