তপ্ত দিনের শেষে স্বস্তি দিল কালবৈশাখী
প্রায় তিন সপ্তাহ পর ফের কালবৈশাখী হানা দিল শহরে। যার জেরে এক ধাক্কায় কেটে গেল গত কয়েক দিনের প্যাচপ্যাচে ঘামের অস্বস্তি। রাতের তাপমাত্রাও নেমে গেল কিছুটা।
আলিপুরের এক আবহবিদ জানান, গত ২ মে কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়ায় কালবৈশাখী হানা দিয়েছিল। তবে খোদ মহানগরে এমন কালবৈশাখী মাস খানেক পরে মিলল।
রবিবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা খানেকের এই ঝড়-বৃষ্টিতে রাত পর্যন্ত গাছ বা বাড়ি ভাঙার খবর নেই। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের বৃষ্টিতে মধ্য কলকাতার কলেজ স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট বা দক্ষিণ কলকাতার বেলভেডিয়ার-সহ কয়েক জায়গায় হাঁটু-জল জমে। জল জমে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বেলেঘাটা, শিয়ালদহ, পার্ক সার্কাস কানেক্টরেও। তবে রবিবার সন্ধ্যায় গাড়ি বেশি না থাকায় যানজট বিশেষ হয়নি।
হঠাৎ বৃষ্টি। রবিবার ধর্মতলায়।—নিজস্ব চিত্র
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে বলা হয়, স্বাভাবিক নিয়মে মার্চে ২টি ও এপ্রিলে ৪টি কালবৈশাখী হওয়ার কথা কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায়। এ বার মার্চে একটিও হয়নি। এপ্রিলের প্রথম ১০ দিন পরিস্থিতি ছিল কালবৈশাখীর প্রতিকূল। ১১ এপ্রিল মরসুমের প্রথম কালবৈশাখী পায় শহর। তার জেরে সাময়িক ভাবে গরম কমলেও চলতি মাসের শুরু থেকেই ফের তীব্র গরমের মুখে পড়েছিল দক্ষিণবঙ্গ।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা স্বাভাবিকের খুব উপরে না উঠলেও গত কয়েক দিন সমানে বাড়ছিল আর্দ্রতা ও অস্বস্তি। শহরের নানা প্রান্তে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের আড্ডাতে মুখ্য বিষয় ছিল ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস। সেই কাঙ্খিত বৃষ্টিই বয়ে আনল রবিবারের সন্ধ্যা।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, কালবৈশাখী যে আসছে, তা এ দিন বিকেলেই টের পান আবহবিদেরা। রেডার-চিত্রে দেখা যায়, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে বজ্রগর্ভ ও উল্লম্ব মেঘ তৈরি হয়েছে। পরে তা ধেয়ে আসে কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলির দিকে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কলকাতায় শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকানির সঙ্গে বজ্রপাত। এ দিন ঝড়-বৃষ্টি দাপট দেখিয়েছে দমদম, সল্টলেক, বরাহনগরেও। আবহবিজ্ঞানীরা জানান, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা থাকার কারণে গত কয়েক দিন ধরেই বঙ্গোপসাগর থেকে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকছিল। শনিবার নদিয়া, হুগলি, বর্ধমানে বিক্ষিপ্ত ঝড়বৃষ্টি হলেও কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তার তেমন প্রভাব পড়েনি। এক আবহবিদের কথায়, “অনেক সময় বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে উল্লম্ব মেঘ তৈরি হলেও তা কলকাতা ও সংলগ্ন জেলায় আসার আগেই ভেঙে যাচ্ছিল। কিন্তু এ দিন তা হয়নি।”
গত ১৭ এপ্রিল শহরে আছড়ে পড়েছিল এক শক্তিশালী কালবৈশাখী। যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১৬ কিলোমিটার। আবহবিদেরা জানান, এ দিন শহরে হাওয়ার গতিবেগ ছিল ৫০ কিলোমিটারের আশেপাশে।
বৃষ্টির জন্য এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে উড়ান ব্যাহত হয়। সময় মতো নামতে পারেনি ১০-১২টি বিমান। কিছুক্ষণ চক্কর কেটে ছ’টি বিমান অন্যত্র নামে। এয়ার ইন্ডিয়ার আগরতলার বিমান, ইন্ডিগোর রায়পুর ও বেঙ্গালুরু থেকে আসা বিমান ভুবনেশ্বর নামে। দুবাই থেকে আসা এমিরেট্স-এর বিমান নামে ঢাকায়, জেট এয়ারওয়েজ-এর মুম্বইয়ের বিমান নামে রাঁচিতে। গুয়াহাটি থেকে বিমানবাহিনীর একটি বিমান মুখ ঘুরিয়ে চলে যায় কলাইকুন্ডা। কয়েকটি বিমান ছাড়তেও দেরি হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.