পথ নিরাপত্তা কমিটি গড়ার দিনেই দুর্ঘটনা
থ নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে জেলাস্তরের কমিটি গড়ার দিনেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে গেল বর্ধমানের মেহেদিবাগানে।
মোবাইলে কথা বলতে-বলতে মোটরবাইক চালাতে গিয়েই বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ জি টি রোডে দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রাকের নীচে পিষে যান দুই আরোহী। পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “জেলা জুড়ে যে ভাবে দুর্ঘটনা বাড়ছে, তাতে পথে বের হওয়া মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। মানুষের মধ্যে ট্রাফিক সচেতনতা বাড়ানো দরকার। সিগন্যাল ব্যবস্থা উন্নত করার কাজও চলছে। প্রতিটি রাস্তার ট্রাফিক সিগন্যালে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে, যাতে মানুষ আইন মেনে চলাফেরা করেন।”
বর্ধমান শহরের মেহেদিবাগানে দুর্ঘটনার পরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাইকে চড়ে দুই যুবক দুর্গাপুরের দিক থেকে বর্ধমানে আসছিলেন। মেহেদিবাগানের বাসিন্দা সুরজ শর্মার কথায়, “আমরা রাস্তার পাশে বেঞ্চে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। বাইকের পিছনে বসা যুবকের মোবাইলে ফোন আসে। তিনি ফোনটি সামনে চালকের কানে ধরেন। সামনের যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎই দুর্গাপুরের দিকে যাওয়া বাসের চাকায় ঠেকে যায় বাইকের চাকা। দুই যুবক রাস্তায় ছিটকে পড়েন। পিছন থেকে আসা একটি ট্রাক মুহূর্তে তাঁদের পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই দু’জন মারা যান।” খবর পেয়ে পুলিশ চলে আসে। উত্তেজিত জনতা ট্রাকটিতে অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করলেও পুলিশ সেটিকে সরিয়ে নিয়ে যায়। ট্রাকের চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত মৃতদের পরিচয় পুলিশ জানাতে পারেনি।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই ‘জেলা পথ নিরাপত্তা কমিটি’ গঠিত হয়েছে বর্ধমানে। সেই কমিটির সভাপতি জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা। পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্ষ্য, বিভিন্ন থানার আইসি বা ওসি, আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক, বাসমালিক সমিতির সদস্যেরা এই কমিটিতে রয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, “আদালতের নির্দেশ অনুসারে আমরা প্রায় ৭০টি দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু দশ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেব।”
দুর্ঘটনাগ্রস্ত মোটরবাইক ও আটক হওয়া ট্রাক।
বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদে কমিটির প্রথম বৈঠক বসে। জেলাশাসক বলেন, “সভায় স্থির হয়েছে যে পূর্ত (সড়ক) দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে পুলিশ জেলার সমস্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করবে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক করবেন, দুর্ঘটনা রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” তিনি জানান, ইতিমধ্যেই জেলার বেশ কিছু এলাকাকে ‘দুর্ঘটনাপ্রবণ’ বলে চিহ্নিত করে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলির মাধ্যমে পুলিশ নজর রাখবে, রাস্তায় অবৈধ পার্কিং হচ্ছে কী না। রাস্তায় চলাচলকারী বাসগুলির দিকেও নজর রাখা হবে। বাসের মাথায় যাত্রীর দেখা মিললে শুধু মালিককেই নয়, বাসযাত্রীদেরও জরিমানা করা হবে।
জেলাশাসক বলেন, “আমরা লক্ষ করেছি, রাস্তায় যত্রতত্র কিছু লরি বা ট্রাক দিনরাত ইট-বালি নামিয়ে চলেছে। তাতে রাস্তার পরিসর ক্রমে ছোট হয়ে যায়। দুর্ঘটনা ঘটে। ওই লরি ও ট্রাকগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।” পথ নিরাপত্তা কমিটি সূত্রের খবর, কাটোয়া শহরের সিগন্যালিং ব্যবস্থা ঢেলে সাজার জন্য বরাদ্দ করা হবে সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকা। জেলার অন্যত্র আরও সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে।

বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.