অবৈধ করাত কল বন্ধ করতে অবশেষে উদ্যোগী হল বন দফতর। মাস দু’য়েক আগেই হাইকোর্ট সমস্ত লাইসেন্সহীন করাতকল বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। তা উপেক্ষা করেই এত দিন চলছিল করাতকলগুলি। উদাসীন ছিল বন দফতরও। সম্প্রতি উদ্যোগী হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অবৈধ করাতকলগুলিতে নোটিস পাঠিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই জেলায় বেশ কিছু কল বন্ধও হয়ে গিয়েছে। বন দফতর সূত্রে খবর, এ বার আচমকাই করাতকলগুলিতে অভিযান শুরু হবে। যদি দেখা যায় কলগুলি চলছে তা হলে সেগুলিকে ‘সিল’ করে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রায় দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে জেলা জুড়ে লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল করাতকলগুলি। ক্রমশ এর সংখ্যাও বাড়ছিল। বন দফতর সূত্রে খবর, জেলায় রূপনারায়ণ, খড়্গপুর ও মেদিনীপুর-তিনটি বিভাগে সরকারি ভাবে ৪৭৩টি কলের মধ্যে ২০৮টি অবৈধ। এর জেরে সরকারের রাজস্বের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি সরকারি বনাঞ্চল থেকেও মূল্যবান গাছ পাচার হয়ে যাচ্ছে। দিনের পর দিন এ ভাবেই জেলা জুড়ে রমরমিয়ে চলছিল করাতকলগুলি। ঘাটাল, চন্দ্রকোনা রোড, গোয়ালতোড়, গড়বেতা, দাসপুর, নয়াগ্রাম, হুমগড় প্রভৃতি এলাকায় সবচেয়ে বেশি এই সব অবৈধ কল রয়েছে। দফতর সূত্রের খবর, এত দিন রাজনৈতিক চাপেই কিছু করা যায়নি। দফতরের ডিএফও (খড়্গপুর) অঞ্জন গুহ এবং রবীন্দ্রনাথ সাহা (রূপনারায়ণ) বলেন, “আমরা প্রতিটি করাত কল মালিকদের নোটিস পাঠিয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে যাতে ট্রেড লাইসেন্স এবং বিদ্যুতের সংযোগ না দেওয়া হয়, তার জন্য বিদ্যুৎ দফতর এবং পঞ্চায়েতগুলিকেও জানানো হয়েছে।” এ ছাড়াও তাঁরা জানান, যাঁরা লাইসেন্সের জন্য আবদেন করেছেন, তাঁদের সরাকরি নিয়ম মেনে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ আবেদনকারীই আবদেন বাতিল হয়েছে।
সরকারি নির্দেশ জেনেছেন কল মালিকরাও। পশ্চিমাঞ্চল করাতকল মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক আবদুল রসিদ মণ্ডল বলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরে কল চালাচ্ছি। লাইসেন্সের জন্য আবদেনও করেছি। কিন্তু পাইনি। এ বার বন্ধ করে দেব। ইতিমধ্যেই কিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” তবে তাঁর আক্ষেপ, “বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের সংগঠনের প্রায় শতাধিক কল যেমন বন্ধ হয়ে যাবে, তেমনি কয়েক হাজার মানুষও বেকার হয়ে যাবেন।” |