|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
ফাঁকি দিয়া টহলদারি |
বইপোকা |
বইপাড়া ভাবিতে পারে, কিন্তু সেই ভাবনাকে কার্যে রূপায়িত করিলে বুঝা যায় ভাবনায় কত গলদ ছিল। তাহা না হইলে টইপাড়ায় টহলদারির স্পর্ধা যে গ্রন্থের তাহাতে গ্রন্থের প্রচ্ছদের চিত্র এত অযত্নে, বিকৃত বর্ণে এবং বর্ণহীনতায় মুদ্রিত হয় কী করিয়া? বিশ্বভারতী কী প্রকারে সত্যজিৎ রায়ের প্রচ্ছদের রং বদলাইয়া দিয়াছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে শুভেন্দু দাশমুন্সীর টইপাড়ায় টহলদারি (সপ্তর্ষি প্রকাশন), ভালই করিয়াছে, কিন্তু টহলদারের গ্রন্থে যে-সকল প্রচ্ছদ নমুনা হিসাবে ছাপা হইয়াছে সে-সকল ত প্রচ্ছদের ইতিহাসটিকে যথেষ্ট বিকৃত করিতেছে। ক্ষীরের পুতুল-এর প্রচ্ছদে মূল রং অনুপস্থিত, দুরন্ত দুপুর-এ রেখাঙ্কনটি প্রায় বুঝাই যাইতেছে না, নালক-এর প্রচ্ছদ যারপরনাই অস্পষ্ট। এমনকী সত্যজিতের প্রথম প্রচ্ছদ এম সি সরকার অ্যান্ড সন্স-সংস্করণের পাগ্লা দাশু-র প্রতিলিপিটি নিতান্ত করুণ সাদা-কালোয় ছাপা! অথচ এ হেন গ্রন্থের একটিমাত্র আর্টপ্লেটটি ব্যবহৃত হইয়াছে শিল্পী প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা নানা রকম ঘনাদার চিত্র তুলিয়া ধরিতে। গ্রন্থনির্মাণে কোনটির কতটা গুরুত্ব সেই বোধ অদ্যাপি বঙ্গীয় বইপাড়ায় জাগিল না, ইহা দুঃখের। কিন্তু তাহা অপেক্ষাও বড় দুঃখ এই যে, যে সকল তরুণ প্রকাশনার স্বপ্ন এবং দুঃসাহস বঙ্গীয় গ্রন্থমহলে আশা জাগাইতেছিল তাহারাও মধ্যে মধ্যে প্রকাশনা-বিষয়ে যৎপরোনাস্তি কৃপণের বামমুঠি হইয়া উঠিতেছে। অথচ চিত্রে এমন মাজা-ভাঙা গ্রন্থটি সম্পর্কেই প্রকাশকের গালভরা কথা বলিতেছে, ‘ছবির সঙ্গে পাঠ্যবিষয়কে জুড়ে নিয়ে নতুন রকম এক নিরীক্ষা করতে চাওয়াও হয়েছে এখানে।’ বঙ্গীয় গ্রন্থের প্রচ্ছদ-অলংকরণ-লেখাঙ্কন লইয়া চর্চাটি মহৎ কর্ম, তাহা ফাঁকি দিয়া হয় কি? |
|
|
|
|
|