আঁচড়ে জখম তিন পড়ুয়া
হনুমানের তাণ্ডবে স্কুলে লাটে উঠল পঠনপাঠন
কটি হনুমানের তাণ্ডবে বৃহস্পতিবার পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে গেল উলুবেড়িয়ার কাঁজিয়াখালি হাইস্কুলে। তার আঁচড়ে জখম হয় দুই ছাত্র ও এক ছাত্রী। আতঙ্কে দীর্ঘ ক্ষণ শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে ছাত্রছাত্রীরাও। শিক্ষকেরাও নিজেদের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে বসে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সাহস করে দুই ছাত্র চকোলেট বোমা সংগ্রহ করে এনে ফাটাতে থাকলে হনুমানটি সেই শব্দে স্কুল ছেড়ে পালায়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সকলে। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় স্কুল।
হনুমানটিকে ধরতে এ দিন দুপুরে স্কুলে খাঁচা নিয়ে হাজির হন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু তত ক্ষণে হনুমানটি পালায়। খাঁচাটি স্কুলেই রাখা রয়েছে। আজ, শুক্রবার ফের বন দফতরের কর্মীরা হনুমানটিকে ধরতে স্কুলে যাবেন বলে ওই দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের আতঙ্ক কাটছে না।
এ দিন ঘটনার সময়ে স্কুলে ছিলেন না প্রধান শিক্ষক দেবাশিস চক্রবর্তী এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী। তাঁরা বলেন, “একটি বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য অন্য একটি স্কুলে ছিলাম। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে হনুমানটির তাণ্ডব চালানোর খবর পাই। ওটাকে ধরা গেল না। ফের স্কুলে হানা দেবে কিনা বুঝতে পারছি না।”
এই পবননন্দনের দৌরাত্ম্যেই তটস্থ স্কুল। ছবি: সুব্রত জানা।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই হনুমানটি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ দিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ হনুমানটি স্কুল চত্বরে হাজির হয়। তখন স্কুলের মাঠে ছাত্রছাত্রীরা খেলছিল। হনুমানটি দুই ছাত্র এবং এক ছাত্রীকে আঁচড়ে দেয়। অভিভাবকেরা এসে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। এর পরে স্কুল চত্বর জুড়ে হনুমানটির দাপাদাপি বাড়তে থাকে। কোনও মতে প্রার্থনার পরে ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে ঢুকিয়ে দেন শিক্ষকেরা।
প্রথম পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে হনুমানটি। বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের ভিতরেও সে ঢুকতে থাকে। ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা বেরিয়ে আসে। কিছু ক্ষণ পরে হনুমানটি উঠে পড়ে স্কুলভবনের ছাদে। সেই ফাঁকে ছাত্রছাত্রীরা যে যার শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে। এরপরে আর পড়ানোর ঝুঁকি নেননি শিক্ষকেরা। ছাত্রছাত্রীদের তাঁরা দরজা বন্ধ করে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে বলেন। শিক্ষকেরাও নিজেদের ঘরে চলে যান। এ ভাবেই প্রায় ৫০০ ছাত্রছাত্রী এবং সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রায় চার ঘণ্টা নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখেন। হনুমানটি বন্ধ দরজাতেও ধাক্কা দিতে থাকে। স্কুলের তরফ থেকে বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। এক ফাঁকে অবশ্য ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের পাহারায় মিড-ডে মিল খেয়ে আসে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বন দফতরের লোকজন স্কুলে আসতে দেরি করে। সেই কারণে ছাত্রেরাই চকোলেট বোমা ফাটিয়ে হনুমানটিকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করে। বেলা আড়াইটা নাগাদ বন দফতরের কর্মীরা খাঁচা নিয়ে স্কুলে হাজির হন। বন দফতর অবশ্য দেরি করে যাওয়ার অভিযোগ মানেনি।
শিক্ষক অলোকেশ বেরা বলেন, “নিরাপত্তার খাতিরেই ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে বলেছিলাম। আমরাও নিজেরাও তাই করি। হনুমানটির দাপাদাপিতে পঠন-পাঠন দূরের কথা, বাইরেই বেরোতেই পারছিলাম না।”
জখমদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শর্মিষ্ঠা প্রামাণিক বলে, “ক্লাস থেকে বাইরে বেরোতেই হনুমানটা আচমকা লাফিয়ে আমার ঘাড়ের উপর পড়ল। বাঁ কানের নীচে এবং বাঁ হাতে আঁচড়ে দিয়েছে।” পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সুখেন দাসেরও পেটে আঁচড়ে দিয়েছে হনুমানটি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.