ক্লাসে গোলমাল করায় শিক্ষিকা এক ছাত্রকে মারধর করে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার ভোরে কলকাতার হাসপাতালে মারা যায় ওই ছাত্র। শিক্ষিকার মারেই ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিভাবকের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত নিষ্ঠুর, মর্মান্তিক। যিনি এটা ঘটিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে আইন আইনের পথে চলবে। তবে আমার দিক থেকে আমি বিভাগীয় তদন্ত করতে বলেছি। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বুধবার বাসন্তীর নিদের্শখালির এক শিশুশিক্ষাকেন্দ্রে বাপি জোতদার (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রকে চম্পা মণ্ডল নামে ওই শিক্ষিকা মারধর করেন। বাড়ি ফিরে সে অসুস্থ বোধ করায় তাকে ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কলকাতায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। অবস্থায় অবনতি হওয়ায় ফের তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে সেখানে সে মারা যায়। হাসপাতালের সুপার তমালকান্তি ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে বাপিকে নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সে মারা যায়। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে দুষ্টুমি করায় শিক্ষিকা চম্পাদেবী তাকে মারধর করেন। বাপির মা সুনীতা দেবী বলেন, “দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমিও করে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে ও বলে স্কুলে শিক্ষিকা মেরেছে। দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিয়েছে।”
পুলিশের বক্তব্য, বাপির সহপাঠী পিণ্টু মণ্ডল বলেছে, “রাজা নামে এক সহপাঠীর স্কুলব্যাগ নিয়ে আমি ও বাপি খেলছিলাম। দিদিমণি এলে রাজা তা বলে দিলে দিদিমণি আমাকে ও বাপিকে মারতে থাকে। দেওয়ালে বাপির মাথা ঠুকে দেয়।”
বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ও স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অরবিন্দ পৈলান বলেন, “ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আগেও ছাত্রদের মারধর, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য তিনি বরখাস্তও হন। কিন্তু নিয়ম মেনে বরখাস্ত না হওয়ার কারণে পুনর্বহাল হন ওই শিক্ষিকা। যে কাণ্ড উনি ঘটিয়েছেন তার জন্য ওঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই শিক্ষিকা চম্পাদেবী বলেন, “আমিও মা। আমারও দু’টি সন্তান রয়েছে। দুষ্টুমি করায় আমি ওই ছাত্রকে শাসন করেছিলাম। তবে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিইনি। এমনটা ঘটবে বুঝতে পারিনি।’’ |