কান-য়ে বঙ্গ সম্মেলন
ক সময় কান চলচ্চিত্র উৎসব আর বাংলা ছবির মধ্যে ছিল নাড়ির টান। মৃণাল সেনের ছবি হোক বা সত্যজিৎ রায়ের। অনেক পুরস্কার পেয়েছে বাংলা ছবি। সেই আভিজাত্যটা হয়তো আর নেই। তবে এ বছর কান-য়ে একটা মিনি বঙ্গ সন্মেলন হতে চলেছে। এক দিকে গৌরব পাণ্ডের ‘হনুমান.কম’, অন্য দিকে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর নন্দিতা রায়ের ‘অলীক সুখ’। তার সঙ্গে রয়েছে কিউয়ের ‘তাসের দেশ’। এ বার কান-য়ে যাচ্ছেন টলিউডের দুই তারকা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শর্ট ফিল্ম কর্নারেও দেখানো হবে দুই বাঙালি পরিচালকের ছবি।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
সিনেমা নিয়ে চর্চা যাঁরা করে থাকেন, তাঁরা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলছেন যে কোনও বাংলা ছবি তো মূল প্রতিযোগিতায় নেই। আবার আশাবাদীরা বলছেন যে কান-য়ে গিয়ে যদি বাংলা ছবির ব্যবসার নতুন দিক খুলে যায় তাতেই বা ক্ষতি কী?
কিউয়ের মতো বাংলা ছবির পরিচালক আর প্রযোজকরা যদি কান-য়ে গিয়ে ব্যবসার নতুন ডিসট্রিবিউশন চ্যানেলগুলোকে প্রসারিত করতে পারে, তা হলে সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য মঙ্গলই হবে। “যে যাই বলুক, সিনেমা কিন্তু একটা ব্যবসা। তবে এই কান-য়ে গিয়ে সিনেমার জন্য ব্যবসা খোঁজার রাস্তাটা একটু আলাদা। আমাদের উচিত এখন নিজেদেরকে পুশ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে একটা জায়গা তৈরি করা। আমি খুব খুশি যে কলকাতা থেকে আরও অনেকেই এ বার কান-য়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই মিলে একটা ইমপ্যাক্ট তৈরি করব নিশ্চয়ই।”
শিবাশিস শেঠ ‘হনুমান.কম’য়ের কার্যনির্বাহী প্রযোজক। কান-য়ে যাচ্ছেন এ বছর। “কান মার্কেট সেকশনে আমাদের ছবিটার স্ক্রিনিং হবে ১৮ এবং ১৯ মে। আমাদের ছবির শু্যটিং হয়েছে আইসল্যান্ড। জার্মানি থেকে ক্রু ছিল। প্রায় চার কোটি টাকার ছবি। এই টাকাটা শুধুমাত্র বাংলা থেকে তোলা সম্ভব নয়। কান-য়ে গিয়ে যদি ছবির ব্যবসার দিকটা দেখতে পারি, তা হলে আমাদের ভালই হবে,” শিবাশিস বলছেন।
পরিচালক গৌরব পাণ্ডে পোস্ট-প্রোডাকশনে ব্যস্ত। তাই নিজে কান-য়ে যাচ্ছেন না। “টালিগঞ্জে আমরা শুধু দেখি পরিচালকরা একে অপরের পিঠ চাপড়ান। শেষ পাঁচ বছরের ব্যবসার গ্রাফটা দেখলে মনে হয় যে বাংলা সিনেমার মার্কেটটা বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের সিরিয়াসলি ভাবা উচিত। যে কোনও আঞ্চলিক ছবির জীবনীশক্তির জন্য এটা একান্তই প্রয়োজন। এটা না করলে ‘হনুমান.কম’য়ের মতো খুব বেশি বাংলা ছবি করা সম্ভব হবে না। আমরা চেষ্টা করছি ‘হনুমান.কম’কে বিভিন্ন ভাষায় ডাব করে বাণিজ্যিক ভাবে রিলিজ করার। ইতিমধ্যেই আমরা ছবিটাকে জার্মান ভাষায় ডাব করে রিলিজ করার কথাও ভাবছি,” গৌরব বলছিলেন।
কিউ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
এ বছর কান-য়ে ক্লাসিক সেকশনে দেখানো হবে ‘চারুলতা’। সত্যজিৎ রায়ের এই ছবির প্রযোজক ছিলেন আর ডি বনশল। তাঁর নাতনি বর্ষা যাচ্ছেন কান-য়ে। ‘চারুলতা’ ডিজিটালি রিস্টোর করেছেন তাঁর কোম্পানি। বলছেন, “আরডিভি এন্টারটেনমেন্টের কর্ণধার আমি। সত্যজিৎ রায়ের ছ’টা ছবি আমরা রিস্টোর করেছি। তার মধ্যে কান-য়ে দেখানো হবে ‘চারুলতা’।” এত দিন ধারণা ছিল দুষ্প্রাপ্য ছবির দর্শক রয়েছে ফ্রান্স আর আমেরিকাতে। এখন বর্ষা চান ইতালি, জার্মানি, জাপান আর অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও সত্যজিতের ছবির মার্কেটটা ধরতে। এখানকার ডিসট্রিবিউটাররা কান-য়ে আসছেন। ‘চারুলতা’ দেখার উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।
সিনেমা শিল্প না বাণিজ্য সেই তর্কটা চলতেই থাকবে। চারটে ভিন্ন ধরনের ছবির কান-য়ের ব্যবসা খোঁজার গল্পটাও অনেক আশাবাদী মানুষকেও আনন্দ দেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.