ক্লাসে জখম ছাত্রের মৃত্যু, অভিযোগের তির শিক্ষিকার দিকে
ক্লাসে ইংরেজি শব্দের মানে বলতে না পারায় জুটেছিল ‘শাস্তি, মারধর’। তাতেই জখম হয়ে মারা গিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মনবোধ সিং সর্দার (১২), এমনই দাবি তার পরিবারের। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের ওই ছাত্রের পরিবার স্থানীয় গঙ্গামান্না হাইস্কুলের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে বান্দোয়ান থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তবে ওই শিক্ষিকা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুরুলিয়ার এসপি সি সুধাকর বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। ছাত্রটির দেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে।”
ঘটনাটিতে ইতিমধ্যেই লাগতে শুরু করেছে রাজনীতির রং। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা গয়াধর মাহাতোর দাবি, “ঘটনার সঙ্গে স্কুলের কেউ জড়িত নয়।” এ দিন বিকেলে ওই শিক্ষিকার শাস্তির দাবিতে এলাকায় মিছিল করে সিপিএম। যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জগদীশ মাহাতোর মন্তব্য, “সিপিএম ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করছে।” ডিওয়াইএফের বান্দোয়ান জোনাল সম্পাদক কমল মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “তৃণমূল প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে চাইছে।”
মনবোধ সিং সর্দার
শিরকা গ্রামের মনবোধের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়ত তার পড়শি অষ্টমী সিং সর্দার। তার বক্তব্য, “গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ইংরেজির দিদিমণি মনবোধদার কাছে একটা শব্দের মানে জানতে চেয়েছিলেন। বলতে না পারায় দিদিমণি দাদার চুলে মুঠি ধরে বেঞ্চে ঠুকে দেন ও পিঠে কিল মারেন। সেই সময় বেঞ্চের কোণায় দাদার পেটে চোট লাগে। যন্ত্রণা শুরু হয়। দাদা বাড়ি চলে যায়।’’ একই দাবি মনবোধের ভাই তথা সহপাঠী বাবুলালেরও।
মনবোধের বাবা কিরীটী সিং সর্দার পেশায় দিনমজুর। তিনি জানান, ২ মে স্কুল থেকে ফেরার পরে মনবোধ যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসাও করানো হয়। যন্ত্রণা না কমায় ৬ মে তিনি ছেলেকে বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করান। ৭ মে মনবোধকে টাটায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সেখানেই সে মারা যায়। কিরীটীবাবুর দাবি, “ডাক্তারেরা বলেছেন, তলপেটে আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হয়েছিল আমার ছেলের। শিক্ষিকা এলোপাথাড়ি না মারলে ছেলেটা অকালে চলে যেত না!” কিরীটীবাবুর মামা অতিলাল সিংয়ের অভিযোগ, “ছেলেটা অসুস্থ হওয়ার পরেও স্কুল থেকে কেউ তাকে দেখতে আসেনি। উল্টে ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।”
ওই শিক্ষিকার দাবি, “আমি পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নিই না। ২ মে স্কুলের কাজেই আমি মেদিনীপুরে শিক্ষা দফতরের অফিসে গিয়েছিলাম। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” তাঁর দাবিই সমর্থন করেছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক রথীন্দ্রনাথ মাহাতো। তাঁর বক্তব্য, “ওই ছাত্রের মৃত্যু মর্মান্তিক। যেখানে স্কুলের কেউ ঘটনায় জড়িত নয়, সেখানে ধামাচাপা দেওয়ার প্রশ্ন আসে কোথা থেকে?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.