পরিকাঠামোর অভাবে এখনও ভুগছে মেরুদণ্ডের চিকিৎসা
চেতনতা আগের তুলনায় বেড়েছে। খানিকটা হলেও উন্নত হয়েছে সমাজের মানসিকতাও। কিন্তু এখনও চিকিৎসা পরিকাঠামোর দিক থেকে তলানিতেই রয়েছে মেরুদণ্ডের চিকিৎসা। রবিবার স্পাইনাল কর্ড সোসাইটি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর বার্ষিক সম্মেলনে উঠে এল এই আক্ষেপের কথাই।
চিকিৎসকেরা জানালেন, সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ ক্ষেত্রে তাঁরা কাজ করতে চান। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের অব্যবহৃত জমিতে এই সংক্রান্ত চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাবও উঠে আসে এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্তাও প্রতিশ্রুতি দেন, সরকার শীঘ্রই এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করবে।
মেরুদণ্ডের আঘাত জীবনের অনেকটাই বদলে দিতে পারে এক ধাক্কায়। কিন্তু তার পরেও মনের জোর হারিয়ে ফেললে চলবে না। চিকিৎসা তো প্রয়োজন অবশ্যই, পাশাপাশি দরকার লড়াকু মানসিকতাও। এ দিনের অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের গল্প শোনালেন দিল্লির ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইনজুরিস সেন্টার-এর চেয়ারম্যান মেজর এইচ পি এস অহলুওয়ালিয়া। ১৯৬৫ সালে এভারেস্ট জয় করেছিলেন যে যুবক, তার চার মাসের মধ্যেই ইন্দো-পাক যুদ্ধে আহত হয়ে তাঁর সব সময়ের সঙ্গী হয়ে গেল হুইলচেয়ার। হাল ছাড়েননি তিনি। এখন বয়স ৭৫। তবু হাজারো কাজের সঙ্গে যুক্ত রেখেছেন নিজেকে। বললেন, “মনটাকে তৈরি করতে হবে। শরীর স্বাভাবিক হলে একটা কাজ করতে যতটা প্রয়াস দরকার, শরীর পঙ্গু হলে তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে ফেলতে হবে। শুধু মনকে বলতে হবে, কাজটা করবই, তা সে যে ভাবেই হোক না।”
এ দিনের সম্মেলনের আয়োজক সম্পাদক, চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটক জানান, মেরুদণ্ডের আঘাত যাঁদের জীবনটা তছনছ করেছে, বহু দিন ধরেই তাঁদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন হাসপাতাল গড়ে তুলতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। দিল্লির স্পাইনাল ইনজুরিস সেন্টার-এর হাসপাতালের আদলে এ রাজ্যের হাসপাতালটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, “স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন। আমরাও এই ধরনের প্রকল্পে কাজ করতে চাই। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে যে সব জায়গা কোনও কাজেই লাগে না, মেরুদণ্ডের চিকিৎসার জন্য তা কাজে লাগানো যেতে পারে।”
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সমস্যার ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখেই সরকার রাজ্য জুড়ে একাধিক ট্রমা সেন্টার খুলতে উদ্যোগী হয়েছে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ৬০ শয্যার ট্রমা সেন্টারের কাজ প্রায় শেষ। এ ছাড়া পুলিশ হাসপাতাল, এসএসকেএম হাসপাতালেও ট্রমা সেন্টার চালু হবে।
রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান চিকিৎসক সুব্রত মৈত্রের মতে, রাজ্যে চিকিৎসকের অভাব নেই। হাসপাতালও রয়েছে। কিন্তু যা নেই, তা হল সামগ্রিক ভাবে কাজ করার মানসিকতা। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে যত রোগী আসেন, তার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের শারীরিক নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যে কোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা অসুস্থতায় শুধু এক জন চিকিৎসেকর অধীনে থাকলে চলে না। নানা ধরনের থেরাপি দরকার। অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি, ফিজিওথেরাপি, আরও অনেক কিছু। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই একসঙ্গে চিকিৎসাটা হয় না।” বিভিন্ন ধরনের থেরাপির মানেও বহু সময়েই সমতা থাকে না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.