বারবার অভিযোগ জানিয়েও বেআইনি ভাবে গাছ কাটার বিরুদ্ধে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, এই অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত কর্মচারী ও আধিকারিকদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখলেন বাসিন্দাদের একাংশ। মঙ্গলবার বোলপুর থানার রাইপুর-সুপুর গ্রামপঞ্চায়তের ঘটনা। বোলপুরের মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে কী সমস্যা হয়েছে তা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
মির্জাপুরে এই গাছ কাটাকে ঘিরে বিতর্ক।—নিজস্ব চিত্র |
এ দিন দুপুর একটা নাগাদ ওই পঞ্চায়তের মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দারা ওই আন্দোলন শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, গত শুক্রবার থেকে ওই পঞ্চায়তের আওতায় থাকা মির্জাপুর গ্রামের ক্যানাল পাড়ের সোনাঝুরি গাছ বেআইনি ভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে। বারবার এই বেআইনি গাছ কাটার বিষয়ে পঞ্চায়েতে জানালেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি বলেই অভিযোগ। তাই এ দিন বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ঘেরাওয়ের রাস্তা বেছে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হেফাজতে থাকা প্রায় ১৭০০টি গাছ কাটার জন্য দেড় লক্ষ টাকায় মির্জাপুরের বাসিন্দা মঞ্জু খানকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল হাঁসদা, কৃষ্ণগোপাল খাঁ-দের অভিযোগ, “নির্দিষ্ট গাছ ছাড়াও বেআইনি ভাবে অন্য গাছও কেটে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করলে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। অভিযোগ পেয়েও পঞ্চায়েত ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই এলাকার আর এক বাসিন্দা সন্দীপ দাসের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতের কিছু অসাধু কর্মীর যোগসাজসেই এই ঘটনা ঘটেছে। গত দু’ দিন ধরে ঘটনার অভিযোগ জানাতে এলে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা আমাদের কথাই শুনছে না পঞ্চায়েত।” তাই ওই গাছ কাটা রুখতে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ দিন মির্জাপুরের বাসিন্দাদের একাংশ ওই পঞ্চায়েতের কর্মী ও আধিকারিকদের ঘেরাও করে রাখেন। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা আন্দোলন তুলে নেন।
ওই পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েতের নিয়ম-নীতি মেনে ও বন দফতরের ছাড়পত্র নিয়ে গাছ কাটার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এলাকার নির্দিষ্ট গাছ ছাড়াও অন্য গাছ কাটার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী শনিবার উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে।” ফোনে যোগাযোগ করা হলে পঞ্চায়েত প্রধান, তৃণমূলের মিনা বিশ্বাস বলেন, “আমি কলকাতার হাসপাতালে রয়েছি। কী ঘটনা ঘটেছে, দফতরে খোঁজ নিয়ে দেখছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ দিকে বারবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত মঞ্জুবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |