|
|
|
|
|
|
|
নবরূপে ‘থানা থেকে আসছি’ |
স্বপ্নের সন্ধানে |
একুশ পেরিয়ে বাইশে পা! হরিশ মুখার্জি রোডের ২৩ পল্লির যে বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘স্বপ্নসন্ধানী’র, আজও সেই ঠিকানা বদল হয়নি বটে, কিন্তু খ্যাতি ও পরিচিতির সীমানা ডালপালা মেলেছে বহু দূর। ’৯২-এ এই নাট্যগোষ্ঠীর মঞ্চযাত্রা শুরু মনোজ মিত্রের ‘আঁখিপল্লব’ দিয়ে। তার পরে একে একে ‘তারা তিন বোন’, ‘প্রথম পার্থ’, ‘প্রাচ্য’, ‘মাল্যবান’ থেকে শুরু করে হালফিলের ‘ম্যাকবেথ’-এর মতো আরও অনেক প্রযোজনা। ‘স্বপ্নসন্ধানী’র নাটকে বারে বারে ছায়া ফেলেছে রাজনৈতিক চিন্তা ও প্রেক্ষাপট। উঠে এসেছে সামাজিক বোধের কথা। ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘স্বপ্নসন্ধানী’ তিন দিনের নাট্যোৎসব আয়োজন করেছে অ্যাকাডেমি মঞ্চে। শুরু ২৭ মে, গৌতম হালদারের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ দিয়ে। এ বারের ‘শ্যামল সেন স্মৃতি সম্মান’ পাচ্ছেন গৌতম। ২৮ মে স্বপ্নসন্ধানী-রই প্রযোজনা ‘ম্যাকবেথ’ এবং শেষ দিন, ২৯ মে ওদের জন্মদিনে মঞ্চস্থ হচ্ছে নতুন নাটক ‘থানা থেকে আসছি’। |
|
এর মঞ্চায়ন আগেও হয়েছে। তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্রও, যাতে ইনস্পেক্টর তিনকড়ি হালদারের ভূমিকায় অভিনয় করেন উত্তমকুমার। ‘থানা থেকে আসছি’-র সেই মঞ্চায়ন পরিচালনা করেছিলেন ‘স্বপ্নসন্ধানী’র বর্তমান কর্ণধার কৌশিক সেনের বাবা শ্যামল সেন। ‘সে দিক থেকে এই প্রযোজনা বাবার প্রতি সম্মান জানানোও বটে’, বললেন কৌশিক। কে না ছিলেন ’৭৯-তে রামমোহন মঞ্চে প্রথম বারের সেই প্রযোজনায়! তৃপ্তি মিত্র, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, এন বিশ্বনাথন, কল্যাণী মণ্ডল ছাড়া শ্যামলবাবু নিজেও। এ বার অজিত গঙ্গোপাধ্যায় রচিত সেই নাটককে বর্তমান প্রেক্ষিতে ফেলেছেন কৌশিক। চলচ্চিত্রে মনোরমা সেনের চরিত্রে ছিলেন ছায়া দেবী। এ বার তাতে রেশমী সেন। ইনস্পেক্টর তিনকড়ি হালদারের চরিত্রে কাঞ্চন মল্লিক। ‘কাঞ্চনকে এখানে এক ভিন্নধর্মী ভূমিকায় দেখা যাবে, যাকে প্রথম দিকে নাটকের অন্য চরিত্রেরা ততটা গুরুত্ব না দিলেও পরে তার ভূমিকাই সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে’, বলছেন পরিচালক কৌশিক। এ নাট্যে তিনিও আছেন ব্যবসায়ী চন্দ্রধর সেনের চরিত্রে। আছেন সমসাময়িক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও! সঙ্গে মহড়ার ছবি।
|
বাণী ঠাকুর ৭৫ |
প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে মুগ্ধ হয়ে তাঁর গলায় রবীন্দ্রগান শুনছে বাঙালি। নিজেও আজ পঁচাত্তরে পা দিলেন ঠাকুর পরিবারের কন্যা বাণী ঠাকুর। ‘দক্ষিণী’তে রবীন্দ্রগান শেখা। আবার সুচিত্রা মিত্র জর্জ বিশ্বাস জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ গীতা সেন মায়া সেনের কাছেও শিখেছেন। তবে বন্ধু বা অভিভাবকের মতো তাঁকে সব সময় উদ্দীপিত করতেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ‘কিংশুক’ গোষ্ঠী-র রবীন্দ্রনৃত্যনাট্যে সংযুক্তা পাণিগ্রাহীর নাচের সঙ্গে গাইতেন হেমন্ত আর কণিকাই। ’৬২-তে বিয়ে হয় কল্যাণ রায়ের সঙ্গে, স্বামীর সমর্থন ও প্রেরণায় ’৬৪ থেকে রেকর্ড করা, রেডিয়োতে গাওয়া শুরু বাণীর। রঙিন দূরদর্শন-এর সূচনায় প্রথম রবীন্দ্রগান গেয়েছিলেন তিনিই। রবীন্দ্রসংগীতের শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিশ্বভারতী ও বেঙ্গল মিউজিক কলেজে। ছাত্রছাত্রীরা তাঁর সন্তানসম-- অনুশীলা, সুছন্দা, ভাস্বতী, সুজাতা, মৈত্রেয়ী, দীপঙ্কর এমন অনেককে নিয়েই তাঁর ‘কিংশুক’-পরিবার। রবীন্দ্রনাথে আজও তাঁর সজীব বিশ্বাস, বেঁচে থাকা তাঁরই গানে।
|
মেয়েদের নিয়ে |
রেগন হল-এর ‘ফাস্ট গার্লস’, ইংল্যান্ডের ছবি। দু’টি মেয়ে অ্যাথলিট, পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু দেশের স্বার্থে তারা কী ভাবে বন্ধু হয়ে ওঠে, তা নিয়েই ছবি। মেয়েদের ওপরে এমন আরও ছবি, তাদের জীবনের নানান অনুভূতি, সমাজে তাদের বসবাসের সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে। ১৮তম ইউরোপিয়ান ফেস্টিভ্যাল-এর বিষয়-ই: ‘সেলিব্রেটিং উইমেন’। বেলজিয়াম, বালগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, জার্মানি, এস্তোনিয়া, আয়ারল্যান্ড, গ্রিস, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, সাইপ্রাস, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবুর্গ, হাঙ্গারি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড, সুইডেনের ছবি এ-উৎসবে। নন্দনে ২৪ মে থেকে ১ জুন, উদ্যোগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে নন্দন আর সিনে সেন্ট্রাল। সঙ্গে ‘ফাস্ট গার্লস’-এর ছবি।
|
নিভৃত প্রাণের দেবতা |
তরুণ ইংরেজ কবি উইলফ্রেড আওয়েন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সের রণাঙ্গনে মারা যান। তাঁর দেহ যখন ঘরে এল, শোকাতুরা মা সুজান পুত্রের পকেটে পেলেন একটি ডায়েরি। তাতে গীতাঞ্জলির কবিতা যাবার দিনে এই কথাটি বলে যেন যাই...। এমত স্মৃতি আর গীতাঞ্জলির গান মিলিয়েই তাপস রায়ের গবেষণা ও পরিচালনায় তৈরি হয়েছে আলেখ্য ‘নিভৃত প্রাণের দেবতা’, সম্প্রতি তা অনুষ্ঠিত হল আই সি সি আর-এ। রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষকে মাথায় রেখেই এই অনুষ্ঠানের ভাবনা, পাঠ্যাংশে ছিল ১৩১৯-এ অজিতকুমার চক্রবর্তীকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিটিও। গানে ছিলেন মীরা গোপালকৃষ্ণন, শর্বরী ভট্টাচার্য, শান্তনু দত্ত, দেবাশিস চক্রবর্তী এবং পাঠে সুলেখা গঙ্গোপাধ্যায় ও সঞ্জয় দাশগুপ্ত। এ দিকে কথায় ও গানে গ্রন্থিত হয়েছে ‘মুকুলিত কিশলয়’। শিশু রবির বড় হয়ে ওঠা, ওঁর মনোজগৎ এবং সাহিত্য অঙ্গনে প্রবেশের কাহিনি বলা হয়েছে এই গ্রন্থনায়। কৃষ্ণা রায়ের সংকলন ও বিন্যাসে পাঠ করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং গানে শিঞ্জিনী আচার্য মজুমদার। গ্ল্যাম্ ‘এন’ গ্লিৎস্-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি হবে ২৪ মে রবীন্দ্রসদনে, সন্ধে ৬-৩০ মিনিটে।
|
জাদু-শিবির |
আগামী রবিবার বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহালয়ে পাওয়া যাবে এই প্রজন্মের হ্যারি পটার-হারমিওনেদের। এ দিন এখানে সোসাইটি অব অ্যামেচার ম্যাজিশিয়ানস আয়োজন করেছে এক দিনের জাদু কর্মশিবির। জাদুসম্রাট পি সি সরকারের জন্মশতবর্ষের এই অনুষ্ঠানে থাকছে জাদু প্রদর্শনও। আগামীর পি সি সরকার তৈরিই আমাদের লক্ষ্য, জানালেন ২০০৯-এ অর্ডার অব মার্লিন খেতাবজয়ী জাদুকর শ্যামলকুমার। দেখানো হবে জাদুসম্রাটের জনপ্রিয় খেলা এবং বড় পর্দায় ওঁর জীবনের কিছু দুর্লভ মুহূর্ত।
|
জাদুঘর জমজমাট |
বহু দিন পর ‘ছিনাথ বহুরূপী’দের খুঁজে পাওয়া গেল ভারতীয় সংগ্রহালয় চত্বরে। গত শনিবার ‘জাদুঘর জমজমাট’ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বহুরূপীরা। উপলক্ষ আন্তর্জাতিক সংগ্রহালয় দিবস। ফি বছর মানুষকে আরও জাদুঘরমুখী করে তোলার লক্ষ্যে দিনটি আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়মস। এসেছিল ছোটরা, এ বিষয়ে তাদের বললেন গৌতম সেনগুপ্ত, অনুপ মতিলাল, সুপ্রিয় চন্দ। মুদ্রা তৈরির কথা, অরিগামি-র সঙ্গে ছিল নানা অনুষ্ঠান। ও দিকে বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহালয়ে ‘ভার্চুয়াল ট্যুর’-এ পর্দায় দেখানো হল বিশ্বের নানা বিখ্যাত সংগ্রহশালার অন্দরমহল, সঙ্গে কুইজ। ছিল প্রদর্শবস্তু নিয়ে ‘ট্রেজার হান্ট’, ভিক্টোরিয়াতেও, তাতে হাতে গরম পুরস্কার। এ দিনের জন্য ছিল না প্রবেশমূল্য। জোকার গুরুসদয় সংগ্রহালয়ে অনুষ্ঠিত হল আলোচনাচক্র।
|
আন্তর্জাতিক |
তরুণ প্রজন্মের মনে ভারতীয় শিল্প-সংস্কৃতির রসবোধ জাগিয়ে তোলাই ওদের উদ্দেশ্য। পুরোদস্তুর কাজ শুরু ’৭৯-তে। স্পিক ম্যাকে এখন পরিচিত নাম। রয়েছে ওদের নিজস্ব পত্রিকা ‘দি আই’। এই প্রথম ওদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন, আজ শুরু জোকা আই আই এম-এ। উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত, কণ্ঠসংগীত, নাচের সঙ্গে থাকছে পুতুলনাট্য, বাউল, পট এবং অন্যান্য হস্তশিল্প। প্রায় ৩৮টি সাংস্কৃতিক বিষয়ে সাত দিন ধরে গুরুশিষ্য পরম্পরায় শিক্ষাদান। ভারতের নানা প্রান্ত, সার্কভুক্ত দেশ, আমেরিকা, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং নরওয়ে থেকেও যোগ দিচ্ছে প্রায় ১৮০০ শিক্ষার্থী। বিরজু মহারাজ, তীজন বাঈ, অজয় চক্রবর্তী, গিরিজাদেবী, শিবকুমার শর্মা, উল্লাস কাশলকর, রাশিদ খান-সহ প্রায় ২৫০ শিল্পী থাকবেন এখানে। সমাপ্তি ২৬ মে, এ শহরের ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান ভ্রমণের মধ্য দিয়ে।
|
অনিন্দিতা-র ‘চিঠি’ |
‘বিদ্রোহী’ কবির খ্যাতিতেই চাপা পড়ে গিয়েছিল কাজী নজরুল ইসলামের ‘শিশু সাহিত্যিক’ পরিচয়টি। নজরুল ছোট হয়েই স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন ছোটদের রাজ্যে। ছোটদের জন্য লেখা নজরুলের সেই সব জানা-অজানা ছড়া ও কবিতার সংকলন ‘চিঠি’-র সিডি-র (ভাবনা) আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ২৫ মে শনিবার বিকেল ৪টেয় নজরুল মঞ্চে। নজরুলের পৌত্রী অনিন্দিতা কাজীর কণ্ঠে শোনা যাবে এই ছড়া ও কবিতাগুলি। পেশায় শিক্ষিকা, সংবাদপাঠিকা, বাচিকশিল্পী, গায়িকা অনিন্দিতার এইটিই প্রথম একক সংকলন। দাদুর জন্মদিনে তাঁর এই শ্রদ্ধার্ঘ্য ছোটদের সঙ্গে ফিরিয়ে দেবে বড়দেরও শিশুবেলাকেও, আর খুঁজে পাওয়া যাবে অন্য নজরুলকে।
|
দেখা না-দেখা |
|
এক চিত্রকরের মতোই এক আলোকচিত্রীও অনেকটাই বেশি দেখতে পান তাঁর ‘নন-ফোটোগ্রাফিক’ বন্ধুদের চেয়ে। গাছের পাতার ফাঁকে চুঁইয়ে আসা আলো, ঘাসের রং, গাছের গুঁড়ি কেমন অন্য চেহারা পায় ক্যামেরায়। নবীন-প্রবীণ অনেক আলোকচিত্রীর বেশ কিছু ছবি নিয়ে এমনই এক প্রদর্শনী: ‘সিন আনসিন’। চলছে মায়া আর্ট স্পেস-এ (মোহনা, ৩২৯ শান্তিপল্লি, রাজডাঙা, কলকাতা-১০৭)। রয়েছে সত্যজিৎ রায় (সঙ্গের ছবিতে ‘রাজস্থান ১৯৭৩’), জ্যোতিষ চক্রবর্তীর তোলা ছবিও। চলবে ২৩ মে অবধি, প্রতিদিন ২-৮টা।
|
মুক্তবুদ্ধি |
রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮১৩-১৮৮৫) ডিরোজিয়ো-র কাছে দীক্ষা পেয়েছিলেন মুক্তবুদ্ধি চর্চার। খ্রিস্টতত্ত্বের অধ্যয়ন তাঁকে ধর্মশিক্ষকের পদে অভিষিক্ত করেছিল। সাম্যের আদর্শে প্রাণিত রেভারেন্ড হিন্দুর জাতিভেদ স্বীকার করেননি, মেনে নিতে পারেননি শাসক ইংরেজের বানানো সাদা-কালোর বৈষম্য। শিখেছিলেন গোটা দশেক ভাষা, চর্চা করেন ধর্ম, সাহিত্য, ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, বিজ্ঞান, শিক্ষা, বিশেষত নারীশিক্ষা নিয়েও। দ্বিভাষিক বঙ্গবিশ্বকোষের তিনিই প্রথম রচয়িতা। ‘হিন্দু খ্রিস্টান’ হয়েও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। এমন বর্ণময় বাঙালির দু’শো বছর পূর্তিতে ২৪ মে বিকেল ৫টায় থিয়জফিক্যাল সোসাইটি হলে সনৎকুমার নস্কর ও কস্তুরী মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়: দ্বিশতবর্ষের আলোয় সংকলন গ্রন্থটি প্রকাশ করবেন মালবিকা সরকার। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি আলোচনা সভাও হবে বইপ্রকাশের পর।
|
নাচনি |
নাচনিদের কাজ আগেও দেখেছি, শুনেছিও ওঁদের কথা, তবু এ বার নান্দীকার-এর নতুন নাটক যেহেতু ‘নাচনি’, ওঁদের একজনকে নিয়ে আসা হল, পারফরম্যান্স-টা খুঁটিয়ে দেখলাম। প্রস্তুতিপর্বের কথা বলছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। বয়সকে উড়িয়ে দিয়ে এই চিরনবীনা নাচ-গান-অভিনয়ে নিজেকে ঢেলে সাজাচ্ছেন, ‘কোরিয়োগ্রাফি-র পুরো ব্যাপারটাই বাবুয়া (সোহিনী সেনগুপ্ত) দেখভাল করছে। চরিত্রের সঙ্গে আইডেনটিফিকেশনটাই তো বড় ব্যাপার, কী জীবন নাচনিদের! তাঁদের রোজগারে রসিকদের সংসার চলে, অথচ সেখানে তাঁদের ঠাঁই মেলে না, মরার পর ডোম দড়ি দিয়ে ভাগাড়ে টেনে নিয়ে যায়।’ আর রুদ্রপ্রসাদ মনে করেন ‘এ নাটকটা একটা জার্নি আমাদের কাছে, এই সমাজে প্রান্তিক মেয়েদের পীড়িত অবস্থা নিয়ে।’ পুরুলিয়ার রুক্ষ পাথুরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রসিক উপন্যাসে কী ভাবে তুলে এনেছিলেন নাচনিদের সঙ্গে রসিকদের সমবেত শিল্প, প্রেম আর যন্ত্রণাময় জীবন, বলছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়: ‘যেন রাধাকৃষ্ণ ভাবে উপনীত গান, কথায়ও বৈষ্ণব পদাবলির ছাপ।’ সে উপন্যাস থেকেই নতুন প্রযোজনার নাট্যরূপ দিয়েছেন নির্দেশক পার্থপ্রতিম দেব, সঙ্গীতের দায়িত্বেও তিনি, বললেন ‘এত ব্যাপ্ত প্রোডাকশন নান্দীকার-ই পারে করতে।’ ২৪ মে অ্যাকাডেমিতে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় প্রথম অভিনয়।
|
|
|
|
|
বিস্মৃত শিল্পী |
বর্ধমানের দরিদ্র এক পরিবারে জন্ম ১৮৮৮-তে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে রুজির সন্ধানে আসতে হয়েছিল কলকাতায়, তারপর একই টানে কানপুরে। সেখানে তিনি র্যালি ব্রাদার্সের সামান্য কর্মচারী। সংগীতে অনুরাগ তাঁর আশৈশব কানপুরে পেলেন গুরুর সান্নিধ্য। আব্দুল হাই হাকিমের তালিমে তিনি অচিরেই হয়ে উঠলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এক কণ্ঠশিল্পী। ফিরলেন কলকাতায়, জার্মান রেকর্ড কোম্পানি ‘বেকা’ থেকে বেরোল তাঁর গাওয়া ১২টি গান। রাতারাতি খ্যাতি এল, সংযোগ হল গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে। এই পর্বে প্রায় চার দশক তাঁর চেয়ে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সম্ভবত আর কেউ ছিলেন না। বিভিন্ন ধারার বাংলা গান, এমনকী রবীন্দ্রগানেও তিনি অনায়াস দক্ষ। গেয়েছেন হিন্দি, উর্দু, গজল আর ইসলামি গান। তাঁর রেকর্ডের বিক্রি হয়তো বা এ যুগের নিরিখেও ‘রেকর্ডস্পর্শী’। যদিও শিল্পীর আর্থিক অবস্থা কখনও স্থিতিশীল ছিল না। শেষ জীবনে তিনি আফিমের দোকান খুলে জীবিকা নির্বাহে বাধ্য হন। কে মল্লিক, পণ্ডিত শঙ্কর মিশ্র, মুন্সি মহম্মদ কাশেম এই তিন নামেই তাঁর রেকর্ড আছে। বাংলায় তিনি পরিচিত ‘কে মল্লিক’ নামে, যদিও তাঁর পিতৃদত্ত নাম মুন্সি মহম্মদ কাশেম। মাটির টানে শেষ পর্যন্ত ফিরে যান বর্ধমানে নিজের গ্রামে। সেখানে ১৯৫৯/৬০-এ প্রয়াণের আগে পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে গান শোনানো ও শেখানোর কাজেই তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন জীবনের চরম সার্থকতা। বর্ধমানেরই ইতিহাস-অনুরাগী গিরিধারী সরকার দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমে লিখেছেন তাঁর জীবনীচিত্র বিস্মৃতির সংগীতশিল্পী কে মল্লিক, ১২৫ বছরে তাঁকে মনে রেখে ‘সূত্রধর’ প্রকাশ করছে বইটি। ২৭ মে সন্ধে ৬ টায় ৬৮ যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ-র লাহাবাড়ি-তে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ সুধীর চক্রবর্তীর হাতে, সঙ্গে তাঁর সংগীতপ্রতিভা নিয়ে দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনা এবং সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সৌজন্যে তাঁর রেকর্ডের গান। |
|
|
|
|
|
|