বিচারক অসুস্থ, আদালতে আসতে পারছেন না। ফলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা ঝুলে রয়েছে অভিযোগ করে দায়রা আদালতের দায়িত্ব অন্য কোনও বিচারকের হাতে দেওয়ার দাবি তুলেছে কাটোয়া মহকুমা বার অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের অভিযোগ, আদালতে এসে কাজ না হওয়ায় হওয়ায় হয়রান হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ বিচারকের যোগ দিতে আরও এক মাস লেগে যাবে।
তুহিন হত্যা মামলার চার্জগঠন হওয়ার দিন ছিল মঙ্গলবার। মূল অভিযুক্ত দেবজ্যোতি সাহা-সহ অন্যান্য অভিযুক্তেরা কাটোয়া মহকুমা আদালতে হাজিরও ছিলেন। কিন্তু দায়রা বিচারক আদালতে হাজির না থাকায় পিছিয়ে গেল চার্জ গঠন। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সৈয়দ নিয়াজুদ্দিন আজাদ পরবর্তী দিন দিয়েছেন ১২ অগস্ট। ওই দিন চার্জ গঠন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। সিআইডির আইনজীবী অসীম রায়চৌধূরী বলেন, দায়রা বিচারক না থাকায় তুহিন-হত্যা মামলার চার্জ গঠন মঙ্গলবার হল না। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় চান্ডুলী উচ্চবিদ্যালয়ে পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের সময় কংগ্রস-সিপিএমের মধ্যে গোলমাল হয়। অভিযোগ, সেই সময় সিপিএম নেতাদের প্ররোচনায় কাটোয়ার তৎকালীন ওসি দেবজ্যোতি সাহা কংগ্রেস নেতা তথা কলেজ শিক্ষক তুহিন সামন্তকে গুলি করেন।
শুধু তুহিন হত্যা নয়, বিচারক না থাকায় প্রায় ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ মামলা ঝুলে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আদালতে যোগ দেননি দায়রা বিচারক। ফলে চার মাস ধরে বিচারপ্রার্থীরা স্রেফ আদালতে আসছেন আর হাজির হওয়ার পরবর্তী দিন নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এমনই এক বিচারপ্রার্থীর আত্মীয় বলেন, “আমাদের ঘটনায় সাক্ষীর শুনানি কবে হয়ে গিয়েছে। এত দিনে রায় বেরিয়ে যেত। কিন্তু বিচারক না থাকায় হয়রানি হচ্ছে।” কেতুগ্রামের ছোট রেলে ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলাটি এডিজে আদালত থেকে সরিয়ে বিচারের জন্য ফাস্ট ট্রাক আদালতে পাঠানো হয়েছে। সোমবার জেলা আদালত থেকে এই নির্দেশ এসেছে ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারকের কাছে। জানা গিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এই মামলাটি ফেলে রাখতে রাজি হয়নি জেলা আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক নেই বলে কেতুগ্রামের কান্দরায় জোড়া খুনের মামলার শুনানি এখনও শুরু হয়নি। এই মামলার অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে থেকেই বিচার হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কেতুগ্রামের বহড়ানে খুন হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সালারের এক বাসিন্দা। মামলার ৮ অভিযুক্ত কাটোয়া সংশোধনাগারে রয়েছেন। এই মামলারও চার্জ গঠন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিচারক না থাকায় শুনানি শুরু হয়নি। কাটোয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “এ রকম অসংখ্য মামলা ঝুলে রয়েছে। বিচারপ্রার্থীরা যাতে হয়রান না হন এবং দ্রুত বিচার পান তার ব্যবস্থা করা দরকার।”
|
কাটোয়া ধর্ষণে চার্জগঠন ২৮শে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
আগামী ২৮ মে কেতুগ্রামের ধর্ষণ ও ডাকাতি ঘটনার চার্জ গঠন হবে বলে জানিয়ে দিলেন কাটোয়ার ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারক সৈয়দ নিয়াজুদ্দিন আজাদ। গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি কাটোয়া-আমোদপুর ন্যারোগেজ লাইনে ট্রেনে ডাকাতির সময়ে পাঁচুন্দি স্টেশনের কাছে এক বিধবাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কাটোয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত থেকে মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। মঙ্গলবার আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক ২৮ মে সমস্ত অভিযুক্তকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন এবং ওই দিন মামলার চার্জ গঠন করা হবে বলে জানান। সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই মামলায় আট অভিযুক্ত রয়েছেন। পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল। তিন জন জামিনে রয়েছেন। এক জনকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি।” |