পরিত্যক্ত রবিস্মৃতিধন্য ভবন
কালিম্পংয়ের রিমচিংপং রোডের ধারে নীরব নির্জনতার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত বাড়িটি। সহজে চোখে পড়ে না। বাঙালির আবেগ, অহঙ্কার ও অনন্ত আশ্বাসরূপী রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কত রকম ভাবে যে জড়িয়ে আছে বাড়িটি! ১৯৩৮ সালে তাঁর ৭৮তম জন্মোৎসব পালিত হয়েছিল সমতল থেকে বহু দূরে এই গৌরীপুর ভবনে। কালিম্পংয়ের মিলনী ক্লাবের উদ্যোগে বিগত পনেরো বছর ধরে এ বাড়িতেই আয়োজিত হয় রবীন্দ্র জন্মোৎসবের প্রভাতী অনুষ্ঠান। এ বছরও ব্যতিক্রম ঘটেনি। পঁচিশে বৈশাখ সকালবেলা জড়ো হয়েছিলেন ক্লাবের সদস্যরা। বাড়ির নীচতলার বারান্দায় ফুলে মালায় চন্দনে হাতে হাতে সাজানো হল বয়ে-আনা সাদাকালো ছবিটিকে। বিশ্বনাথ পাল, মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সমাপ্তি বন্দ্যোপাধ্যায়, দুলালচন্দ্র রায়, মানিকলাল আচার্য, মহিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়দের গানে, গল্পে, কবিতায় অলিন্দ ছুঁয়ে যায় বহু যুগের ও-পার থেকে চুঁইয়ে-পড়া আলো।

গৌরীপুর ভবন। লেখা ও ছবি: অনিতা দত্ত।
সেই কবে ময়মনসিংহের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীদের পেল্লায় বাড়িটি হয়ে উঠেছিল কবির অবকাশের আশ্রয়। নিস্তব্ধতায় ডুবে থাকা এই গৌরীপুর ভবন যে পূর্ণত তাঁর মনোহরণ করে নিয়েছিল, তা জানাতে ভোলেননি ব্রজেন্দ্রকিশোরের পুত্র বীরেন্দ্রকিশোরকে ‘এখানে শরীর অনেকটাই ভাল। মনও আছে আরামে। প্রধান কারণ এখানকার নির্জনতা। তোমাদের বাড়ির গুণ আছ।’ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়িটি বর্তমানে সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে জীর্ণ দশায় পরিণত হয়েছে।
কালিম্পংয়ের এই মিলনী ক্লাবের সভাপতি মণীন্দ্রলাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাড়িটিতে কবি ১৯৩৮ এবং ১৯৪০-এর জুন ও সেপ্টেম্বরে ছিলেন। রবীন্দ্রস্মৃতি-জড়িত বাড়িটি আমাদের চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্লাবের পক্ষ থেকে ও কালিম্পংবাসীদের উদ্যোগে বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য পুরসভা, হেরিটেজ কমিশন, মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। দ্রুত রবীন্দ্রস্মৃতি-বিজড়িত এই বাড়ি সংরক্ষণ করা দরকার।’’

আমার উত্তরবাংলা
উত্তরে একমাত্র পারিবারিক ম্যাগাজিন, ‘আমার উত্তরবাংলা’ গোটা উত্তরবঙ্গের বৈচিত্রকে তুলে ধরতে সক্ষম। শুভ্রজিৎ পোদ্দারের সম্পাদনায় এক অনন্য রূপ ধারণ করছে এই ‘আমার উত্তরবাংলা’। জলপাইগুড়ি থেকে প্রকাশিত মাসিক বাংলা পত্রিকাটি প্রত্যেক মাসেই নতুন নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত হচ্ছে। পত্রিকা প্রচ্ছদে প্রকাশের লক্ষ্যে উত্তরবঙ্গের যে-কোনও নৈসর্গিক দৃশ্যের জন্য থাকছে পাঠকদের কাছে ছবি পাঠানোর আমন্ত্রণ। যাতে ই-মেল আই ডি-তে ছবি পাঠিয়ে যে-কেউই এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ‘মনের কথা’ বিভাগে এসএমএস-এ দূর-দূরান্তের প্রিয়জনকে যে-কেউই জানাতে পারেন তাঁর মনের কথা। দশ টাকা বিনিময়-মূল্যের এই পত্রিকাটি সংগ্রহের দাবি রাখে বইকী!

মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ
একদা দেশীয় রাজ্য। তারও আগে স্বাধীন, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-পূর্ব প্রান্তীয় জেলা কোচবিহার মানেই ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের সূত্র ধরে এই ভূ-খণ্ড সম্পর্কে মানুষের কৌতূহলও যথেষ্ট। ইতিহাসের শহর কোচবিহারের নগর পরিকল্পনার পরতে পরতে রয়েছে রাজ আমলের পরশ। সোজা সুন্দর রাস্তাঘাট, পর্যাপ্ত পুকুর, জলাশয়, বিভিন্ন অফিস-কাছারি দিয়ে ঘেরা সাগরদিঘি, সুন্দর সুন্দর ইমারত এই শহরের বৈশিষ্ট্য। সুদৃশ্য রাজপ্রাসাদ, মদনমোহন মন্দির, জেনকিন্স স্কুল, ভিক্টোরিয়া (অধুনা এ বি এন শীল) কলেজ, ল্যান্সডাউন হল, ব্রাহ্ম মন্দির ইত্যাদি স্থাপত্যই হল এই শহরের অলঙ্কার।
লেখা ও ছবি: দেবব্রত চাকি।
সব মিলিয়ে কোচবিহার হল ‘সিটি অব বিউটি’। আর এই আধুনিক কোচবিহারের রূপকার হিসেবে আজও যিনি শ্রদ্ধার আসনে আসীন, তিনি হলেন কোচ রাজবংশের ঊনবিংশতম মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপবাহাদুর (জন্ম : ১৮৬২)। গত ৪ অক্টোবর তাঁর ১৫০ বছর পূর্ণ হল। প্রজাবৎসল এই মহারাজের জন্মের সার্ধ-শতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখতে ‘উত্তর প্রসঙ্গ’ পত্রিকা উদ্যোগ নিয়েছিল একটি সংকলন গ্রন্থ প্রকাশ করার। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাথাভাঙার সারস্বত উৎসব মঞ্চে প্রকাশ হল ‘সার্ধ-শতবর্ষে প্রজাবৎসল মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ’ নামের সেই সংকলন গ্রন্থটি। এটি প্রকাশ করেন বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক ড. নৃপেন্দ্রনাথ পাল। মোট ২৯টি রচনায় সমৃদ্ধ এই সংকলন গ্রন্থে রয়েছে মাহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ লিখিত বেশ কয়েকটি পত্র। উত্তর প্রসঙ্গ-র উদ্যোগ মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ, কোচবিহারের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহী পাঠকের কৌতূহল মেটাতে যে অনেকটা সাহায্য করবে, তা হলফ করেই বলা যায়।

সবুজের প্রেমিকেরা
গৌতম, বুবাই ও বাপ্পাডাকনামেই পরিচিত ওরা। গৌতম পেশায় শিক্ষক, বুবাই ও বাপ্পা ব্যবসায়ী। এদের নেশা হল নিজেদের অর্থে মালদার বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগানো। গাছগুলির সুরক্ষা দানেও তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পৃথিবী জুড়ে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করার জন্য এই মহৎ কর্মের গুরুত্ব অনস্বীকার্য তো বটেই, এই নিরলস প্রচেষ্টা সাধারণ মানুষকে অনুপ্রাণিত করারও মহৌষধি। মালদহ শহরে উষ্ণায়ন ও জীববৈচিত্র রক্ষায় তাদের এই নিঃস্বার্থ কর্মকাণ্ডের জুড়ি মেলা ভার।

সাধক অরুণাংশু
লেখা ও ছবি: সুদীপ দত্ত।
হাতেখড়ি মায়ের কাছে। ভক্তিগীতি আর ধ্রুপদী সঙ্গীতে। ‘রেটিনাইটিস স্পিডমেন্টোসা’ কেড়ে নেয় দৃষ্টিশক্তি। ১৯৯২-এর পর থেকে চোখে দেখতে পান না জলপাইগুড়ি শহরের শিল্পী অরুণাংশু বড়ুয়া। এক সময় অনেককে গান শিখিয়েছেন। গানের পাশাপাশি সুরারোপ করেছেন ভক্তিগীতিতে। গানের সঙ্গে এই শিল্পী মূল বাদ্যযন্ত্র রাখেন ছ’তারের তানপুরা। ব্যবহার করেন হারমোনিয়ামও। গানের সুবাদে গিয়েছেন জলপাইগুড়ি, জয়রামবাটি ও কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশনে। সেই সঙ্গেই শংসাপত্র পেয়েছেন সর্বশিক্ষা মিশন থেকে। ও সবের চিন্তা না করেই প্রচারবিমুখ এই গুণী মানুষটি আপাতত ডুবে আছেন সঙ্গীতসাধনায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.