থানার মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়াল শাসক দলের দুই গোষ্ঠী। থামাতে গিয়ে আহত হলেন জনা কয়েক পুলিশকর্মীও। আর ‘আদি’ ও ‘নব’ তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীবিবাদে জখম হলেন দু-পক্ষের অন্তত আট জন। বৃহস্পতিবার বড়ঞা থানা চত্বরের এই ঘটনায় দু-পক্ষই অভিযোগ করেছেন। দাবিও এক, ধারাল অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ, মারধর, খুনের হুমকি।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে একটি ছিনতাইকে ঘিরে। ওই দিন দুপুরে সুন্দরপুর এলাকায় জনা কয়েক দুষ্কৃতী স্থানীয় দুই যুবকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ কিছু টাকা ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা মিনারুল শেখ নামে এক দুষ্কৃতীকে ধরেও ফেলেন। তারপর তাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। আর বিবাদের সূত্রপাত তা থেকেই।
কান্দির এসডিপিও সন্দীপ সেন বলেন, “দু-পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের ফাঁসিয়ে দিতে অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা দুষ্কৃতী তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। তা নিয়ে দু-পক্ষই বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় হাজির হয় দু-পক্ষেরই অনুগামীরা। তারপর শুরু হয় হাতাহাতি। এ ব্যাপারে জেলা যুব তৃণমূলের জেলা সম্পাদক জালাল উদ্দিনের দাবি, শহর তৃণমূলের সম্পাদক আসমত হকের কথা মতো পুলিশ তল্লাশির নামে তাঁর অনুগামীদের হয়রানি করছে। জাজাল-আসমত দু-দলের লোকজনই থানায় পরস্পরকে দেখে থানার আসবাব ভেঙে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। আহত দুই তৃণমূল কর্মীকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়। ওই ঘটনায় আসমত হকের গোষ্ঠী ঘণ্টা খানেকের জন্য হলদিয়া-ফরাক্কা সড়ক অবরোধ করে।
কিছু দিন আগে জালাল আরএসপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অন্য দিকে বছর খানেক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন আসমত। জালালউদ্দিনের সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় সুন্দরপুর পঞ্চায়েতের সিপিএমের সাসপেন্ড হওয়া প্রধান সামানউল্লাও। দুই নব্য তৃণমূলীর নিজেদের মধ্যে গোলমালে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ইমরান হোসেন অবশ্য বলেন, “ওই মারামারিতে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়। ওটা কংগ্রেস ও সিপিএমের দ্বন্দ্ব।” কিন্তু জালাল কিংবা আসমত তো এখন তৃণমূলের নেতা, শাসক দলই তো তাদের ঘটা করে দলে যোগ দান করিয়েছে? তৃণমূলের জেলা নেতারা প্রশ্ন এড়িয়েছেন।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহম্মদ আলি অবশ্য মেনে নিয়েছেন, “সংঘর্ষে জড়িত দুই নেতাই অন্য দল ছেড়ে আমাদের দলে এসেছেন। তাই ওরা যে দলের কর্মী তা মানতে অসুবিধা নেই। তবে থানায় গোলমাল পাকিয়ে তাকলে পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। প্রয়োজনে দল ওদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেবে।” |