দোতারার আদলে তৈরি ছোট্ট বাদ্যযন্ত্রে সুর ধরলেন তিনি। গাইলেন
‘ভাতপান্তা চকোর চাল
গুয়া গাছের নাইরে ডাল
এইলা দেখিয়া বেড়াছে রাম
সীতার নাগাল কোনঠে পাম’।
গুরু প্রবীণ লোকশিল্পী কামেশ্বর রায়ের সঙ্গে সুর ধরল চোদ্দ-পনেরো বছরের সুস্মিতা রায়, দেবকী রায়, চন্দনা রায়ের মতো মেয়েরা। তালিম নিল বিলুপ্তপ্রায় কুষাণ গানের। এক সময় গান থামিয়ে কামেশ্বরবাবু বাদ্যযন্ত্র তুলে দেন দেবকীর হাতে। দোতারার আদলে তৈরি বেনা নামে পরিচিত ওই বাদ্যযন্ত্রে একটি মাত্র তার। ছোট্ট মেয়ে গুরুর কথা মতো সেটা বাজিয়ে সুর তোলার চেষ্টা করল। গান শেষ হলে উমাপদ রায় নাচের শিল্পীদের নিয়ে বসলেন। তালিম দিলেন সত্যপীর, পালাটিয়া, দোতারাডাঙা, চোরচুন্নির মতো লোকনৃত্যের।
তিস্তা পাড়ের লোকসঙ্গীত, নৃত্য ও বাদ্যযন্ত্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অ্যাকাডেমি গড়ে নতুন প্রজন্মকে এ ভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এক দল প্রবীণ লোকশিল্পী। ময়নাগুড়ির দোমহনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বানিয়াপাড়ায় প্রতি রবিবার প্রশিক্ষণের আসর বসে। অন্তত ২৩ জন ছেলেমেয়ে তালিম নেন। এ জন্য সাম্মানিক দিতে হয় না। বাঁশ বাগানের পাশে দরমার বেড়া দেওয়া যে চালা ঘরে সকাল থেকে ঘন্টার পর ঘণ্টা রেওয়াজ চলে সেটাই লোকসঙ্গীত অ্যাকাডেমির সদর দফতর। ২০০৫ সালে কামেশ্বরবাবু কয়েকজন প্রবীণ শিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
অ্যাকাডেমির ভাঙাচোরা সদর দফতরের পাশে কোনও এক রবিবার দাঁড়ালে কানে ভেসে আসবে কুষান, তুক্ষা, ভাওয়াইয়া, মইষালবন্ধু, দোতরাডাঙা, বিষহরা, সত্যপীরের মতো প্রাচীন অনেক লোকগানের সুর। সঙ্গে বেজে চলে সারিঞ্জা, বেনা, দোতরা, বাঁশি, খোল, ঢোল।
প্রবীণ শিল্পীদের উদ্যোগ দেখে খুশি লোক গবেষক মহল। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তথা গবেষক দীপক রায় বলেন, “রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে লোকসঙ্গীত, নৃত্য ও বাদ্যযন্ত্র প্রশিক্ষণের অ্যাকাডেমি আছে বলে আমার জানা নেই। প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো চললে তিস্তাপাড়ের প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।” লোকশিল্পী তথা বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা বলেন, “খুবই ভাল প্রচেষ্টা।”
অ্যাকাডেমি চলছে প্রশিক্ষকদের গাঁটের পয়সায়। সদর দফতর তৈরির জন্য জমি দিয়েছেন প্রবীণ লোকসঙ্গীত শিল্পী কামেশ্বর রায়। সম্প্রতি ক্রান্তি, চ্যাংরাবান্ধা, রাজারহাট, ধাপরা, রাণীরহাট এলাকায় অ্যাকাডেমির শাখা খোলা হয়েছে। কামেশ্বরবাবু বলেন, “এগারোজন শিল্পী সংস্থার সঙ্গে জড়িত আছেন। প্রত্যেকে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করছেন।”
প্রবীণ শিল্পীরা পেশায় চাষি। কাজের অবসরে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। লোকগান, নাচের কথা বলেন। কেউ উৎসাহ দেখালে অ্যাকাডেমিতে চলে যেতে বলেন। রামসাই এলাকার অঞ্জলী রায়ের সঙ্গে এ ভাবেই যোগাযোগ হয়। সে প্রায় আট মাস থেকে ভাওয়াইয়া ও মইষালবন্ধু গানের তালিম নিচ্ছে। অঞ্জলীর কথায়, “প্রাচীন লোকগানের প্রশিক্ষক নেই। তাই অসুবিধা হত। অ্যাকাডেমিতে এসে সেই সমস্যা মিটেছে।”
|
হৃদয়ে মাধুরী
নিজস্ব সংবাদদাতা • ইনদওর |
অন্য নায়িকাদের জড়িয়ে যতই গল্প ছড়াক, তাঁর ‘ড্রিম গার্ল’ এক জনই মাধুরী দীক্ষিত। বলেই ফেললেন রণবীর কপূর। সেই ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, মাধুরী নাচছেন তাঁরই সঙ্গে। ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ তে সেই স্বপ্নই সত্যি হল, উচ্ছ্বাস চাপতে পারলেন না বছর তিরিশের এই অভিনেতা।
|
শহরে এক অনুষ্ঠানে কঙ্কণা সেনশর্মা। রবিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী। |