স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই হনুমানটি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ দিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ হনুমানটি স্কুল চত্বরে হাজির হয়। তখন স্কুলের মাঠে ছাত্রছাত্রীরা খেলছিল। হনুমানটি দুই ছাত্র এবং এক ছাত্রীকে আঁচড়ে দেয়। অভিভাবকেরা এসে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। এর পরে স্কুল চত্বর জুড়ে হনুমানটির দাপাদাপি বাড়তে থাকে। কোনও মতে প্রার্থনার পরে ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে ঢুকিয়ে দেন শিক্ষকেরা।
প্রথম পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে হনুমানটি। বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের ভিতরেও সে ঢুকতে থাকে। ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা বেরিয়ে আসে। কিছু ক্ষণ পরে হনুমানটি উঠে পড়ে স্কুলভবনের ছাদে। সেই ফাঁকে ছাত্রছাত্রীরা যে যার শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে। এরপরে আর পড়ানোর ঝুঁকি নেননি শিক্ষকেরা। ছাত্রছাত্রীদের তাঁরা দরজা বন্ধ করে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে বলেন। শিক্ষকেরাও নিজেদের ঘরে চলে যান। এ ভাবেই প্রায় ৫০০ ছাত্রছাত্রী এবং সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রায় চার ঘণ্টা নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখেন। হনুমানটি বন্ধ দরজাতেও ধাক্কা দিতে থাকে। স্কুলের তরফ থেকে বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। এক ফাঁকে অবশ্য ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের পাহারায় মিড-ডে মিল খেয়ে আসে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বন দফতরের লোকজন স্কুলে আসতে দেরি করে। সেই কারণে ছাত্রেরাই চকোলেট বোমা ফাটিয়ে হনুমানটিকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করে। বেলা আড়াইটা নাগাদ বন দফতরের কর্মীরা খাঁচা নিয়ে স্কুলে হাজির হন। বন দফতর অবশ্য দেরি করে যাওয়ার অভিযোগ মানেনি।
শিক্ষক অলোকেশ বেরা বলেন, “নিরাপত্তার খাতিরেই ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে বলেছিলাম। আমরাও নিজেরাও তাই করি। হনুমানটির দাপাদাপিতে পঠন-পাঠন দূরের কথা, বাইরেই বেরোতেই পারছিলাম না।”
জখমদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শর্মিষ্ঠা প্রামাণিক বলে, “ক্লাস থেকে বাইরে বেরোতেই হনুমানটা আচমকা লাফিয়ে আমার ঘাড়ের উপর পড়ল। বাঁ কানের নীচে এবং বাঁ হাতে আঁচড়ে দিয়েছে।” পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সুখেন দাসেরও পেটে আঁচড়ে দিয়েছে হনুমানটি। |