সম্পাদক সমীপেষু ...
দখলের হাত পালটায়
সম্প্রতি বন্ধুর অনুরোধে এক প্রাইমারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলাম উত্তর চব্বিশ পরগনার এক প্রেক্ষাগৃহে। অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য পেশ করলেন দুটি কলেজের দুই অধ্যাপক। তিরিশ থেকে চল্লিশ জন শিশুর সমবেত চিৎকারে তাঁদের বক্তব্য চাপা পড়ে গেল। এর পর বললেন স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা। তাঁর বক্তব্য ছিল মোটামুটি এই রকম: এত দিন স্কুলটি রাজনৈতিক দখলে ছিল। সম্প্রতি সেখানে নিরপেক্ষ পরিচালন সমিতি তৈরি হয়েছে। এ বার শিক্ষিকারা মন দিয়ে পড়াতে পারবেন। শিশুদের মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনী পড়ানো উচিত ইত্যাদি। তাঁর কণ্ঠ শিশুদের কোলাহল বহু গুণে অতিক্রম করে গিয়েছিল। বোঝা গেল, তিনি পেশাদার রাজনীতিবিদ, রীতিমত সাধা গলা। এর পর প্রধান শিক্ষিকা বললেন: ‘সম্পাদক আমার আগেই এই তরুণ শিক্ষাবিদদের বলার সুযোগ দিলেন। কিন্তু এঁদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন ছিল। এই যে ক্লাস ফাইভের ভর্তির পরীক্ষা তুলে দেওয়া হল, পাশ-ফেল তুলে দেওয়া হল, এটা কি ভাল হল? আমি চাই দু’লাইনে হলেও এঁরা এই প্রশ্নের উত্তর দিন।’ প্রচুর হাততালিতে প্রশ্নের উত্তর দিলেন দর্শকরাই। কিন্তু তাঁর কথার রেশ মিলিয়ে যেতে না যেতে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সম্পাদক তাঁর হাত থেকে মাইকটি প্রায় কেড়ে নিয়ে বললেন, ‘সরকার একটা এক্সপেরিমেন্ট করছে। শিশুদের পাশ-ফেল না থাকলে চাপ কমে। আসল কথা হল সুশিক্ষা। আমি একটু-আধটু রাজনীতি করি। সরকারের এক্সপেরিমেন্টটা আমি এই স্কুলে চালানোর চেষ্টা করছি। আরও অনেক মূল্যবান কথা বলার পর তিনি বললেন, ‘এই বার এই তরুণ শিক্ষাবিদরা চাইলে দু-চার কথা বলতে পারেন।’ বলেই তিনি এক জন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অধ্যাপকের দিকে মাইকটি এগিয়ে দিতে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে পূর্বোক্ত রাজনৈতিক নেতা বলে উঠলেন, ‘এটা কি বিতর্ক-সভা নাকি? না, না! অধ্যাপকদের বলার কোনও দরকার নেই। পরের অনুষ্ঠান শুরু হোক।’ (পরের অনুষ্ঠান মানে অবশ্য শিশুদের অধুনা-পরিচিত নাচ)। আমি তরুণ অধ্যাপকদের মুখের দিকে তাকানোর সাহস পাইনি। হয়তো বিস্ময় আর আঘাত তাঁদের মুখে বিচিত্র রং ধরিয়েছিল। আমি বেশ কয়েক বছর পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ছিলাম। এই রকম পরিস্থতির মুখোমুখি খুব একটা হতে হয়নি। এই ছোট্ট ঘটনাটা গণতন্ত্রের মুখোশে একটি বিপজ্জনক ছিদ্র, যার ফাঁক দিয়ে বর্বর স্বেচ্ছাচারিতার রক্তচক্ষু স্পষ্ট দেখা যায়। দেখলাম, মাননীয় নেতার দু-একটি ফিসফিসে এবং ক্রুদ্ধ বাক্যে প্রধান শিক্ষিকা চুপ হয়ে গেলেন। তাঁর বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান! বুঝলাম, স্কুল এক রাজনৈতিক দখলদারের হাত থেকে মুক্ত হয়ে আর এক দখলদারের হাতে পড়েছে। তার আর মুক্তি নেই।
রবীন্দ্রমঞ্চ সারানো দরকার
রবীন্দ্রমঞ্চ ভদ্রেশ্বরে একমাত্র বড় প্রেক্ষাগৃহ। এটি চাঁপদানি পুরসভার অন্তর্গত। বছরের নানা সময়ে এখানে প্রচুর অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহটির পরিকাঠামো খুবই খারাপ। ইতিমধ্যে মঞ্চের সামনে উপরের দিকের কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ে গেছে। এ ছাড়া আরও যে কোনও অংশ ভেঙে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। বৃষ্টি পড়লে আবার মূল মঞ্চে জল পড়ে। এই অঞ্চলের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের স্বার্থে রবীন্দ্রমঞ্চের সংস্কার এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। তা না-হলে যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুঘর্র্টনা ঘটে যেতে পারে। তাই চাঁপদানি পুরসভার পুরপ্রধান এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলারের কাছে আবেদন, আপনারা যত তাড়াতাড়ি পারেন রবীন্দ্রমঞ্চ সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
পাঞ্চজন্য
গৌতম চক্রবর্তী (‘উজ্জ্বল উদ্ধারকে আনন্দ স্বীকৃতি’, ২৮-৪) লিখেছেন, “... পঞ্চপাণ্ডবের পাঞ্চজন্য, দেবদত্ত, পৌণ্ড্র ইত্যাদি পাঁচটি শাঁখের আওয়াজ”। সবিনয় জানাই, ‘পাঞ্চজন্য’ হল কৃষ্ণের শঙ্খ। পঞ্চজন নামক অসুরের অস্থি দ্বারা তা তৈরি। (সূত্র: চলন্তিকা।) অর্জুনের শঙ্খ হল, ‘দেবদত্ত’, ভীষ্মের ‘পৌণ্ড্র’, যুধিষ্ঠিরের ‘অনন্ত বিজয়’, নকুলের ‘সুকোষা’, সহদেবের ‘মণিপুষ্পক’।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.