|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
আমাদের প্রিয় সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলাদেশ থেকে কলকাতা এসেছিলেন চিকিৎসা করাতে। ওঁর পায়ের হাড়ে ক্যানসার ধরা পড়েছিল। ডাক্তাররা বলেছিলেন, ডান পা’টা হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলতে হবে।
উনি সেই অবস্থাতেও রসিকতা করেছিলেন, বলেছিলেন এক পক্ষে মন্দ হবে না, আমার ডান পায়ের পাতাটা মশাদের বড় পছন্দ। এখন আর মশা বসতে পারবে না। চটি হারায়। হারাক গিয়া। তা ছাড়া ভিড়ের মধ্যে অনেক সময় কেউ পা মাড়ায়, ব্যথা পাই, এখন একটা পায়ে অন্তত ব্যথা লাগবে না...।
পা’টা বাদ গেল। দেখা করতে গেলাম। উনি বললেন, কী আশ্চর্য জানো, যে পা’টা এখন তোমাদের ধাপার মাঠে, সেই পায়ে পিঁপড়ে ধরেছে, আমি জ্বালা অনুভব করি, মাঝে মাঝেই খুব চুলকায়, পায়ের গোড়ালির পুরনো ব্যথাটাও চাগাড় দেয়। কিছুই হারায় না, বুঝলা? তোমার মহাবিশ্বে কভু হারায় নাকো কিছু। হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
যাহা কিছু সব আছে আছে আছে। ডাক্তার আমাকে ক’টা পায়ের ব্যায়াম শিখিয়ে দিয়েছিল। অদৃশ্য পায়েরও ব্যায়ামটা করে যাই। রিলিফ পাই, কিন্তু পিঁপড়ের কামড়টার সুরাহা করতে পারছি না ভাই, ক্রমাগত কামড়ে যাচ্ছে।
আজকে আমাদের সাদা কাক প্রয়াত মহান সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস নন। সুখীদা। ১৯৭২ সালের আগে ওর নাম ছিল সুখেন। তখন বিপক্ষ দলের লোকজনকে পাড়া ছাড়ানোর পালা চলছে। এক জন নেতার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল সুখেন। সেই গুরুদায়িত্বে, বোমা বাঁধতে গিয়ে দুটো হাতই উড়ে যায় ওর। সুখেন পাল হয়ে গেল হাতকাটা সুখেন। সে বার শীতকালে দেখলাম ফুলশার্ট পরেছে সুখেনদা, দুটো হাত লতপত করছে। বলেছিলাম, হাফশার্ট পরলেই তো পারতে! সুখেনদা বলেছিল, হাতে ঠান্ডা লাগে না?
হাতকাটা সুখেন বলতে যে ছবিটা আমাদের মনে ভাসে, সুখেনদা তেমন ছিল না কখনও। কোনও রকম জমিজমার দালালি, মদের ব্যবসা, গাঁজা পাচার কিছুই করেনি। সাতাত্তরের পালা-বদলের পর ওকে লাল আবিরে রাঙা দেখেছি। বলতে শুনেছি, আমার হাতে একটু আবির দাও, আমিও মাখব। নিজেই ঠোঙার ভিতরে আধখানা হাত ডুবিয়ে পাশের কাউকে আবিরে রাঙাতে গেলে পাশের কমরেড ‘ঠিক আছে ঠিক আছে’ বলে সরে গেছে। মিছিলেও দেখেছি স্লোগানের সঙ্গে ওর আধখানা হাত উঠে যেত। রাস্তার মিটিং-এ কোনও গা-গরম বক্তৃতার সময় ওর দুই কনুইয়ের তলার বিক্ষত অমসৃণ মাংসপিণ্ড দুটি পরস্পরকে স্পর্শ করত। আসলে হাততালি দিত।
সুখেনদার হাত ছিল না বলে পোস্টার মারতে পারত না, ঝান্ডা নাড়তে পারত না, ভোটের কাগজও বিলি করতে পারত না, আবার তাত্ত্বিকও তো নয় যে, বিপ্লবের স্তর, প্রগতিশীল বুর্জোয়া, সোশাল ডেমোক্র্যাট এ সব বকবে। ট্রটস্কি-চমস্কি আওড়াত না। ফলে পার্টি থেকে পাত্তা পেত না তেমন। পার্টির সুসময় এল, ধনধান্যপুষ্প সোফায় ভরে যেতে লাগল, তোফা থাকতে লাগল নেতাগণ। যাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে হাত দু’টো খোয়াতে হয়েছিল, তাঁর গাড়ি হল, ভুঁড়ি হল, সুখেনদাকে আর পার্টি অফিসে দেখা যেত না। ‘লুথেরান’ নামে একটা এনজিও ফুটপাতের বাচ্চাদের পড়ানোর প্রোজেক্ট করেছিল, সুখেনদা ওখানে পড়াত। কাটা হাতের গায়ে স্ব-উদ্ভাবিত ক্লিপে চক আটকানো যেত, কিংবা পেনসিল। পড়া-পারা বাচ্চাদের দুহাতে আদর করত, আশীর্বাদও। বলত, সুখ এখন আমার হাতের মুঠোয়। এক্কেবারে মুঠোর মধ্যে। বলত, এখন থেকে আমি অন্য লোক। আমার নাম সুখেন নয়, সুখী।
কেন জানি না লুথেরান পশ্চিমবঙ্গে ওদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। ফুটপাতের ইস্কুল উঠে যায়। একটা স্টেশনারি দোকান করে, সাইনবোর্ড: সুখীর দোকান। ওর বেকার ভাইপো সঙ্গে ছিল। ভাইপোটি চাকরি পেয়ে গেলে ওটা মাদার ডেয়ারির দুধের দোকানে পরিবর্তিত হয়। একটা ট্রে’তে টাকাপয়সা থাকে। মানুষ ওখানে টাকা রাখে, অন্য ট্রে থেকে দুধ তুলে নিয়ে যায়। এখনও চলছে, সুখীর দোকান। দু’প্যাকেট দুধ যদি ছাব্বিশ টাকা হয়, আপনি ছোট ট্রে’তে তিরিশ দেবেন, চার টাকা তুলে নেবেন, আর বড় ট্রে থেকে দুটো ডাব্ল-টোন্ড তুলে নেবেন। সুখীদা বলে, আমায় কেউ ঠকায় না।
ইরাক যুদ্ধের সময় বলেছিল, যে শার্টটা পরে আছি সেটা ‘বুশ শার্ট’। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মাননীয় বুশ সাহেব অনেককে আমার মতো হাত-কাটা করে দিয়েছে। অনেকের হাতই এখন লতপত করে। এ দেশেও। কিন্তু আমি বেশ বুঝতে পারছি, আমার হাত গজাচ্ছে।
মিউনিসিপালিটিতে চাকরি পাওয়া একটি ছেলেকে এক দিন বলেছিল শুনলাম, মিউটেশন করাতে গেলে খুব ঘুষ নিচ্ছিস, কানটা চেপে ধরে এমন একটা থাবড়া মারব না...।
সে দিন দুধ কিনতে গেছি, সুখীদা বলল হাত দুটো বড্ড নিশপিশ করছে রে...। আবার পেটো বাঁধতে চাইছে। যেখানে খুশি ছুড়ব। কী হচ্ছে মাইরি? অপরাধী কোর্টকে জ্ঞান দিচ্ছে। আর তোর মতো আঁতেলগুলোকে ঠাটিয়ে চড়াতে ইচ্ছে করছে। সব চুপচাপ? মুখে কুলুপ? চোখে ফেট্টি? দ্যাখ আমার হাত দুটো দ্যাখ? —দ্যাখ আঙুলগুলো কী রকম কিড়মিড় কচ্ছে...। দেখি, কনুইয়ের তলার অমসৃণ বিক্ষত কালো মাংসপিণ্ড কাঁপছে, স্পন্দিত হচ্ছে।
বলল, মারব এখানে— লাশ পড়বে শ্মশানে। |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• জন্মাষ্টমীর সকালে গোপালঠাকুরকে গদগদ হয়ে দুধ-দই মাখিয়ে স্নান করাচ্ছেন।
আদুরে কুকুর কোত্থেকে হাঁহাঁ ছুটে এসে, ঠাকুরকে প্রাণপণ চেটে চান করিয়ে দিল! |
|
|
• ওই খালি ট্যাক্সি! রাস্তার মাঝখানে গিয়ে হাত পা ছুড়ে
থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। স্পিড তুলে বেরিয়ে গেল।
তখন দেখলেন, ভেতরে খুব বেঁটে প্যাসেঞ্জার বসে
আপনাকে দুর্বাসার দৃষ্টিতে দেখছেন। |
• রোজ স্কাইস্ক্র্যাপারগুলোর ব্যালকনিতে আবছা মানুষগুলোর
দিকে তাকান আর অভিশাপ দেন, ব্যাটারা বেশ সবসুদ্ধ
ভেঙে পড়ে! এক দিন জোর অভিশাপ দিতেই, একটা
ব্যালকনি ৩৪ তলা থেকে পড়ল, আপনারই ওপর! |
|
|
|
|
• ধর্মগুরু থেকে রাষ্ট্রগুরু, নেতা থেকে ত্রাতা সবার চটি থেকে চরণামৃত মাথায় ও মিউজিয়ামে তোলা যে ভারতবাসীর জন্মগত অধিকার, তাঁদেরই চোখের সামনে নিলামে ‘অবিক্রীত’ রইল দুটি স্লাইডে দু’ফোঁটা মহাসেলেব্রিটি রক্ত, যার মালিক মহাত্মা গাঁধী। লন্ডনে নিলামে উঠেছিল বাপু-ব্যবহৃত ৩৬টি সামগ্রী, দু’ফোঁটা রক্তের শুরুর দর ১০০০০ পাউন্ড রেখে কর্তারা ভেবেছিলেন, ও তো নস্যি, বলে-বলে রেকর্ড দরে ড্যাংড্যাং বিকোবে। অথচ ক্রেতারা অপ্রত্যাশিত ৭০০০-এই ক্ষান্ত, বরং গাঁধীজির জপমালা, চটিঘটিবাটি, উইল, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি আর নিজ হাতে বোনা খাদির চাদরের দর উঠল এক কাঁড়ি। জাতির জনকের রক্ত কিনবার লোক নেই দেখে নিলাম-কর্তারা হতবাক ও দুঃখিত। মহান ভারতের রূপকারদের একুশ শতকে লোকে ভুলতে বসেছে, এ জিনিস তারই অশনি সংকেত কি না, উঠেছে প্রশ্নও। হাওয়া বুঝে সুভাষ-প্রেমীরা: হত নেতাজির রক্ত, দেখতে। এক দিন স্বাধীনতার প্রমিসে রক্ত চেয়েছিলেন, আজ পারলে লাখো চেলা কোটি পাউন্ডে রক্ত কিনে দেখিয়ে দিত। তন্নিষ্ঠ গাঁধীবাদীর মুখে তবু হাসি। অহিংসা-মসিহা যিনি, সব রকম রক্তপাতের বিরোধী, তাঁর রক্ত বিক্রি না হওয়া আখেরে তাঁর যাপিত জীবন-দর্শনকেই আরও এক বার প্রতিষ্ঠা দিল। আর এই মার্কেটসর্বস্ব যুগে গাঁধীর রক্ত বাজারি পণ্য হল না, সে পোয়েটিক জাস্টিস-ও রইল!
• ফ্রান্সে হচ্ছে নয়া আইন, ল্যাপটপ-স্মার্টফোনে ট্যাক্স বসিয়ে সে টাকায় লেখক, পরিচালক ও গাইয়ে-বাজিয়েদের ‘ক্ষতিপূরণ’ দেওয়া হবে। শিল্পী-কলমচিদের ট্যাঁক ভারী করতে হঠাৎ এই যন্ত্রগুলির ওপর কর চড়ানোর সরকারি সাফাই: ‘ফ্রি কালচার’ জমানায় প্রযুক্তির রমরমায় লেখক-শিল্পীদের রোজগার রয়্যালটি দুই-ই কমছে, লোকে বই-গান-ছবি মুফতে ডাউনলোড করছে ফোন-কম্পিউটার থেকেই। সনাতন ফরাসি সংস্কৃতির প্রাণভোমরা শিল্পীরাই ই-যুগে উপেক্ষিত। তাই দামি যন্ত্রে ট্যাক্স বসিয়ে তা দিয়ে শিল্পীদের মানভঞ্জন। বিকল্প পথে শিল্পী-সম্মাননা, ভাল কথা। চলতি প্রযুক্তিনির্ভর বাহ্যাড়ম্বরকে ঠেস দিয়ে শিল্পী-মনের অন্তর্জগৎ-সাধনাকে সম্মান জানানোও দারুণ। তবু প্রশ্ন: কবি-গায়ক-ছবিকরিয়ে মাত্রেই ভাবুক ও টেকনোলজি-ক্যাবলা, আর ঝাঁ-চকচকে আইফোনপ্যাডধারী মানেই কবিতা-না-বোঝা স্মার্ট অন্তঃসারশূন্য, এই উদ্ভট বাইনারিকেই এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা দিচ্ছে না কি? আজ বহু লেখক লেখেন কম্পিউটারে, চিত্র ও সঙ্গীত-পরিচালকদের কাজও বহুলাংশে যন্ত্রনির্ভর। সেই যন্ত্রের উপরে ট্যাক্স চাপিয়ে আবার সে টাকাই শিল্পীর হাতে ধরানো চরম হাস্যকর। |
|
|
|
৮০০
মিনিটে যত রাউন্ড গুলি ছোটে
রাজ্য
পুলিশের কাউন্টার ইনসার্জেন্সি
ফোর্স-এর ব্যবহারের জন্য সদ্য কেনা
এমপি-৫ সাব-মেশিনগানে |
১৩.৭
ভারতে বর্তমানে ইন্টারনেট
ব্যবহারকারীর সংখ্যা যত কোটি
২২৫০
সলমন খানের এনজিও ‘বিইং হিউম্যান’
মহারাষ্ট্রের খরাপীড়িত পাঁচটি জেলায়
যতগুলো
ওয়াটার ট্যাঙ্কার দান করল
৪৭৫২০
যত পাতা রবীন্দ্র-গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি আছে
সদ্য চালু হওয়া রবীন্দ্র-রচনার সম্পূর্ণ
বৈদ্যুতিন সম্ভার ‘বিচিত্রা’য় |
৩০০০০০০০০
কলকাতা শহরে রোজ গড়ে যত
গ্যালন জল সরবরাহ করে কলকাতা
পুরসভা। এতে দৈনিক খরচ হয়
প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা |
৭৭
দেশের যত শতাংশ মানুষ দৈনিক
কুড়ি টাকাও খরচ করতে অক্ষম বলে
জানা গেল কেন্দ্রীয় সমীক্ষায়
|
৮৬২৯২০০০০০০
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বর্ধিত
৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিতে সরকারের
বার্ষিক যত টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে
|
১৪০০০০০
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-এর বিদায়ী
কোচ স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন-এর
ফুটবল কোচিং থেকে অবসর-প্রসঙ্গ
নিয়ে
টুইটারে যত টুইট করা হয়েছে |
২
বিশ্বের তাপমাত্রা আর যত ডিগ্রি
সেলসিয়াস বাড়লেই পৃথিবীর অর্ধেকেরও
বেশি উদ্ভিদ ও এক-তৃতীয়াংশ প্রাণীর
অবলুপ্তি ঘটবে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
বুদ্ধিজীবী পাঠাও সিভি। জানাও তোমার কী নাম।
তোমায় দেব বসন ভূষণ... তাঁবেদারির ইনাম।
তার বদলে তোমরা দেবে, যেটুকু সাধ্য তা...
সকল রকম তুঘলকিতে চূড়ান্ত বাধ্যতা। |
অবশেষে একমত সারদা ও সরকার
তদন্ত কমপ্লিট... আর নেই দরকার।
বলে দিক কমিশন...
কোটি প্রতারিত জন,
দুধ তো বেড়ালে খেল... পড়ে থাকা সর... কার? |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
সেরা পানীয় সন্ন্যাসীস্থানীয়! ট্যাগ-লাইন নাই! |
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন পিনাকী সেন, গড়িয়া |
|
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|