গণ্ডি বাড়ছে আধার কার্ডের।
শুধুই নাগরিক পরচিয়পত্র বা ভর্তুকির টাকা পাওয়ার মাধ্যম নয়, চটজলদি নতুন মোবাইল ফোন সংযোগও মিলতে পারে আধার কার্ডের মাধ্যমে। পাইলট প্রকল্প সফল হয়েছে দাবি করে, অনিল অম্বানী গোষ্ঠীর রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্সের (আর-কম) দাবি, কেন্দ্র ছাড়পত্র দিলে তারা আধার কার্ডে মাধ্যমে দেশের যে-কোনও প্রান্তেই সেই ব্যবস্থা চালু করতে সক্ষম।
মোবাইল ফোনের নতুন সংযোগ নেওয়ার সময়ে পরিচিতি ও ঠিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র দিতে হয় গ্রাহকদের। অনেক ক্ষেত্রেই তা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদের। যদি বা তা ঠিক থাকে, তা হলেও জমা দেওয়ার পরে সেই সব নথিপত্র যাচাই করতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে। তারপর গ্রাহকের নম্বর চালু হয়।
আধার কার্ডের মাধ্যমে বিপণিতে গেলেই দ্রুত সিম দিয়ে কী ভাবে পরিষেবা চালু করে দেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখতেই কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর গত বছর ভোডাফোন, আর-কম এবং এয়ারটেলকে দেশের তিন জায়গায় পাইলট প্রকল্প চালু করার নির্দেশ দেয়। ভর্তুকির টাকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পের অধীনে আধার কার্ড প্রকল্প হাতে নিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার পরিচয়পত্র বা ভর্তুকির টাকা প্রদানের সীমা ছাড়িয়ে আধার কার্ডকে অন্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও কতটা কাজে লাগানো যায়, তা যাচাই করতেই টেলিকম দফতরের এই উদ্যোগ। |
ভোডাফোন অন্ধ্রপ্রদেশে এবং এয়ারটেল ও আর-কম দিল্লিতে এই পাইলট প্রকল্পের বরাত পায়। কী ভাবে হবে গোটা প্রক্রিয়াটি? সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গ্রাহক আধার কার্ড নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিপণিতে গিয়ে নতুন সিম-এর জন্য আবেদন জানাবেন। এ জন্য তাঁকে আলাদা করে কোনও পরিচয়পত্র বা ঠিকানার প্রমাণ নিতে হবে না। ওই বিপণির সঙ্গে আধার কর্তৃপক্ষের মূল সার্ভারের যোগ থাকবে। গ্রাহকের আধার কার্ডের তথ্য সেই তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে তখনই মিলিয়ে দেখা হবে, গ্রাহকের বায়োমেট্রিক পরীক্ষাও হবে। আধারের মূল তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে সব কিছু মিলে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সিম দেওয়া হবে এবং তা চালু হয়ে যাবে। আলাদা করে তথ্য যাচাইয়ের যেমন প্রয়োজন হবে না, তেমনই সিম চালু হতে বাড়তি সময়ও লাগবে না। আর-কম জানিয়েছে, পাইলট প্রকল্প সফল হওয়ায় তারা দেশ জুড়েই এই পরিষেবা এখন চালু করতে সক্ষম। এবং শুধু সংস্থার নিজস্ব বিপণিই নয়, সমস্ত বহু ব্র্যান্ডের বিপণিতেও তারা এই পরিষেবা দিতে পারবে। টেলিকম দফতরের নির্দেশিকা পেলেই এই ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী সংস্থাটি। এ দিকে, সংবাদসংস্থার খবর, অভিন্ন পরিচয়পত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বা ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) আধার ভিত্তিক তিনটি নতুন পরিষেবা শুক্রবার চালু করেছে নয়াদিল্লিতে। এগুলি হল বৈদ্যুতিন কেওয়াইসি, এককালীন পিন ব্যবস্থায় পরিচিতি দাখিল করা এবং চোখের মণি ভিত্তিক পরিচিতি। বৈদ্যুতিন বা ই-কেওয়াইসি ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরিষেবায় বৈদ্যুতিন প্রতিলিপির মাধ্যমে আধার কার্ড ব্যবহার করা যাবে। অপব্যবহার ঠেকাতে অবশ্য তা মিলবে সীমিত সময়ের জন্য। দ্বিতীয়টিতে মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে যখন, যেখানে প্রয়োজন আধার ব্যবস্থায় নিজের পরিচয়পত্র দাখিল করা যাবে। তৃতীয়টিতে আধার কার্ড নম্বরের ভিত্তিতে নিজের বৈধ পরিচিতি প্রমাণ করা যাবে। পাশাপাশি, নাম নথিভুক্ত করার জন্য নয়াদিল্লিতে শুক্রবার ৩০০টি স্থায়ী আধার কেন্দ্র গড়ার কথা ঘোষণা করলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই কেন্দ্রগুলিতে পরিচয়পত্রে প্রয়োজনে রদবদলও করা যাবে। এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ইউআইডিএআই চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানি ও যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। |