|
|
|
|
প্রকাশ্যে তৃণমূলের কোন্দল |
এ বার পিংলা থেকে চিঠি রাজ্য নেতৃত্বকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ডেবরা, সবং, কেশপুরের পর এ বার পিংলাতেও তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। দলের বর্তমান ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তৃণমূলেরই বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক। অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌর ঘোড়ইও।
এ দিকে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ ভাবে বিভিন্ন ব্লকে অন্তর্দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেওয়ায় বেশ অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দ্বন্দ্বের রাশ টানতে এ বার কড়া পদক্ষেপের পথে এগোতে চাইছেন তাঁরা। কাল, রবিবার মেদিনীপুরে এক জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। যে সভায় উপস্থিত থাকবেন দলের ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি এবং বিভিন্ন সংগঠনের পদাধিকারীরা। সঙ্গে দলের বিধায়করাও। তৃণমূলের এক জেলা নেতার বক্তব্য, “শুধু ডেবরা, সবং, কেশপুর কিংবা পিংলা নয়, প্রতিটি ব্লকেই কম বেশি এমন অভিযোগ রয়েছে। কোনও সমস্যা হলে তা আলোচনার প্রেক্ষিতে দলের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়া উচিত। সভা থেকে নেতা-কর্মীদের সেই বার্তা
দেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্রে খবর, কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের সই-সহ ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়, সুব্রত বক্সীর কাছে। নতুন ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধেই মূলত অভিযোগ। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘২০০৮ সালে পিংলা ব্লকে তৃণমূলের দুর্দিনে ১০টি অঞ্চলের মধ্যে ৩টি অঞ্চল তৃণমূল দখল করে। ২০১০ সালের মে মাসে কোনও কারণ না-দেখিয়েই গৌর ঘোড়ইকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ২০১২ সালের শেষের দিকে মেদিনীপুরে বসে নতুন ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। আজ পর্যন্ত দলের কোনও ব্লক কমিটি গঠন করা হয়নি। নতুন ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা করার পর থেকে কঙ্কাল কাণ্ডে অভিযুক্ত সিপিএম নেতারা তৃণমূলের পতাকা ধরে প্রকৃত তৃণমূল সেজে মাঠে নেমে পড়ে।’ লেখা রয়েছে, ‘দুর্দিনে যাঁরা দলের পাশে থেকেছেন, এখন তাঁদের আড়াল করে মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে নিয়ে সংগঠন পরিচালন করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের জন্য বর্তমান ব্লক সভাপতি ও তাঁর মনোনীত অঞ্চল সভাপতিদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি ছাড়া কেউ দরপত্র জমা দিতে পারছে না।’
প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌরবাবুর বক্তব্য, “আমার দলের জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করছি। এখন স্বার্থান্বেষী নব্য তৃণমূলীদের আচরণে মানুষ তিতবিরক্ত। বিষয়টি বহুবার জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করি, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে নেতৃত্ব পদক্ষেপ করবেন।”
প্রাক্তন ব্লক সভাপতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বর্তমান ব্লক সভাপতি গৌতম জানা বলেন, “এ সবই মিথ্যে অভিযোগ। উনি (গৌর ঘোড়ই) দলের সাধারণ কর্মী। নেতা নন। মিথ্যে অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও মানে হয় না।”
প্রাক্তন ও বর্তমানের দ্বন্দ্ব এই ভাবে প্রকাশ্যে আসায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তবে, প্রকাশ্যে এই নিয়ে কেউ কিছু বলছেন না। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের বক্তব্য, “এটা দলের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কোনও সমস্যা হয়ে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তা মেটানো হবে। আর এ নিয়ে কিছু বলার নেই।” |
|
|
|
|
|