দেশ জুড়ে মেডিক্যালের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলপ্রকাশের জট আপাতত কাটল। সোমবার ওই সব প্রবেশিকার উপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা অর্থাৎ ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট বা নিট এবং তার পাশাপাশি যে-সব মেডিক্যাল কলেজ নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল, তাদের সকলেই সময়মতো ফল প্রকাশ করতে পারবে।
জট পাকিয়েছিল নিট-এর যৌক্তিকতা সংক্রান্ত একটি মামলার জেরেই। ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় জানিয়েছিল, চিকিৎসাবিদ্যার কোনও প্রতিষ্ঠান চাইলে তাদের মতো করে পৃথক প্রবেশিকা পরীক্ষা নিতেই পারে। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত রায় না-দেওয়া পর্যন্ত কেউই ফল প্রকাশ করতে পারবে না। ১ জুলাই ওই মামলার রায় বেরোনোর কথা।
শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এ দিন জানায়, জুলাই পর্যন্ত সমস্ত ফলপ্রকাশ এবং ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে বহু পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ তো অনিশ্চিত হয়ে পড়তই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক-সঙ্কট দেখা দিত। কারণ স্নাতকোত্তরের ছাত্রছাত্রীরা হাসপাতালে পরিষেবার একটা বড় সহায়। তাই ফল ঘোষণার উপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
এ দিনের এই রায়ের ফলে বহু মেডিক্যাল পড়ুয়া স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন। সেই সঙ্গে নিট-এর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কারণ এ দিনের রায়ের ফলে নিট আর ভর্তির একমাত্র মাপকাঠি থাকছে না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী কলেজগুলি চাইলে নিট-এর ফলের ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তি করতে পারে, আবার রাজ্যের নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলও অনুসরণ করতে পারে। এই দ্বিমুখী রাস্তা থাকায় বহু ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে বলে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের একটি বড় অংশের আশঙ্কা।
তবে প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর, বিচারপতি এ আর দাভে এবং বিচারপতি বিক্রমজিৎ সেনের বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই বন্দোবস্ত শুধু চলতি বছরের জন্যই। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে জুলাইয়ের রায়ের পরেই।
রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ রাজ্যে মেডিক্যালের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোনও স্তরেই পৃথক প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। তবে ছেলেমেয়েরা সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিট দিয়েছে। সেই সর্বভারতীয় প্রবেশিকার ফল জানতে তারা উদ্গ্রীব। আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত। যখন কাউন্সেলিং শুরু করার নির্দেশ পাব, শুরু করে দেব।” |