মেলার মাঠ ফাঁকাই, সাফল্য প্রচারে হিমশিম প্রশাসনের
ক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সাজানো হয়েছে নানা স্টল। রয়েছে প্রদর্শনীও। কিন্তু সে সব দেখতে লোকের ভিড় নেই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতেও আসছেন না কেউ। দর্শকাসন ফাঁকা পড়ে থাকছে।
বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মতো মেলার আয়োজন করা হয়েছে মেদিনীপুরেও। এই সময়কালে রাজ্যের নতুন সরকার কী কী কাজ করছে তা তুলে ধরতেই এই মেলা ও প্রদর্শনী। উন্নয়নের খতিয়ান দিতে রাজ্য সরকার একটি বই প্রকাশেরও পরিকল্পনা নিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা বিশেষ প্রকল্পগুলির হাল-হকিকত জানতে চাওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলা থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুরে কাজের অগ্রগতি আশাপ্রদ নয়। এই প্রকল্পের এখনও পর্যন্ত ২০টি জল প্রকল্পের কাজ হয়েছে, ১২টি হস্টেল নির্মাণ হয়েছে, আর ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়াম পুনর্গঠনের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু এই পর্যন্তই। বাকি কাজের হাল বেশ খারাপ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১১ সালের ১৫ অক্টোবর শিলান্যাস করা সুবর্ণরেখার উপর ভসরাঘাটে সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের উন্নয়ন বলতে হয়েছে শুধু ৬টির মধ্যে ২টি ওয়ার্ডের উন্নতি, রামগড় পলিটেকনিক কলেজে কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ। ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল শিলান্যাস করা কংসাবতী সেতুর উপর আমকোলা সেতুর কাজও এগিয়েছে ১৫ শতাংশ, লালগড় কলেজের কাজ হয়েছে ৪০ শতাংশ। ধরমপুর, লালগড়ে নতুন হস্টেল-সহ বিদ্যালয়ের কাজ শুরুই হয়নি। রামগড় প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রের কাজও সবে শুরু হয়েছে। ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালকে মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে উন্নীত করার ক্ষেত্রে সবে সমীক্ষা শুরু হয়েছে!
কাজ শুরুই হয়নি
রামগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র
ডেবরা ও গড়বেতা আইটিআই
বিনপুর ২ ব্লকে কিষাণ মান্ডি
দাঁতন ২ ব্লকে কলেজ
মেদিনীপুরে কমন ফেসিলিটি সেন্টার
বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ন্যাচারাল ফাইবার সেন্টার তৈরি
জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বারবারই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত দু’বছরে বারবার জেলায় এসে নানা প্রকল্পের কথা ঘোষণা ও শিলান্যাস করেছেন তিনি। কিন্তু বেশিরভাগ প্রকল্পই চলছে ঢিমেতালে। ডেবরা ও গড়বেতায় আইটিআইয়ের কাজ শুরু হয়নি, ঝাড়গ্রামে সবে কিষাণ মান্ডির কাজ শুরু হলেও বিনপুর ২ ব্লকে সবে টেন্ডার হয়েছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকে কমন ফেসিলিটি সেন্টারের জন্য জমি চিহ্নিতকরণও হয়নি। দাঁতন-২ ব্লকে কলেজের জন্য সবে জমি চিহ্নিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলির শিলান্যাসের পর কোনও ক্ষেত্রে ১৬ মাস, কোনও ক্ষেত্রে বা এক বছর সময় পেরিয়েছে। কোথাও সামান্য কাজ হয়েছে। আবার কোথাও কাজই শুরু করা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। মেলায় বিভিন্ন দফতরের স্টলে উন্নয়নের খতিয়ানের বদলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজকর্ম দেখানো হচ্ছে। যেমন, কৃষি দফতরের স্টলে দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন কৃষিযন্ত্রে কেমন কাজ হয়, জল অনুসন্ধান দফতর দেখাচ্ছে কী ভাবে বাড়ির ছাদে জল ধরে রাখা সম্ভব। পুলিশের স্টলে রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, নাইট ভিশন ক্যামেরা-সহ নানা সরঞ্জাম। সব থেকে শোচনীয় দশা ক্রীড়া দফতরের স্টলে। সেখানে রয়েছে শুধু ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাট-সহ নানা ক্রীড়া সরঞ্জাম। এ সব দেখতে লোকজনও আসছে না।
মেলায় লোক না হওয়ার একটা ব্যাখ্যা অবশ্য শাসকদল দিচ্ছে। তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতির যুক্তি, “মেলায় তো বিকিকিনির বন্দোবস্ত নেই। নেই খাবারের স্টলও। সে জন্য ভিড় তেমন হচ্ছে না।” সরকারের উন্নয়ন-খতিয়ানে খামতি আছে বলে অবশ্য মানেননি তিনি। আর প্রশাসনিক কর্তারা এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁদের বক্তব্য, উপর থেকে নির্দেশ এলে পালন না করে তো উপায় নেই। তাই নির্দেশ মতো মেলার আয়োজন করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.