দু’বছর পূর্তি
সাফল্য বনাম ব্যর্থতাই অস্ত্র হাওড়া ও পঞ্চায়েতে
রকারের সাফল্যের খতিয়ান আর বিরোধীদের তোলা ব্যর্থতার তালিকা এ বার হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ও পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের হাতিয়ার হতে চলেছে।
গত দু’বছরে তাদের সরকার কী কী সাফল্য পেয়েছে তা হাওড়ায় শাসক দল প্রচারে নিয়ে এসেছে। শনিবার কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যর্থতাকে হাওড়ার উপনির্বাচনে ও পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা তুলে ধরবেন। তৃণমূল সরকারের দু’বছর পূর্তির ৪৮ ঘণ্টা আগে ব্যর্থতার তালিকা দিয়ে শনিবার পুস্তিকা প্রকাশ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। পুস্তিকাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিশাহীন যাত্রা’। হাওড়ার উপনির্বাচন ও পঞ্চায়েত ভোট মিটলে সরকারের বিভিন্ন দিকের ব্যর্থতা নিয়ে কংগ্রেস আন্দোলনের কর্মসূচি নেবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
শিল্প, অর্থনীতি থেকে শুরু করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রসঙ্গ তুলে প্রদীপবাবু এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘এই সরকারের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অস্পষ্টতা আছে। সরকার বুঝতে পারছেনা কোন পথে, কোন দিকে যাবে। কখনও কেন্দ্রের সমালোচনা করছে, কখনও কেন্দ্রীয় প্রকল্প আনতে তদ্বির করছে। এ ভাবেই বর্তমান সরকার রাজ্যকে হতাশার অন্ধকারের ডুবিয়ে দিচ্ছে। দিশাহীন ভাবে চলছে সরকার।”
রাজ্যে বেকারদের কর্মসংস্থান, জঙ্গলমহলের উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়কে ভাঁওতা বলে মন্তব্য করে প্রদীপবাবুর অভিযোগ, জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ টাকার মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাজ করতে পারেনি রাজ্য সরকার।
সাংবাদিক বৈঠকে প্রদীপ ভট্টাচার্য ও আব্দুল মান্নান।—নিজস্ব চিত্র
তাঁর বক্তব্য, “রাজ্য সরকারের সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় টাকা ফেরত যাচ্ছে।” পাশাপাশি, সরকার বিরোধী দলগুলির গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করছে বলে অভিযোগ তুলে মমতা-সরকারের সঙ্গে গুজারাতের মোদি সরকারের তুলনাও টেনেছেন প্রদীপবাবু এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান।
প্রদীপবাবুর সমালোচনাকে অবশ্য কোনও গুরুত্বই দেননি তৃণমূলের মহাসচিব, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বাংলার মানুষ কংগ্রেসকে দেখে হতাশ।
কারণ, বাংলা থেকে কংগ্রেস সিপিএমের অপশাসন দূর করতে পারেনি। বরং দিল্লির জুজু দেখিয়ে তৃণমূলের সমালোচনাই করেছে তারা। ফলে, কংগ্রেসের সমালোচনাকে বাংলার মানুষ পাত্তা দেয় না।”
কংগ্রেসের সুরে এ দিন সিপিএমও মমতা-সরকারের সমালোচনা করেছে। শিল্পে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যা প্রচার করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন সিটুর রাজ্য সভাপতি সাংসদ শ্যামল চক্রবর্তী।
এ দিন তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, দু’বছরে ১৩ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দু’বছরে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। তৃণমূল সরকারের প্রথম বছরে দাবি করা হয়েছিল ৩ লক্ষ কমর্সংস্থান হয়েছে।” শ্যামলবাবুর প্রশ্ন “তাহলে কি এ বছরে মাত্র ১৪ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে?” রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলে শ্যামলবাবু বলেন, “গত এক বছরে নাকি ১৭৬ টি বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। কোন শহর, কোন গ্রামে এই সংস্থাগুলি কাজ করছে, দয়া করে সরকার তা জানাবে কি?” পার্থবাবু অবশ্য এ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানান, ইতিমধ্যেই ২৬১টি সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ১,১২,৭৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে প্রায় ৩,১৪,০০০। তাঁর দাবি, “আমাদের রাজ্যে শিল্পের বৃদ্ধি (গ্রোথ) জাতীয় গড়ের থেকে বেশি।” আর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় কাজ করে নিজেদের নামে চালানোর যে অভিযোগ কংগ্রেস করেছে তা নিয়ে পার্থবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “রাজ্য থেকে কেন্দ্র যে ৪০% রাজস্ব নিয়ে যায় তা দিয়ে প্রকল্পের টাকা জোগায়। রাজ্যের মানুষের দেওয়া টাকা নিয়ে রাজ্যকে ঠেকিয়ে দেওয়ার মধ্যে কৃতিত্ব দাবি করার কিছু নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.