|
|
|
|
মনোনয়ন দিলেন শুভেন্দু অধিকারী |
সমবায় ভোটেও তৃণমূলে কোন্দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আগে মেদিনীপুর কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এ বার বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরেও সেই এক পরিস্থিতি। সম্মুখসমরে তৃণমূলের দুই পক্ষ। একদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। অন্য দিকে, মুকুল রায়ের অনুগামীরা। শুভেন্দু নিজেও বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র তুলেছেন। তিনি মনোনয়ন জমা দেন কি না, সেটাই দেখার। এ দিন যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিশির মহাপাত্র, অজিত মাইতি। শিশিরবাবু সিপিএম নেতা। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদে রয়েছেন। অজিতবাবু জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য।
তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য দ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে দেখভাল করতে জেলা তৃণমূল এক কমিটি গড়েছে। কনভেনর করা হয়েছে জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষকে। বুধবার কমিটি বৈঠকও করে। তবে ঐকমত্যে পৌঁছনো যায়নি। তবে প্রদ্যোৎবাবুর বক্তব্য, “ব্যাঙ্কের নির্বাচন নিয়ে দলের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। সব ঠিকঠাকই চলছে।”
নেতৃত্ব যা-ই বলুন বৃহস্পতিবার প্রথম দিনেই মনোনয়ন জমা পড়েছে ২১টি। জানা গিয়েছে, এর অধিকাংশই শুভেন্দু অনুগামীদের। মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছিল ৪১টি। বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের নির্বাচন আগামী ২ জুন। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন তোলা এবং জমা দেওয়ার কাজ। চলবে আজ, শুক্রবার পর্যন্ত। ১৮ মে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা এবং প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে। নির্বাচন হবে কেশপুরে। আগামী ২ জুন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে পরিচালন সমিতির ১২টি ডিরেক্টর পদের জন্য।
কেশপুরে নির্বাচন করা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে সিপিএম প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চ। মঞ্চের বক্তব্য, নির্বাচন সাধারণত মেদিনীপুর শহরেই হয়। এ বার কেশপুরে কেন? তাদের মতে, তৃণমূলকে বিশেষ সুবিধে পাইয়ে দিতে মেদিনীপুরের বদলে কেশপুরে নির্বাচন করা হচ্ছে। এতদিন ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি সিপিএমের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ বার সেই নিয়ন্ত্রণ মসৃণ ভাবেই তৃণমূলের হাতে আসবে বলে মনে করেছিলেন শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা। তবে তাঁদের সেই ধারণা ভেঙেছে। বিশেষ করে দলের দু’পক্ষ যে ভাবে ব্যাঙ্কের নির্বাচনেও ক্ষমতা জাহিরের চেষ্টা করছে, তাতে ভোট ভাগাভাগির সুবিধে সিপিএম না- পেয়ে যায়, এই সংশয়ও তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস। তিনি বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কেও যান। যাঁরা মুকুল-অনুগামী বলে পরিচিত আজ, শুক্রবার তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। জানা গিয়েছে, নির্বাচন ঘিরে দ্বন্দ্ব এড়াতে জেলা তৃণমূলের অন্দরে এক সময় ঠিক হয়েছিল, ১২টি পদের মধ্যে ৩টি পদে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বাকি ৮টি পদে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রার্থীরা লড়বেন। তবে বুধবারের বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় সব হিসেব পাল্টে গিয়েছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর যাই হোক, সুষ্ঠু ভাবেই নির্বাচন হবে বলে আশাবাদী সমবায় দফতর ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিষ্ট্রার অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (এআরসিএস) তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার মদনমোহন ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার ৪১টি মনোনয়নপত্র তোলা হয়। জমা পড়েছে ২১টি। সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করতে সব পদক্ষেপই করা হচ্ছে। আমরা আশা নির্বিঘ্নেই সব মিটবে।”
একশো দিনের কাজে বৈঠক। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনতে বৈঠক করল জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত ছাড়াও প্রতিটি ব্লকের বিডিও এবং মহকুমাশাসকেরাও উপস্থিত ছিলেন। জেলায় কাজের গড় এখনও ৫০ দিনে না পৌঁছনোয় জেলাশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যাতে প্রতিটি ব্লকই গড়ে ৫০ দিন করে কাজ দিতে পারে সে জন্য বিডিওদের আরও উদ্যোগী হতে বলেন। জেলার হিসাবে এ বারও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রথম হয়েছে খড়্গপুর-২ ব্লক। এই ব্লকে ১০০ দিনের পরিবর্তে গড়ে ৪০ দিন কাজ পেয়েছেন মানুষ। এ দিনই সার্কিট হাউসে ভোটার তালিকা নিয়েও একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে সমস্ত মানুষের নাম ভোটার তালিকায় তোলা, প্রত্যেকের সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির জন্য বিডিওদের বলা হয়। |
|
|
|
|
|