গরু পাচারকারীদের ধরতে গিয়েই সীমান্তরক্ষীরা ধরেছিল নবম শ্রেণির ছাত্রটিকে। অভিযোগ, জেরার নামে তার পিঠে, বুকে, মাথায় এলোপাথাড়ি পড়তে থাকে কিল-ঘুষি, ভারী বুটের লাথি।
শেষমেশ কাঁটাতারের বেড়ার পাশেই লুটিয়ে পড়ে সৌরভ শিকারী (১৫) নামে ওই কিশোরের দেহ। তার পরিবারের অভিযোগ, এর পরেই দায় এড়াতে দেহটি কাঁটাতার উজিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। শনিবার সকালে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে।
বছর দুয়েক আগেই চাপড়ার হাটখোলায় খুকলি খাতুন নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গুলি করে মারার অভিযোগ উঠেছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতের নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে মাজদিয়া রেলবাজার হাইস্কুলের ছাত্র সৌরভের মৃত্যু ফের তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। নদিয়া জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “ওই ছাত্রের মৃত্যুর জন্য বিএসএফকে দায়ী করে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
শনিবার সকালে গ্রামবাসীরা এ নিয়ে সরব হলেও বিএসএফ বেয়নেট উঁচিয়ে তাঁদের কাছেই ঘেঁষতে দেয়নি। জওয়ানেরাই দেহটি ঘিরেই রাখেন। বিএসএফের এক কর্তা দাবি করেন, “কোনও জওয়ান ছেলেটিকে মারেনি। বাংলাদেশিরা মেরেছে। বিজিবি-র সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিংও করা হয়েছে।”
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার রাতে সীমান্ত সংলগ্ন ধরমপুর গ্রামে মতুয়াদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিল সৌরভ। সেই সময়েই পুলিশের তাড়া খেয়ে পাচারকারীর একটি দল পালাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঠিক তখনই কয়েকটি বাচ্চা ছেলের সঙ্গে সৌরভ পথে এসে দাঁড়ায় আর জওয়ানরা তাকেই পাকড়াও করেন। গ্রামের কয়েক জন বাধা দিলে তাঁরা জানান, সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ দিন সকালে কাঁটাতারের ওপারে চাষ করতে গিয়ে দেহটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। সৌরভের কাকা আনন্দ শিকারীর অভিযোগ, “বিএসএফ জওয়ানরাই ওকে মেরে কাঁটাতারের ওপারে দেহটি ফেলে দিয়ে এখন বিজিবি-র নামে দোষ চাপাচ্ছে।” তাঁদের প্রশ্ন, কাঁটাতারের বেড়ার পাশেই পারাপারের গেট। রাতে তা বন্ধ থাকে। সৌরভ সেই গেট খুলে ওপারে যাবে কী করে? নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “এ নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।”
|
কিশোরী উদ্ধার
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানাঘাট |
কিশোরী-পাচারের অভিযোগে বিহার থেকে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল নদিয়ার হরিণঘাটা থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে কিশোরীটিকেও। ধৃত মহিলার নাম পিঙ্কি যাদব। তিনি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, নদিয়ার হরিণঘাটা থানার বাসিন্দা ওই কিশোরীর মামারবাড়ি পিঙ্কি যাদবের গ্রামে। কিশোরীটি মামারবাড়িতে বেড়াতে গেলে পিঙ্কি তাকে কাজ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে গত ২৩ মার্চ বিহারে পাচার করে দেয়। কল্যাণীর এসডিপিও চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “কাজ দেওয়ার নাম করে বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার মতিহারি এলাকায় নিয়ে গিয়ে একটি নাচের দলের কাছে কিশোরীটিকে বিক্রি করে দেয় পিঙ্কি। বিহার পুলিশের সাহায্যে গত শুক্রবার ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। পিঙ্কিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।” |