দুর্গাপুর
ধৃত সারদার অফিসার, অন্য লগ্নি সংস্থার অফিসেও ভাঙচুর
সারদা গোষ্ঠীর এক ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজারকে দুর্গাপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নবদ্বীপ থানার পুলিশ গিয়ে মানস ভট্টাচার্য নামে ওই অফিসারকে গ্রেফতার করে। সঙ্গে ছিল দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ। মানসবাবুর বিরুদ্ধে নবদ্বীপ থানা ও নিউটাউনশিপ থানায় আলাদা ভাবে দুই আমানতকারী অভিযোগ করেছিলেন। এ দিনই আবার দুর্গাপুরে ‘বর্ধমান সানমার্গ’ নামে এক লগ্নি সংস্থার অফিসে ভাঙচুর চালান কিছু আমানতকারী ও এজেন্ট।
পুলিশ জানায়, ২৫ এপ্রিল নবদ্বীপের বাসিন্দা মিলন নাথ মানসবাবু ও সারদার নবদ্বীপ শাখার ম্যানেজার অপূর্ব নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাঁত বুনে সঞ্চয় করা ৪ লক্ষ টাকা তিনি সারদা সংস্থায় লগ্নি করেছিলেন। ১৫ মাস পরে প্রায় ৫ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় মতো টাকা আনতে গিয়ে তিনি দেখেন, নবদ্বীপে সংস্থার অফিস বন্ধ। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ করেন। নবদ্বীপের আইসি তপনকুমার মিশ্র বলেন, “মানসবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপূর্ব নাথের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” শুক্রবার ধৃতকে নবদ্বীপের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অরিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত মানসবাবু অবশ্য বলেন, “আমি এক জন কর্মী হিসেবে টাকা তুলে অফিসে জমা দিয়েছি। প্রতারণার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই।”
পুলিশের কাছে ক্ষোভ জানাচ্ছেন আমানতকারীরা। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ জানায়, গত ২৩ এপ্রিল সোনালি ভট্টাচার্য নামে এক আমানতাকারী তাদের কাছে মানসবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, তিনি ওই সংস্থার কাছ থেকে ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পাবেন। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ সেই অভিযোগের তদন্ত করছে। গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, নবদ্বীপ থানার কাছ থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সারদা গোষ্ঠীর কয়েক জন এজেন্ট দাবি করেন, মানসবাবু দুর্গাপুর ছাড়াও সারদার নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের একাংশের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গত বছরখানেকে তাঁর জীবনযাত্রার মান এক ধাপে অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল।
এ দিন দুপুরে সুহট্ট মলে ‘বর্ধমান সানমার্গ’-এর অফিসে জড়ো হন এক দল আমানতকারী। তাঁদের অভিযোগ, সপ্তাহ খানেক আগেই মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। এ দিন তাঁদের সঙ্গে সংস্থা কর্তৃপক্ষের বচসা বাধে। তবে শেষমেশ তাঁরা কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে ফিরে যান। কিন্তু বিকেলে অন্ডাল এলাকা থেকে এজেন্ট ও আমানতকারীদের একটি দল ওই লগ্নি সংস্থার কবিগুরু এলাকার রানি রাসমনি রোডের অফিসে চড়াও হয়। অফিসেও ভাঙচুর চালানো হয়। আমানতকারীদের ক্ষোভ, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। এজেন্টদের একাংশের দাবি, সংস্থা টাকা ফেরত না দেওয়ায় আমানতকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদেরই। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় ও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। রাত পর্যন্ত আমানতকারী ও এজেন্টরা অবশ্য পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি।
ডিওয়াইএফের তরফে নানা লগ্নি সংস্থাগুলির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে এ দিন মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সংগঠনের সম্পাদক সিদ্ধার্থ বসুর দাবি, সারদা গোষ্ঠীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। দুর্গাপুরে যে সমস্ত সংস্থার রমরমা তাদের নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।
এ দিনই কালনায় একটি সংগঠন গড়েছেন নানা লগ্নি সংস্থার এজেন্টরা। তাঁদের মধ্যে কেউ বিপদে পড়লে যাতে অন্যেরা পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন, সে জন্যই ‘কালনা ফিনান্সিয়াল এজেন্ট ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে ওই সংগঠন গড়া হল বলে জানানো হয়েছে। এ দিন একটি বৈঠক করেন সংগঠনের সদস্যেরা। সেখানে কালনা ছাড়াও মেমারি, ভাতার, জামালপুর-সহ নানা এলাকার বিভিন্ন সংস্থার এজেন্টরা যোগ দেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.