বৃথা উদ্যোগ
ছাউনি বেহাত
ধিকাংশ নতুন যাত্রীছাউনিরই বেহাল দশা। কিন্তু তার পরেও নতুন করে যাত্রীছাউনি তৈরির জন্য দরপত্র ডাকতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
শহর জুড়ে অনেকগুলি যাত্রীছাউনি তৈরি করেছিল পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ যাত্রীছাউনি চলে গিয়েছে ফুটপাথবাসী ও হকারদের দখলে। হচ্ছে না নিয়মতো রক্ষণাবেক্ষণও। এর পরেও নতুন যাত্রীছাউনির জন্য দরপত্র ডাকতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। প্রশ্ন উঠেছে, রক্ষণাবেক্ষণের খোঁজ না নিয়ে কী ভাবে বিজ্ঞাপন সংস্থাকে নতুন যাত্রীছাউনি তৈরির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১০-’১১-এ কলকাতার সৌন্দর্যায়নের জন্য নতুন ২৯১টি যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হয়। তৈরি করে নানা বিজ্ঞাপন সংস্থা। স্থির হয়, ছাউনিগুলিকে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করবে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও থাকবে ওই সংস্থাগুলির হাতে। ছাউনিপিছু প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়।

মার্লিন পার্ক

বালিগঞ্জ ফাঁড়ি
কিন্তু অভিযোগ, এর মধ্যে অনেক জায়গাতেই বিজ্ঞাপন সংস্থার হোর্ডিং চুরি গিয়েছে। কোথাও ছাউনির মেঝের টাইলস ফেটে গিয়েছে। কোথাও আবার ছাউনিগুলি ফুটপাথবাসী বা হকারদের দখলে চলে গিয়েছে।
মৌলালি মোড় থেকে সিআইটি রোডের দিকে কিছুটা এগোলেই পর পর দু’টি নতুন বাসছাউনি। যাত্রীর বদলে বাসনপত্র নিয়ে চলছে রান্না। ডাঁই করা বিছানা। আবার এস এন ব্যানার্জি রোডের উপর পুরসভার মেন গেটের পাশের ছাউনিটি চলে গিয়েছে হকারদের দখলে। পাশের খাবারের দোকানের বিক্রেতারা যাত্রী সিটগুলিতে খদ্দেরদের বসতে দেন। আবার অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে যোগাযোগ ভবনের সামনে কোনও বাসস্টপ নেই। কিন্তু সেখানে যাত্রীছাউনি তৈরি হয়েছে। সেটি আবার রেলিংয়ের আড়ালে। ফলে যাত্রীদের রাস্তার উপরেই দাঁড়াতে হয়। মহাজাতি সদনের উল্টো দিকের যাত্রীছাউনির সিটগুলি চুরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। গরমের দুপুরে সেখানে ফুটপাথবাসীরা বিশ্রাম নেন। যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন।

মেয়ো রোড

যোগাযোগ ভবন

মহাজাতি সদন
পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
মেয়র পারিষদ (পার্ক, উদ্যান এবং বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, “আমাদের কাছে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। আমরা ওই সংস্থাগুলিকে চিঠি দিতেও শুরু করেছি। এর পরেও যদি ছাউনিগুলির ঠিকমতো দেখভাল না হয়, তবে আবার দরপত্র ডেকে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।” পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর সূত্রের খবর, আগের বারে যে ক’টি ছাউনি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলি সবই দক্ষিণ কিংবা মধ্য কলকাতায়। এ বার নতুন করে উত্তর কলকাতায় যাত্রীছাউনি তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দরপত্র ডেকে বিজ্ঞাপন সংস্থাকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে।

শোভাবাজার

মৌলালি

সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ
প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে আগের যাত্রীছাউনিগুলিরই ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না, সেখানে নতুন যাত্রীছাউনি তৈরির জন্য দরপত্র কেন ডাকা হচ্ছে? পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার কাছে ১০০টি নতুন যাত্রীছাউনি তৈরির অর্থ নেই। তাই দরপত্র ডেকে বিজ্ঞাপন সংস্থাকে ছাউনিগুলি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে দেখা হবে যাতে ছাউনিগুলির ঠিকমতো দেখভাল হয়। তাই পরিদর্শকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর সূত্রে খবর।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য ও স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.