মৌমাছির হানায় বেঘোরে প্রাণ হারালেন তারাপদ
ছর বারোর সন্তুরই প্রথম চোখে পড়ে ভয়ঙ্কর দৃশ্যটা।
একটা লোক এলোমেলো সাইকেল চালিয়ে আসছে। সর্বাঙ্গে ভিনভিন করছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি। চেনাই যাচ্ছে না মানুষটাকে। চিৎকার জুড়ে দেয় সন্তু। ছুটে আসেন মা বুল্টি মুখোপাধ্যায়। দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারান ওই মহিলা। গ্রামের লোক মৌমাছি তাড়িয়ে দেখে, ঝাঁকের ভিতরে ছিলেন বছর সাতান্নর তারাপদ সেন। মারা গিয়েছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের চাঁদপুর গ্রামে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাস ছ’য়েক ধরে পাহাড়ি মৌমাছির কয়েকটি চাক হয়েছে এলাকায়। তারা মাঝে মধ্যেই আক্রমণ শানাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি গরু-ছাগল মারা গিয়েছে মৌমাছির পালের হামলায়। তবে মানুষের মৃত্যু এই প্রথম। বন দফতরের সাহায্য চেয়েছেন সকলে।
গ্রামবাসীরা মশাল জ্বালিয়ে মৌমাছি তাড়াবার চেষ্টা করেন। কিন্তু মৌমাছিরা তেড়ে আসে। বন দফতরের আরামবাগ শাখার রেঞ্জ অফিসার দিব্যেন্দু রাউত বলেন, “মৌমাছির ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারীদের আনা যায় কিনা, তার খোঁজ নিচ্ছি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাপদবাবু বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিমি দূরে কাঁটাপুকুরে একটি সাইকেলের দোকানে কাজ করতেন। বেলা ২টো নাগাদ বাড়িতে খেতে আসছিলেন। তীব্র গরমে ক্লান্ত হয়ে গ্রামের কাছেই একটি বটগাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সে সময়ে ওই গাছেই চাক থেকে মৌমাছিরা বেরিয়ে হামলা করে তারাপদবাবুকে।
গ্রামবাসী সন্দীপ ঘোষ, রিন্টু সিংহ, পীযূষ ঘোষ, সুশান্ত মুখোপাধ্যায়েরা জানান, মৌমাছি উড়ে যাওয়ার পরে তারাপদবাবুর কথা বলার শক্তি ছিল না। কোনও মতে জানান, বাড়ি ফেরার পথে বটগাছের তলায় বসে জিরোনোর সময়ে সেই গাছ থেকেই মৌমাছির দল কালো মেঘের মতো নেমে আসে। সন্তু সম্পর্কে তারাপদবাবুর ভাইপো। সে বলে, “জেঠুর পুরো মুখ ঢেকে গিয়েছিল মৌমাছির ঝাঁকে। বোধহয় কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না। আঁকাবাঁকা ভাবে সাইকেল চালাচ্ছিলেন।”
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা তারাপদবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মৌমাছির হুলের বিষেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।”
তারাপদবাবুর স্ত্রী ভারতীদেবী লোকের বাড়িতে কাজ করেন। দুই ছেলের বড় বসন্ত দিনমজুর। ছোট জয়ন্ত বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র। বসন্ত বলেন, “দুপুরে বাবা বাড়ি এলে আমাদের এক সঙ্গে খাওয়ার কথা ছিল। বাবার এমন আকস্মিক মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছিনা।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.